ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় জলদস্যুদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের আনাগোনা

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

কলাপাড়ায় জলদস্যুদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের আনাগোনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৬ ফেব্রুয়ারি ॥ কলাপাড়ার মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুরে সরকারীভাবে চিহ্নিত রোহিঙ্গা পরিবার রয়েছে ৭২টি। বর্তমানে এর বাইরেও বহিরাগত রোহিঙ্গাদের আনাগোনা বেড়েছে। এরা জেলে পরিচয়ে ফিশিং বোটে কাজ করার নাম করে সাধারণ জেলেদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। আবার এদের সঙ্গে রয়েছে সাগরে অবস্থানরত জলদস্যুদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ। অতিসম্প্রতি কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পুবে ঢালচর সংলগ্ন এলাকায় এফবি বাইচু (১) ও বাইচু (২) ট্রলারে দস্যুরা হানা দেয়। দস্যুরা ট্রলার থেকে মাছ, জাল, জ¦ালানি, মোবাইলসহ টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে। তারা ট্রলার দুটির ইঞ্জিন বিকল করে দিয়ে যায়। এ সময় ট্রলারে থাকা শাহবুদ্দিন নামের এক জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ২ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু আজ অবধি এ শাহবুদ্দিনকে ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে জলদস্যুর ওই দলটির কেউ ট্রলার মাঝি নুর-আলম, দেলোয়ার কিংবা মালিক বেল্লাল হোসেনকে মোবাইল করেনি। মাঝি দেলোয়ার জানান, এই প্রথমবার তাদের ট্রলারে শাহবুদ্দিনকে তারা সাধারণ জেলে শ্রমিক হিসেবে নিয়েছিল। তার সম্পর্কে আর কিছুই জানেন না। তবে শাহবুদ্দিন নিজেকে রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। সাধারণ জেলেদের দাবি সম্প্রতি মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের একজন এই শাহবুদ্দিন হতে পারে। এরা ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে যাচ্ছে। এরা কেউ আবার জলদস্যুসহ বিভিন্ন অপরাধীদের সহযোগী হয়ে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে কাজ করছে। এরা যে কোন সময় বড়ধরনের নাশকতা ঘটাতে পারে। এছাড়া স্থানীয়দের এন্তার অভিযোগ বর্তমানে কলাপাড়ায় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের একটি চিহ্নিত চক্র মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ কাজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে। মৎস্যবন্দর আলীপুরের মানুষের দেয়া তথ্যানুসারে এখানে রোহিঙ্গাদের একটি সমিতি রয়েছে। যার সভাপতি হিসেবে স্থানীয়রা শামসুদ্দিন মাঝিকে চেনেন। স্থানীয় জেলেরা স্পষ্ট ভাষায় এদের বার্মাইয়া বলে জানেন। সাধারণ জেলে পরিচয়ে এরা ট্রলারে অবস্থান করছে। আলীপুর-মহিপুরের প্রভাবশালী কয়েক ট্রলার মালিক এদের নিয়ন্ত্রক। এদের প্রশাসনিক কিংবা পুলিশি ঝামেলা থেকে রক্ষার নাম করে ওই মহল এদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। আলীপুর-মহিপুরে কক্সবাজারসহ তার আশপাশের এলাকা থেকে আসা এ চক্রের সন্তানদের কোন কিছু না জেনে-শুনে কেন স্থানীয় স্কুলে ভর্তি করান হচ্ছেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে আমজেদপুরের শিক্ষক সুলতান মাহমুদ জানান, জন্মনিবন্ধনপত্র নিয়ে হাজির হয়। ফলে তাদের করার কিছুই থাকছে না। বর্তমানে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের দাবি প্রকৃতপক্ষে এরা কোথাকার লোকজন। কি তাদের কর্মকা- তা উদঘাটন করা জরুরী প্রয়োজন। করণ ট্রলারযোগে এরা সাগরবক্ষে যাওয়া আসা করছে। প্রভাবশালী, রাতারাতি টাকাকড়ির মালিক বনে যাওয়া ট্রলার মালিকরা এসব মাঝি কিংবা জেলেদের ট্রলারে রাখতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। তাই পর্যটন এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে এদের প্রকৃত পরিচয় এখনই উদঘাটন করা জরুরী বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
×