ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন প্রতিহত করার ক্ষমতা বিএনপির নেই ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নির্বাচন প্রতিহত  করার ক্ষমতা  বিএনপির  নেই ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচন প্রতিহত করার মতো কোন ক্ষমতা বিএনপির নেই। কারণ জনগণ বিএনপির সঙ্গে নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। ‘খালেদা জিয়ার সাজা হলে দেশের মানুষ নির্বাচনে অংশ নেবে না’Ñ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাজশাহীতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। রাজশাহী কলেজ মাঠে তিন দিনব্যাপী বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধন শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, ‘আদালত খালেদাকে সাজা দিলে তিনি নির্বাচনে অংশ নেয়ার অযোগ্য হবেন। আদালতের রায় জনগণ অমান্য করবে না। আর বিএনপি অমান্য করলে জনগণ তা প্রতিহত করবে। নির্বাচন প্রতিহত করার মতো কোন ক্ষমতা বিএনপির নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি পারেনি, আগামীতেও পারবে না। সময় ও নদীর স্রোতের মতোই সংবিধান ও নির্বাচন কারও জন্য অপেক্ষা করবে না বলে জানান তিনি। এর আগে ডিজিটাল মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘দেশ ডিজিটাল হয়েছে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কাজে-কর্মে স্মার্ট হতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে নিজেদের এগিয়ে নিতে হবে। তবে আচার ব্যবহারে ডিজিটাল হতে বলব না। সেটা এনালগ থাকাই ভাল। ছোটদের স্নেহ, বড়দের শ্রদ্ধা, শালীনতা বজায় রাখাÑ এগুলো এনালগ আচার-ব্যবহার।’ মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন নেতা উৎপাদনের বিরাট কারখানা। পাতি নেতা, সিকি নেতা- হরেক রকমের নেতা। তাদের ছবি দেখি বিলবোর্ডে। সামনে দেখলে চিনতে পারি না। বিলবোর্ডে সবাই নায়ক হয়ে যায়। এরা নিজেদের প্রচারে শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করে, ওবায়দুল কাদেরকে ব্যবহার করে। এসব নেতা থেকে সাবধান। দেশকে কর্মী উৎপাদনের কারখানা করতে হবে।’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ দেশের নীরব এক বিপ্লবের নাম। এ বিপ্লবের স্বাপ্নিক হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর আর্কিটেকচার সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি নেতাকর্মীদের জয়ের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু হলো শেখ হাসিনার সাহসিক ফসল, এর উৎসও শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে জনগণের আস্থার ঠিকানা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য নেতাকর্মীদের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আরও স্মার্ট ও আধুনিক হতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী মহানগরের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, একসেস টু ইনফরমেশন প্রকল্পের জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাইমুজ্জামান মুক্তা এবং রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহা. হবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মুনির হোসেন। বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ৬৫টি স্টল রয়েছে। তিন দিনব্যাপী এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আগামীকাল রবিবার বিকেলে পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনীর মধ্যদিয়ে শেষ হবে তিন দিনব্যাপী এ মেলা। সমাপনীতে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং এটুআই প্রকল্পের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার। অনুষ্ঠানে ৯ ক্যাটাগরিতে ১১ পুরস্কার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। স্বকীয়তা বজায় রেখে রাজনীতি করুন ॥ রাবি সংবাদদাতা জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বর্তমানে শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতি এক কাতারে চলে এসেছে যা কারও জন্যই শুভ নয়। শিক্ষকরা সক্রিয় রাজনীতি যত কম করবে তত ভাল। শিক্ষকরা স্বকীয়তা ও নিজস্বতা বজায় রেখে রাজনীতি করবে। যে কোন দলের প্রতি শিক্ষকের সমর্থন থাকতেই পারে। তবে এর সঙ্গে নিজেদের স্বকীয়তা গুলিয়ে ফেললে চলবে না। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাবি শিক্ষক সমিতির আয়োজনে জুবেরী ভবনের মধ্য লাউঞ্জে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, দলভারি করার জন্য ছাত্রদের ব্যবহার করা শিক্ষকদের জন্য ভাল নয়। সবকিছুকে একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না। নিজেদের মধ্যে রাজনীতি করতে গিয়ে ঘরের মধ্যে ঘর করবেন না। এতে ছাত্র রাজনীতিও ভাল থাকবে। আর ছাত্রলীগকে নিয়ে যে বিভেদ সেটা আমি দেখব। সভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বলেন, মতিহারের সবুজ চত্বরে কিছু একটা আছে যে কারণে এখানে ছাত্রদের জন্য শিক্ষক জীবন দেন। এখানে ড. শামসুজ্জোহা ছাত্রদের বাঁচাতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাড়া (ড. জোহার মৃত্যুদিবস) পৃথিবীতে আর কোন দিবস নেই যার মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝানো যায়। তাই ১৮ ফেব্রুয়ারিকে গুরুত্বের সঙ্গে জাতীয়ভাবে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুল্লাহ্র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ্ আজম শান্তনুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক সায়েদুর রহমান খান, প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক রকীব আহমেদ প্রমুখ। পরে ওবায়দুল কাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থিত ড. শামসুজ্জোহার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
×