সংসদ রিপোর্টার ॥ ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুণেœর অভিযোগ এনে ডেইলি অবজারভারে বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের আনীত নোটিস গ্রহণ করেছে জাতীয় সংসদ। নোটিসটি সংশ্লিষ্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য। তবে শামীম ওসমানের প্রথম আলো ও বাংলা ট্রিবিউনের বিরুদ্ধে আনীত নোটিস শর্তপূরণ না হওয়ায় তা গ্রহণ করেননি স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনের শুরুতেই স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিষয়টি সংসদকে অবহিত করেন। স্পীকার বলেন, সংসদ শামীম ওসমান ব্যক্তি অধিকার ক্ষুণœ হয়েছে বলে সংসদে তিনটি নোটিস দিয়েছেন। নোটিস তিনটির মধ্যে প্রথমটি ডেইলি অবজারভার পত্রিকায় গত ২৩ জানুয়ারি প্রথম পৃষ্ঠায় অসত্য, কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন খবর প্রকাশ করায় তার পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও দেশ-বিদেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ায় তার সুনাম ক্ষুণœ হয়েছে বলে বিশেষ অধিকার ক্ষুন্ন হওয়ার কথা তিনি উল্লেখ করেছেন।
স্পীকার জানান, দ্বিতীয় নোটিশে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ২০১৪ সালের ১ জুন ‘আইনজীবীকে হত্যায় অনুতপ্ত র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা’ শিরোনামে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তাতে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে জড়িত করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন নোটিশদাতা। তৃতীয়ত বাংলা ট্রিবিউন অনলাইন পত্রিকায় ২০১৬ সালের ২৭ নবেম্বর তার বাবাকে জড়িত করে রিপোর্ট করায় কার্যপ্রণালী বিধির ১৬৪ বিধিতে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেছেন।
স্পীকার বলেন, শামীম ওসমান তার তিনটি নোটিসের বিশেষ অধিকার ক্ষুণœ হয়েছে বলে স্পীকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। নোটিস তিনটির বিষয় কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী পরীক্ষা করা হয়েছে। তিনটি নোটিসের মধ্যে দ্বিতীয় এবং তৃতীয়টি বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত বিধি অনুযায়ী বিশেষ অধিকার প্রশ্ন উত্থাপনের শর্তাবলী পূরণ হয়নি। তাই তার দ্বিতীয় এবং তৃতীয় নোটিসটি ১৬৫ (২) বিধিতে থাকায় তা গ্রহণ করা সম্ভব হলো না। প্রথম নোটিসটি কার্যপ্রণালী বিধির ১৬৯ বিধি অনুযায়ী বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত কমিটিতে পাঠানো হলো।
এ সময় শামীম ওসমান বলেন, ‘আপনি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আমি মেনে নিয়েছি। তবে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এই দুটি পত্রিকা দেশে বিভিন্ন সময় সরকার পরিবর্তনে বিভিন্ন ভূমিকা রেখেছে। আপনি (স্পীকার) বলেছেন যে সময় ঘটনা সংঘটিত হবে সেই সময় উত্থাপন করতে হবে। আমি একমত। কিন্তু যখন কোন বিষয় আদালতে বিচারাধীন থাকে সেই বিষয়ে কথা বলার সুযোগ থাকে না। যেহেতু আমরা আইন প্রণেতা। সেই হিসেবে সেই সুযোগ আমার কাছে ছিল না। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেজন্যই ৩৮ মাস অপেক্ষা করেছি। তারা বিভিন্নভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছে। আমি তাদের অনেক নোটিস দিয়েছে একটিও গ্রহণ করেনি। আমি এও বলেছিলাম আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তার তথ্য-প্রমাণ আমার সংসদের অভিভাবক স্পীকারকে দেন। ওরা তাও দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রায় ৩৮ মাস ধরে নিগৃহীত হলাম। পদ্মা সেতুর বিষয়ে মন্ত্রী এবং সচিব একইভাবে নিগৃহীত হলেন। এমনকি এই পত্রিকা ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলো ১/১১ সময় আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুর্নীতিবাজ বানানোর চেষ্টা করেছে। তাহলে কি তারা কোথাও জবাব দেবে না? যদি এখানে কোন আইনের বাধা থাকে তাহলে আইনমন্ত্রীকে অনুরোধ করব একটা আইন নিয়ে আসেন।