ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্যাশনে লং-কামিজ

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ফ্যাশনে লং-কামিজ

নিয়ত পরিবর্তনশীল ফ্যাশন। এই পরিবর্তনশীলতার মধ্যেও কিছু জিনিস হয়ে ওঠে সময়ের ট্রেন্ড। সে অনুযায়ী গত কয়েক বছরে লেন্থ কামিজ অর্থাৎ লং কামিজ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে তা একদম ভিন্ন ও নতুনভাবে। লং কামিজের প্রচলন বেশ আগে ছিল। কিন্তু পরে শর্ট কামিজ ও মিনি লং কামিজের জনপ্রিয়তায় এটি প্রায় হারাতে বসেছিল। এ ছাড়া লং কামিজের সঙ্গে পরা হয় যে লেগিংস সেটাও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কখনও লং কামিজ, কখনও শর্ট কামিজ আবার দেখা যায় লং কামিজের সঙ্গে চুড়িদার চলছে, কখনবা বেলবটম পরছে কেউ কেউ। অনেকে আরও আকর্ষণীয় করে নিজেকে মেলে ধরতে লং কামিজের সঙ্গে বেছে নেয় লেগিংস। এখানে আরও একটা বিষয় লক্ষণীয় হলো, প্রায় প্রতিবছর ফ্যাশনের ট্রেন্ডটা পরিবর্তন হচ্ছে। কদিন আগেও মেয়েরা শর্ট কামিজের সঙ্গে বেছে নিয়েছিল আঁটসাঁট সালোয়ার। এ ছাড়া বিশেষ নজর দিয়েছিল ঘটিহাতা ফ্রকজাতীয় কামিজের দিকে। কিন্তু সাম্প্রতিক সেটি আর চোখে পড়বে না। সবাই এবার ঝুঁকে পড়েছে পাকিস্তানী ডিজাইনে তৈরি লং কামিজ-সালোয়ারের দিকে। এ ধরনের কামিজের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো কটন কাপড় দিয়ে তৈরি। একই সঙ্গে আরামদায়ক ও গর্জিয়াস। দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খুবই উপযোগী। যারা চুমকি, জরি কিংবা পাথরের নক্সা করা পোশাক এড়িয়ে চলেন তাদের জন্য খুবই মানানসই এই পোশাক। এ ছাড়া ডিজাইনে এত ভিন্নতা আনা হয়েছে যে সব বয়সের সব মেয়েকে মানিয়ে যাবে এ পোশাকে। কামিজের প্রতি ঝেঁকটা গেল কয়েক বছরে বেশ বেড়েছে মেয়েদের। বিভিন্ন কাটিংয়ের লং পোশাকেই যেন স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন এ সময়ের ফ্যাশনসচেতন নারীরা। ডিজাইনাররাও নিত্যনতুন স্টাইল সংযোজন করেছেন সালোয়ার-কামিজে। কখনও নতুন কিছু যোগ করছেন, কখনও পুরনো ধারার অনুকরণে তৈরি করছেন। ইদানীং কামিজের দৈর্ঘ্য ও ঘেরে লক্ষ্য করা গেছে ফিউশনধর্মী কাজ। অনেকটা আলখাল্লা স্টাইলে তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ ধরনের কামিজ। গত কয়েক বছর ফুলেল প্রিন্টে ইয়কসহ এমব্রয়ডারির কাজের চল বেশি থাকলেও চলতি বছর লং কামিজকে আরেকটু গর্জিয়াস করতে করা হচ্ছে কারচুপি, সিকোয়েন্স, ডলার, স্টোন ও জরির কাজ। এ সময়ে পোশাকে দুটি ধাঁচ বেশি দেখা যাচ্ছে- ফ্রক স্টাইল এবং কামিজ স্টাইল। এখন কামিজ তৈরি করা হচ্ছে বেশ লম্বা করে। প্রায় পায়ের পাতা পর্যন্ত নেমে এসেছে কামিজের দৈর্ঘ্য। লেক লাইনের কাটিংয়ে ভি স্টাইল বেশি দেখা যায়। কামিজের ঘেরটা একটু বেশি হয়। কোন কামিজ স্টেটকাটের হয় আবার কোনটি দুদিক দিয়ে চার থেকে ছয় ইঞ্চি কোণা ঝোলানো হয়। কোনটার পেছনের দিকটা বেশি ঝোলানো। কাপড় হিসেবে লিনেন, ভয়েল, শিফন, সুইস ক্রেপ, জর্জেটকেই বেছে নিচ্ছেন মেয়েরা। এখন কামিজের কাটিংটাই চোখে পড়ার মতো। আর তাতে ভারি পাথর, পুঁতি কিংবা বোতামের কাজ এই কামিজগুলোর স্টাইলে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। গেল বছর শাটিন লেইস, নেট ও পাইপিন লেইসের ব্যবহার বেশি থাকলেও এখন সেই জায়গাটা দখল করেছে আরও ভারি নক্সাদার কাজ। ওড়নার ক্ষেত্রে ভেরিয়েশন আনতে মসলিন ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু ওড়নায় আবার মসলিনের সঙ্গে এ্যাপ্লিকের ব্যবহার দেখা গেছে। এসব কামিজের আউটলুক গর্জিয়াস বলে অফিস এবং পার্টিতে একই পোশাক পরা যায়। সাদা, সবুজ, লাল, হলুদ, ফিরোজা, কমলা, গোলাপি, মেরুন, নীলের মতো উজ্জ্বল সব রঙের পোশাককে রঙিন করে তুলছে। গলা থেকে প্রায় কোমর পর্যন্ত নেমে আসছে স্টোন কিংবা বোতামের কাজ। একই পোশাকে বিপরীত রঙের পাড়, স্টোনের কাজ খুব জনপ্রিয় এখন। ঝুল,গলা, হাতার পাড়ে তৃতীয় কোন রং জুড়ে নিচ্ছেন কেউ। একরঙা বা ছাপা দু’রকম জমিনেই ভারি কাজ মানিয়ে যাচ্ছে খুব। আরও আছে ইয়কের ব্যবহার। ছোট করে পিঠে, হাতায় ইয়কও বসিয়ে নিচ্ছেন অনেকে। ইয়ক বা নক্সা যা-ই হোক তাতে রয়েছে ফুলের নক্সা আর জ্যামিতিক বাঁক। গলায় হাই কাটিংয়ের ব্যবহার বাড়ছে। কামিজে কলার দেখা যাচ্ছে না খুব একটা। হাই নেক আর রি-নেক গলা চলছে বেশি। আর পাড়ে কয়েক রঙের কাপড়ের বর্ডারের পাশাপাশি বড় লেসের চল বেড়েছে। সিøভলেস, ম্যাগি, থ্রি কোয়ার্টার, ফুল হাতার মধ্য থেকে রুচি ও স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী হাতাটা বেছে নিতে হবে। তবে গেল বছরের মতো এ বছরও থ্রি কোয়ার্টার হাতাই থাকছে তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে। লং কামিজের সঙ্গে ঢোলা সালোয়ার পরলে হাই হিল, সেমিহাই বা পেনসিল হিলেও ভাল মানাবে। লেগিংস পরলে ফ্ল্যাট জুতায় ভাল মানাবে, স্যান্ডেলও নেয়া যেতে পারে। আর গয়না পরতে চাইলে হাতে কাপড়ের বালা, কানে হালকা দুল ও গলায় চিকন ফিতায় পুঁতির কাজ করা মালা নেয়া যেতে পারে। কোথায় পাবেন : আনস্টিচ সালোয়ার-কামিজ ও তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় মার্কেট ঢাকার গাউসিয়া, নিউমার্কেট, চাঁদনি চক, ইসলামপুর, বনানী বাজার ও মিরপুর। সব ধরনের কাপড় ও ডিজাইনের কামিজ মিলবে এ জায়গায়। এ ছাড়া যমুনা ফিউচার পার্কেও পেয়ে যাবেন মনের মতো সব কামিজ। দেশি ফ্যাশন হাউসগুলোর পোশাক কিনতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন সারা দেশের রঙ, ইনফিনিটি মেগা মল, অঞ্জন’স, স্টুডিও এমদাদ, আড়ং, কে-ক্রাফট, বাংলার মেলা, প্রবর্তনা, বিবিয়ানা, নগরদোলা, সাদাকালো, অন্যমেলা, দেশালের শোরুমে।
×