ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আমি বা আমার কেউই নির্বাচনের আগে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করিনি-করেনি

মিডিয়াকে তীব্র আক্রমণ ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মিডিয়াকে তীব্র আক্রমণ ট্রাম্পের

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা তার প্রচার শিবিরের কেউই গত বছরের মার্কিন নির্বাচনের আগে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বলে তিনি জোর দাবি করেছেন। এভাবে তিনি এমন এক উত্তেজনাকর খবরের বিরোধিতা করলেন, এক সেটিকে তিনি ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেন। খবর বিবিসি ও এএফপির। ট্রাম্প মাইকেল ফ্লিনের প্রতিও সমর্থন ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নীতি নিয়ে রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের শপথ নেয়ার আগেই ফোনে কথা বলার দায়ে ফ্লিন দোষী নন। চলতি সপ্তাহে টাম্প জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ফ্লিনের পদত্যাগ দাবি ও গ্রহণ করেন। এর বদলে ট্রাম্প ওই সব ফোন কল সম্পর্কে তথ্য ফাঁস করে আইন লঙ্ঘনের দায়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যদের অভিযুক্ত করেন। নতুন প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ে অভিযোগ ও গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের সঙ্গে তার কলহ নিয়ে এ সপ্তাহের গোলযোগ চলার প্রেক্ষাপটে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। নির্বাচনের আগে তিনি বা তার স্টাফের কেউ রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, না, আমার জানা কেউই না। ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই। সমগ্র রুশ ইস্যুটিই এক প্রতারণা কৌশল। এটি নিউইয়র্ক টাইমসের এক চাঞ্চল্যকর খবরের সত্যতার সম্পূর্ণ অস্বীকৃতি। খবরে বলা হয়েছিল, ট্রাম্পের সহকারীরা মার্কিন নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করেছিলেন বলে আড়িপাতা কল ও ফোন রেকর্ডে দেখা যায়। মিডিয়াকে আক্রমণ করে ট্রাম্প বলেন, এসবই ভুয়া খবর। ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন যে, টাইমসের খবরটি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অশোভন কাজকর্মের ভিত্তিতে রচিত। এর আগে তিনি তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বহিষ্কারের কারণ হয়েছিল এমন গোপনীয় তথ্য ফাঁসের জন্য দায়ী অপরাধীদের ধরার সংকল্প ব্যক্ত করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ডেমোক্র্যাট হিলারি ক্লিনটন হেরে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ লোকজনেরা অপরাধীর মতো এসব গোপনীয় তথ্য ফাঁস করেছেন। তিনি এসব ঘটনায় তদন্ত করতে বিচার দফতদরকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, যারা সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য ফাঁস করেছেন, তাদের নিজেদের লজ্জা বোধ করা উচিত। এদিকে, ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ফ্লিন রাশিয়ার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মস্কোর রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছিলেনÑ এমন কথা এফবিআই এজেন্টদের কাছে অস্বীকার করেন। বর্তমান সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা একথা জানান। ফ্লিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথা বলেছিলেন বলে প্রমাণিত হলে, তিনি আইনগত বিপত্তিতে পড়তে পারেন, কারণ এফবিআইয়ের সঙ্গে মিথ্যা কথা বলা গুরুতর অপরাধ। ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, ফ্লিন যা করেছিলেন, তা অন্যায় ছিল না। ট্রাম্প আরও বলেন, আমি তাকে রুশ দূতের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা করতে নির্দেশ দেইনি। কিন্তু আমি তাকে এ নির্দেশ দিতে পারতাম, কারণ বিদেশী কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করাই তার কাজ। ফ্লিনের স্থলে কে আসবেন, তা বৃহস্পতিবার রাতেও অনির্ধারিত থেকে যায়। এর আগে সাবেক নেভি এ্যাডমিরাল রবার্ট হারওয়ার্ড জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান। ট্রাম্প ওই পদের জন্য হারওয়ার্ডকে এ পদের জন্য বেছে ছিলেন বলে জানা যায়। সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নে ট্রাম্প দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির ক্ষেত্রে পরমাণু ধ্বংসলীলার সম্ভাবনার কথা বলেন। এতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ট্রাম্পের পরীক্ষা নিচ্ছেন বলে ট্রাম্প মনে করেন কিনা, এ প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্প জবাব দেন, রাশিয়ার প্রতি কঠোর নীতিগ্রহণ করা তার সঙ্গে সহজতরই হবে, কিন্তু উষ্ণ সম্পর্কের নীতি অনুসরণ করা আমেরিকা, বিশ্ব ও তার জন্য ভালই হবে বলে তিনি মনে করেন। ট্রাম্প বলেন, আমরা পরমাণু দিক দিয়ে খুবই শক্তিশালী এক দেশ এবং তারাও। পরমাণু ধ্বংসলীলার সঙ্গে কোন কিছুরই তুলনা হতে পারে না। তিনি বলেন, আমি মনে করি, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক থাকা ভাল, খারাপ নয়।
×