ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নাগরিক স্মরণসভা

সুরঞ্জিত ছিলেন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সুরঞ্জিত ছিলেন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন আপাদমস্তক রাজনীতিক। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে হারিয়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় প্রগতিশীল শক্তির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নাগরিক স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দৃঢ় অবস্থানের কথা স্মরণসভায় তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে হারিয়ে প্রগতিশীল শক্তির যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা বলে বোঝানো যাবে না। সত্তরে আমরা এক সঙ্গে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। বাংলাদেশ সৃষ্টির শুরু থেকে সংবিধানের সর্বশেষ সংশোধনীতেও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ভূমিকা ছিল। নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, অভিনেতা থেকে রাজনৈতিক নেতা হয়েছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। শওকত ওসমানের উপন্যাস থেকে তৈরি হওয়া ‘ক্রীতদাসের হাসি’ নাটকে সুরঞ্জিতের সঙ্গে মঞ্চে কাজ করার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ক্রীতদাসের হাসি নাটকে আমরা এক সঙ্গে অভিনয় করেছি। তিনি বড় ভাল মানুষ ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেই তিনি শিক্ষার্থীদের কথা জানতে চাইতেন। কেমন আছে শিক্ষার্থীরা, তাদের সুযোগ-সুবিধায় ঘাটতি আছে কিনা জানতে চাইতেন। প্রতিষ্ঠানের খোঁজখবর নিতেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে বাকপটু হিসেবে খ্যাত সুরঞ্জিতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম তাকে ‘ফরোয়ার্ড প্লেয়ার’ অভিহিত করেন। তিনি বলেন, সুরঞ্জিতদা রাজনীতি করতেন একটা সাধনা হিসেবে। তাই রাজনীতিতে তিনি সব সময়ই ছিলেন ‘ফরোয়ার্ড প্লেয়ার’। রাজনীতি, সংসদসহ সর্বক্ষেত্রে তিনি ফরোয়ার্ড প্লেসে থাকতেন। সবাইকে তিনি কথার জালে আবিষ্ট করে রাখতেন। কোন রাজনৈতিক দলের নেতা ছিলেন না সুরঞ্জিতদা। তিনি ছিলেন জননেতা, মূলত তিনি ছিলেন ‘ন্যাচারাল লিডার’।’ সংসদের আইনকানুন সম্পর্কে কোন সমস্যায় পড়লে প্রথমেই সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের কাছে ছুটে যেতেন বলে জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার। তিনি বলেন, সমস্যায় পড়লেই আমি দাদার কাছে ছুটে যেতাম। অবাক করার মতো ব্যাপার, সংসদের এবং সংবিধানের সকল আর্টিকেল মুখে মুখে বলে দিয়ে সহযোগিতা করতেন তিনি। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব দ্রং, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ এমপি, গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা নূরুর রহমান সেলিম ও অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন।
×