ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সেবা ও জনকল্যাণে সশস্ত্রবাহিনীকে অবদান রাখতে হবে ॥ রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সেবা ও জনকল্যাণে সশস্ত্রবাহিনীকে অবদান রাখতে  হবে ॥ রাষ্ট্রপতি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, সেবা ও কর্তব্যপরায়ণতার মাধ্যমে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা জনগণের শ্রদ্ধা, ভালবাসা এবং সমগ্র জাতির আস্থা অর্জন করেছে। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের সেবা ও জনকল্যাণমূলক কাজে অবদান রাখতে হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট সেন্টার রাজশাহী সেনানিবাসে ১২তম বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন ও ২য় বীর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি বলেন, সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যগণ শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, বিশ্ব পরিম-লেও তাদের কর্মদক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে তুলছেন। একজন ভাল সৈনিক, আমৃত্যু সৈনিক- উল্লেখ করে তিনি বলেন, সৈনিক জীবনে শৃঙ্খলাবোধ আর আনুগত্যের বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে সেনাবাহিনী একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানে আনুগত্য ও পেশাদারিত্ব মূল্যবান সম্পদ। রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি দক্ষ ও পেশাদার বাহিনী গঠনে আধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা অনস্বীকার্য। সে লক্ষ্যে সেনাবাহিনীতে প্রশিক্ষণের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। রিক্রুট ও প্রশিক্ষণকে আরও আধুনিকায়ন এবং যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সামরিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সেনা সদস্যদের উচ্চ শিক্ষারও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখন সেনাবাহিনীর সকল সদস্য ন্যূনতম উচ্চ মাধমিক স্তরের শিক্ষা অর্জন করছে। একইসঙ্গে সেনাবাহিনীতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার চোখে পড়ার মতো বলে উল্লেখ করেন তিনি। সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও একাত্তরে স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেইসব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ভাষা আন্দোলনের বীর সৈনিকদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি কুমিল্লা আর্মি একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু সেদিন সৈনিকদের উদ্দেশে বলেছিলেনÑ ‘তোমরা অবশ্যই অন্যায় দমন করবে। কিন্তু খেয়াল রেখো, নিরপরাধ লোকের প্রতি যেন অন্যায় কিছু না হয়।’ রাষ্ট্রপতি এসময় বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এখন স্বপ্ন নয়, তা বাস্তবে রূপান্তর হচ্ছে। তিনি বলেন, সেনাসদস্য এবং পরিবারবর্গের সুচিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামরিক হাসপাতালের জনবল কাঠামো এবং বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৫০০-শয্যাবিশিষ্ট কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল স্থাপন, বিভিন্ন সেনানিবাসে বিশেষ শিশুদের জন্য ‘প্রয়াস’ স্কুল স্থাপন সেনাবাহিনীর জন্য বর্তমান সরকারের একটি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান। এছাড়াও কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী সদস্যদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, উন্নয়নের এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে, যা সেনা সদস্যদের মনোবলের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে ও তাদের আরও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশ মাতৃকার কাজে মনোনিবেশ করতে উদ্বুদ্ধ করবে। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকার বিষয়। বর্তমান সরকারের ‘রূপকল্প ২০২১’ এর আলোকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রস্তুত করা হয়েছে। ফোর্সেস গোল অনুযায়ী সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়ন প্রক্রিয়াও ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বীর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উপস্থিত হন। পরে তিনি প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি সেখানে রক্ষিত পরিদর্শন বইতেও স্বাক্ষর করেন। রাষ্ট্রপতি হেলিকপ্টারযোগে রাজশাহী সেনানিবাসে অবতরণ করলে তাকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক। এসময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, ফজলে হোসেন বাদশাসহ স্থানীয় এমপিসহ, উর্ধতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×