ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আদিতম মানব প্রজাতি

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আদিতম মানব প্রজাতি

আমাদের পূর্বপুরুষরা ঠিক কতকাল আগে এই পৃথিবীতে এসেছিল? কবে জন্ম হয়েছিল তাদের?- এ নিয়ে আছে নানা তথ্য ও তত্ত্ব। তবে বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি মানবজাতির এ রকম পূর্বপুরুষদের এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে পুরনো একটি নমুনা খুঁজে পেয়েছেন। তারা বলছেন, ফসিল হয়ে যাওয়া এই আদি মানব, ৫৪০ মিলিয়ন বা ৫৪ কোটি বছরেরও বেশি পুরনো। এবং সেই ফসিল বেশ ভালভাবেই রক্ষিত ছিল। ধারণা করা হয়, এই বিবর্তনের প্রক্রিয়ায়, এখনও পর্যন্ত যা জানা গেছে, তাতে শুরুর দিকের প্রথম ধাপ ছিল মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে দেখা সম্ভব এ রকম একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণী। তারপর একপর্যায়ে এটি মাছ এবং আরও পরে পরিণত হয় মানুষে। সামুদ্রিক এই প্রাণীটির নাম স্যাকোরিটাস। বিজ্ঞানীদের দলটি বলছে, মেরুদণ্ড আছে এ রকম বহু প্রাণীর আদিকালের একটি প্রজাতি হচ্ছে- ডিওস্টেরোস্টোমস। তাদেরই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে আদিতম প্রজাতির একটি নমুনা হলো স্যাকোরিটাস। চীনের মধ্যাঞ্চলীয় শাংজি প্রদেশ থেকে এটি উদ্ধার করা হয়েছে। এর বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে, বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেইচারে। স্যাকোরিটাস ছিল আকারে প্রায় এক মিলিমিটার। ধারণা করা হয় সমুদ্র তলের বালিতে ছিল এর বসবাস। এই প্রাণীটির কোন মলদ্বার ছিল বলে প্রমাণ খুঁজে পায়নি বিজ্ঞানীরা। ফলে ধারণা করা হয় এটি মুখ দিয়েই খেত আবার এই মুখ দিয়েই মল-মূত্রের মতো বর্জ্য জাতীয় সবকিছু বের করে দিত। এই গবেষণাটি চালিয়েছেন যুক্তরাজ্য, চীন এবং জার্মানির বিজ্ঞানীদের নিয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক একটি দল। এদেরই একজন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর সাইমন কনওয়ে মরিস বলেছেন, খালি চোখে দেখলে এই জীবাশ্মটি একটি ক্ষুদ্র কালো শস্যকণার মতো। কিন্তু মাইক্রোস্কোপের নিচে রেখে দেখলে এত বিস্তারিত সব তথ্য পাওয়া যায় যে, সেটা সত্যিই বিস্ময়কর। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই ডিওটেরোস্টোমস বহু প্রজাতিরই বিবর্তনে শুরুর দিককার নমুনা হতে পারে। এসব প্রজাতির মধ্যে আমরাও আছি। বলতে পারি সব ডিওস্টোরোস্টোমসের ছিল এক অভিন্ন পূর্বপুরুষ।’ এখনও পর্যন্ত ডিওস্টেরোস্টোমস গ্রুপের যেসব প্রজাতি পাওয়া গেছে সেগুলো ছিল ৫১ থেকে ৫২ কোটি বছরের পুরনো। এগুলো পরে শুধু মেরুদণ্ডি প্রাণী হিসেবেই বিবর্তিত হয়েছে তা নয়। হয়েছে স্টারফিশের মতো সামুদ্রিক প্রাণীও। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এগুলো দেখতে একটি আরেকটির চেয়ে এতই আলাদা ছিল যে, এদের সবার পূর্বপুরুষ দেখতে কেমন বিজ্ঞানীদের জন্য সেটা ধারণা করা ছিল খুব কঠিন একটি কাজ। গবেষণায় দেখা গেছে, এর শরীর ছিল সিমেট্রিক্যাল। অর্থাৎ এক পাশ ছিল অন্য আরেকটি পাশের মতো। খুব পাতলা আর নমনীয় চামড়া ও পেশি দিয়ে ঢাকা ছিল তার শরীর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পেশি সঙ্কোচন ও প্রসারণের মাধ্যমেই প্রাণীটি চলাফেরা করত। সূত্র : বিবিসি
×