বিডিনিউজ ॥ অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে সরকারী ব্যয় বাড়ানোর যুক্তি অর্থমন্ত্রী দিয়ে এলেও তাতে ঘাপলা দেখছেন অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান। তিনি বলছেন, সরকারী ব্যয়ের এই অর্থের একটি অংশ রাজনীতিকরা পকেটে পুরছেন। তারা সম্পদশালী হচ্ছে, বিপরীতে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘রাজনীতি এবং উন্নয়ন : গণতন্ত্র এবং প্রবৃদ্ধি’ শীর্ষক একটি কর্মশালায় এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান।
বিশ্ব মন্দা এবং বিদেশী বিনিয়োগে খরার মধ্যে সরকারী ব্যয় বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখার কথা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলে আসছেন।
রেহমান সোবহান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ‘আদর্শহীন’ রাজনীতিকরা সরকারী টাকা থেকেই সম্পদশালী হচ্ছেন। এ কারণে বাজেটের আকার বাড়ছে। তিনি বলেন, ২৫ বছর আগের বাজেটের সঙ্গে বর্তমান বাজেট করলে দেখা যায়, আমাদের বাজেটের আকার বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। মূলত সরকারী ব্যয় বৃদ্ধির কারণেই এভাবে বাজেট বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই বিপুল সরকারী ব্যয়ে অপরচুনিটি কস্ট বাড়ছে। এই ‘অপরচুনিটি কস্ট’ থেকেই রাজনীতিকরা সম্পদের মালিক হচ্ছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এখন এই সিস্টেমেই রাজনীতি চলছে।’
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিকদের নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন বঙ্গবন্ধুর সংস্পর্শ পাওয়া রেহমান সোবহান, যিনি বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন। তিনি বলেন, বর্তমানে রাজনীতিবিদদের মধ্যে সমন্বিত কোন আদর্শ নেই। বড় দুই দলের প্রতিযোগিতা মূলত সম্পদ বানানোর জন্য ক্ষমতায় যাওয়ার। এমনকি দলের মধ্যেও লড়াই নিজেদের সম্পদ আরও বাড়ানোর জন্য। এখন ডান বা বাম যে কোন ধরনের রাজনীতিবিদদের মধ্যে কোন আদর্শ নেই। সম্প্রতি দেশে যে ইসলামী উগ্রবাদীদের উত্থান, এখানেও কোন আদর্শ নেই। তারা শুধু সুযোগ তৈরির জন্যই সমাজের সব শ্রেণী থেকে তাদের লোক টানার চেষ্টা করছে। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গবর্নেন্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) আয়োজিত এই কর্মশালার সমাপনী পর্বে প্রধান আলোচক ছিলেন রেহমান সোবহান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ অর্থনীতি সুসংহত করতে বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার ওপর জোর দেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: