ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে মশার দাপট নিধনের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

রাজশাহীতে মশার দাপট নিধনের উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে দীর্ঘদিন রাজশাহী নগরীতে মশক নিধন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও অবশেষে তা আবার শুরু হয়েছে। বুধবার থেকে রাজশাহী নগরীজুড়ে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)। বুধবার রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করছে। আগামী ২৩ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন নগরীর ৫টি করে ওয়ার্ডে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ফগার মেশিনে স্প্রের মাধ্যমে মশক নিধন করা হবে। রাসিক সূত্র জানায়, এখন থেকে প্রতিদিন নগরীর ৫টি করে ওয়ার্ড ছাড়াও প্রতি বুধবার সেনানিবাস, র‌্যাব ক্যাম্প, সরকারী কর্মকর্তার বাংলো, ডিজিএফআই, এনএসআই, বিজিবি ক্যাম্প, রাবি, রুয়েট, রামেক, হেলেনাবাদ কলোনি, বাংলাদেশ ব্যাংক, রাজশাহী কলেজ, নিউ ডিগ্রী কলেজ, টিটি কলেজ, কেন্দ্রীয় কারাগার, পুলিশ লাইন, সাহেব বাজার, উপশহর আবাসিক এলাকা, পদ্মা আবাসিক এলাকা, মহিলা কলেজে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এছাড়া কর্মতালিকা অনুযায়ী মহানগরীর সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সø্যাব ড্রেন, আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন, ডোবা, হাউজ, সেফটি ট্যাংকি ও জঙ্গলে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মহানগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম উল আযীম। তিনি জানান, তেলের সরবরাহ না থাকায় এ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে সম্প্রতি নগরীজুড়ে মশার বংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাসিক নগরবাসীর কথা বিবেচনায় নিয়ে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করেছে। এদিকে দীর্ঘদিন নিধন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রাজশাহী নগরীতে বেড়েছে মশার দাপট। ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি মিলছে না অব্যাহত মশার দাপটে। রাত-দিন সমানে মশার আক্রমণ সইতে হচ্ছে নগরবাসীকে। দিনের বেলায় বাসা বাড়িতে মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে। কোনভাবেই নগরের প্রায় ৮ লাখ মানুষ নিস্তার পাচ্ছেন না মশার হাত থেকে। নোংরা আবর্জনাময় ড্রেন পরিষ্কারের উদ্যোগ না নেয়ায় ক্রমেই বাড়ছে মশার দাপট। বর্তমানে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁচ্ছে। প্রতিবছর মশক নিধনে নির্ধারিত বাজেট থাকলেও বাস্তবে মশক নিধনে কোন কার্যক্রম নেই নগরে। মশার দাপট বৃদ্ধি পেয়েছে স্বীকার করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মামুন বলেন, ‘মশক নিধনে আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে দোকানপাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত সবখানেই যেন মশা আর মশা। সন্ধ্যার আগেই মশাদের আক্রমণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন নগরবাসী। দিনের বেলাতেও বাসা-বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে মশার অত্যাচার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা শাহীন আলম বলেন ‘প্রতিনিয়ত আক্রমণে এখন অতিষ্ঠ তারা। শোবার ঘর, রান্নাঘর, টয়লেট, গোসলখানা এমন কোন স্থান নেই যেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করা যাচ্ছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখন তো দিনের বেলা মশারি না টাঙ্গিয়ে কেউ স্বস্তিতে শুয়ে বা বসেও থাকতে পারছেন না। শিক্ষার্থীরাও মশার কামড়ে ঠিকমতো পড়ালেখা করতে বসতে পারছে না। নগরবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন নগরীর আনাচে-কানাচে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না রাসিক। আবার বিভিন্ন পুকুরে জমে কচুরিপানাগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে না। নগরীর বিভিন্ন এলাকার এমনকি মধ্য নগরীর বিভিন্ন পুকুর ভর্তি কচুরিপানা মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এছাড়া নিম্নাঞ্চলে নিত্য নতুন বাড়ি-ঘর গড়ে উঠায় তার আশপাশের কিছু কিছু জলাবদ্ধ ভূমিতে দীর্ঘদিন পানি জমে থাকায় মশার ও বিভিন্ন ধরনের পোকা-মাকড় জন্ম নিচ্ছে। নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার এক কলেজছাত্র বলেন, ‘কতদিন ধরে মশক নিধনের কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনি, তা মনে নাই।
×