ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একটি আর্কাইভ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

একটি আর্কাইভ

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে লেখা সাব্বির খানের নিবন্ধ সংকলন ‘পোড়া মৃতদেহের রাজনীতি ও সময়ের গল্প’ এবং প্রকাশিত হয়েছে ‘অনিন্দ্য প্রকাশ’ থেকে। বইটি সম্পর্কে আমার প্রাথমিক মূল্যায়ন নেতিবাচক এবং তা আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে। এর কারণ খুব সাধারণ হলেও ব্যতিক্রম। এটি লেখকের সদিচ্ছা ও সততা যে তিনি বই বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বিতর্কিত বা সমালোচিত হওয়ার মতো কোন ইস্যু তার বইতে স্থান দেননি। এছাড়া আলোচিত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে আগ্রহী পাঠকের সংখ্যা বাংলাদেশে খুবই সীমিত। বইটির লেখক সাব্বির খান শুধুমাত্র একজন সুলেখক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরই নন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, ইতিহাস, মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদ ইত্যাদি ইস্যু সম্পর্কে তার রয়েছে গভীর জ্ঞান। বইটিতে লেখক নিজেকে নিরপেক্ষতার যে বলয়ে আবদ্ধ রাখেননি, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির একজন হিসেবে নিজের অবস্থানকে বেশ খোলামেলাভাবেই উপস্থাপন করেছেন। বইয়ের প্রতিটি নিবন্ধে নিজের ধারণ করা আদর্শের পক্ষে অকাট্য যুক্তি তুলে ধরেছেন তিনি। ‘বিএনপিকে জামায়াতের অগ্রবর্তী প্রক্সি দল’ হিসেবে উল্লেখ করে যে বিশ্লেষণধর্মী নিবন্ধটি তিনি লিখেছেন, তার সদুত্তর বিএনপির পক্ষে দেয়া সম্ভব হবে না! এ বইতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে লেখায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে যুদ্ধাপরাধী, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, মৌলবাদ ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিত। এছাড়াও তিনি তার সর্বজনবিদিত অবস্থানকে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে তুলে ধরতে প্রয়াস পেয়েছেন এ বইয়েরই আরও কয়েকটি নিবন্ধে। রাজনৈতিক অবস্থানকে অগ্রগণ্য না ধরে আদর্শিকভাবে ’৭২-এর সংবিধানের পক্ষে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ঘৃণ্য ও বর্বর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সুস্পষ্টভাবে অভিমত প্রকাশ করেছেন সাব্বির খান। প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিবর্গের যে বইগুলো অবশ্যই পড়া উচিত, এটি সেই তালিকায় স্থান পাওয়ার যোগ্য। ‘পোড়া মৃতদেহের রাজনীতি ও সময়ের গল্প’ বইটিতে অনেক উপাদান রয়েছে যা ‘রেফারেন্স-গ্রন্থ’ হিসেবে গণ্য হবে বলেই আমার বিশ্বাস, যার সুফল ভোগ করবে ভবিষ্যত প্রজন্ম। আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল
×