ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভয়ঙ্কর টিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ভয়ঙ্কর টিয়া

পোষার জন্য আমাদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই যে পাখিগুলো থাকে তার মধ্যে একটি টিয়া পাখি। দেখতে সুন্দর এবং নিরীহ এই পাখিটি যে ভয়ঙ্কর হতে পারে তা কখনও ভাবা যায়! কিন্তু নিউজিল্যান্ডে এক ধরনের টিয়া পাখি রয়েছে যা ভয়ঙ্কর এবং মাংসাশী। স্যার ডেভিড এটেনবোর এবং বিবিসির চিত্রগ্রাহক মাংসাশী এই টিয়ার খোঁজ পান এবং ভিডিও ধারণ করেন। সচরাচর দেখা আর দশটা সাধারণ টিয়া থেকে একটু আলাদা এই পাখিগুলো। এবং এদের ঠোঁট ও খাদ্যাভ্যাস পুরোপুরি মাত্রায় ভিন্ন। সবুজ ও ধূসর বাদামি বর্ণের এই টিয়া একটু বড় আকৃতির হয়ে থাকে, প্রায় ৪৮ সেমি লম্বা। এই পাহাড়ী টিয়া পাওয়া যায় শুধু নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণে আল্পাইন অঞ্চলে। বিশ্বের একমাত্র মাংসাশী এই টিয়া, পাখিপ্রেমীদের আকর্ষণের বস্তু যাদের দেখতে পৃথিবী থেকে পর্যটক ছুটে যান নিউজিল্যান্ডে। বিরল এই পাখিরা মূলত এদের বুদ্ধিমত্তা ও কৌতূহলী বৈশিষ্ট্যের কারণে পরিচিত। সমুদ্রতীর বা পাহাড়ী গর্তে এদের কলোনি গড়ে ওঠে। আর মাটির গর্তে বেড়ে উঠতে থাকে তুলতুলে ও মাংসল ছানারা। বন্য এই টিয়া পাখিরা মূলত দল বেঁধে নির্দিষ্ট এলাকায় কলোনি আকারে একসঙ্গে বাস করে। সাধারণত এরা বন্য ইঁদুর বা পোকামাকড় খাবার হিসেবে প্রথম পছন্দ। কিন্তু মৌসুম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যখন খাদ্যের সঙ্কট শুরু হয় তক্ষুনি এদের হিংস্রতা চরম আকার ধারণ করে। তখন কলোনির ছানারা হয়ে পরে এদের মূল লক্ষ্য। এই প্রজাতির পূর্ণ বয়স্ক টিয়ারা যখন খাবারের খোঁজে সমুদ্রে মাছ শিকারে ব্যস্ত ঠিক তখনই খাবারের অন্বেষণে কিছু টিয়ার দল অন্য টিয়ার ছানাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। নিমিষেই এদের ধারালো, তীক্ষè ঠোঁট ছিঁড়ে ফেলতে পারে যে কোন কিছু। শব্দ অনুসরণ করে খুঁজে নেয় এরা কোন গর্তে ছানারা মা পাখিবিহীন একা রয়েছে। কখনও কখনও মাংসের লোভে এদের মাটির গর্ত খুঁড়তে হয় কারণ এদের কলোনির বাসাগুলো মাটির বেশ গভীরে হয়। একপর্যায়ে, ব্লেডের ন্যায় ধারালো ঠোঁট দিয়ে টেনে বেড় করে নিজ প্রজাতির ছানা আর দলবেঁধে চলে ভক্ষণ উৎসব। এছাড়া এ টিয়াগুলো এতটাই হিংস্র যে, মাঝে মাঝে জীবন্ত প্রাণীদের দেহে কামড়ে মাংস ভক্ষণের চেষ্টা করে। ফাতিমা রুনা
×