ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নয়ত প্রতিশ্রুতি সীমিত করবে যুক্তরাষ্ট্র ॥ ন্যাটো সদস্যদের ম্যাটিস

প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ান

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ান

নয়া মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস প্রতিরক্ষা ব্যয় প্রশ্নে ন্যাটোর প্রতি কড়া হুমকি দিয়েছেন। তিনি মিত্রদের বলেছেন, তাদের অবশ্যই চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানো শুরু করতে হবে, নয়ত ট্রাম্প প্রশাসন ন্যাটোর প্রতি এর প্রতিশ্রুতি সীমিত করবে। জোটের সদস্যরা তা করতে ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্র কী করতে পারে, সেটি অবশ্য তিনি বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেননি। খবর বিবিসি ও ফক্সনিউজ অনলাইনের। ম্যাটিস প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, ন্যাটো সদস্যদের তাদের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) শতকরা ২ ভাগ সামরিক খাতে ব্যয় করার লক্ষ্য অর্জনের জন্য তাদের ব্যয় বাড়াতে হবে। সামরিক জোটের ২৭টি দেশের মধ্যে মাত্র ৫টি দেশ সেরূপ সামরিক ব্যয় করে থাকে। পেন্টাগন প্রধান একে ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক বাস্তবতাভিত্তিক এক ‘ন্যায়সঙ্গত দাবি’ বলে অভিহিত করেন। সে লক্ষ্যে ম্যাটিস বলেন, আমেরিকান করদাতারা আর পাশ্চাত্য মূল্যবোধ রক্ষায় তাদের অসমানুপাতিক অংশ বহন করতে পারছেন না। তিনি আরও বলেন, আমেরিকানরা আপনাদের শিশুদের ভবিষ্যত নিরাপত্তার জন্য আপনাদের চেয়ে বেশি যতœবান হতে পারেন না। তিনি ব্রাসেলসে ন্যাটো সদর দফতরে জোটের অন্য ২৭ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। ম্যাটিস বলেন, সদস্য দেশগুলোকে চলতি বছরেই অবশ্যই অগ্রগতি দেখাতে হবে এবং এমনকি মন্থরগতিতে হলেও তাদের চাঁদার পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। এটিই ছিল তার ন্যাটো প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে প্রথমবারের মতো যোগদান। ম্যাটিস বলেন, আমেরিকা এর দায়িত্ব পালন করবে, কিন্তু যদি আপনাদের দেশগুলো এ জোটের প্রতি আমেরিকার অঙ্গীকারের ক্ষেত্রে শৈথিল্য দেখতে না চায়, তবে আপনাদের প্রত্যেক রাজধানীকেই আমাদের অভিন্ন প্রতিরক্ষার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করতে হবে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, অভিন্ন প্রতিরক্ষায় বিনিয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এ প্রসঙ্গে ২০১৪ সালের পর উদ্ভূত হুমকিগুলোর কথা উল্লেখ করেন, যেমন রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল এবং সদস্য তুরস্কের দক্ষিণ সীমান্তে সিরিয়া ও ইরাকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের উত্থান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ জোটের কেউ কেউ যা ঘটছে তা অস্বীকার করতে অন্যদিকে তাকিয়ে রয়েছেন। এ সতর্কবাণীতে ন্যাটো সদস্য দেশগুলো সামরিক ব্যয়ের আরও বড় অংশ বহন করুক বলে ট্রাম্পের আগ্রহই প্রতিফলিত হয়। ট্রাম্প এ আভাস দিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোকে বিচলিত করে তোলেন যে, যুুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো সদস্য হিসেবে আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণে অনিচ্ছুক এমন মিত্রদের রক্ষা নাও করতে পারেন। ম্যাটিস ততদূর এগোননি। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালোন বলেন, কংগ্রেস অসম বোঝা বহন সহ্য করে যাবে না বলে ম্যাটিস ন্যাটো সদস্যদের জানিয়েছেন। কিন্তু ফ্যালোন বলেন, ম্যাটিস অন্যান্য দেশের ব্যয় বৃদ্ধির জন্য এক রোডম্যাপ তৈরি করতে ব্রিটিশদের দেয়া এক প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন বলেও মনে হয়। কেবল যুক্তরাষ্ট্র, যুুক্তরাজ্য, এস্তোনিয়া, গ্রীস ও পোল্যান্ড বর্তমানে প্রতিরক্ষা খাতে জিডিপির শতকরা ২ ভাগ ব্যয়ের লক্ষ্য অর্জন করছে, কিন্তু অন্যরা সে লক্ষ্যে পৌঁছার পথে রয়েছে। ফ্যালোন বলেন, জিডিপির অন্তত শতকরা ২ ভাগ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করছে না এমন দেশগুলোর প্রতি আমি আজ এ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে তাদের অন্তত বার্ষিক বাজেট বাড়াতে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বার্ষিক ব্যয় বৃদ্ধির যে প্রতিশ্রুতি দিতে আমরা তাদের অনুরোধ করছি, তা অন্তত তাদের সৎবিশ্বাস প্রমাণ করবে। যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর সবচেয়ে শক্তিশালী সদস্য। অন্যসব দেশ মিলিতভাবে প্রতিরক্ষা খাতে যা ব্যয় করে, যুক্তরাষ্ট্র তার চেয়ে বেশি ব্যয় করে। আমেরিকা গত বছরের জিডিপির শতকরা ৩ দশমিক ৬১ ভাগ সামরিক খাতে ব্যয় করে বলে ন্যাটোর হিসাবে জানানো হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ ব্যয়ের মাত্রা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
×