ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বব্যাংকের কাছে এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি ১৪ দলের

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিশ্বব্যাংকের কাছে এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি ১৪ দলের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পদ্মা সেতুতে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নির্মাণকাজ বিলম্ব ঘটানোয় বিশ্বব্যাংকের কাছে এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। একই সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ যারা পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ডেকে স্পীকারের কাছে জবাবদিহি করারও দাবি জানিয়েছে ক্ষমতাসীন এই জোটটি। বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানম-ির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক থেকে এ দাবি জানানো হয়। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য মাহাম্মদ নাসিম বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ তুলে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এ জন্য ১৪ দল বিশ্বব্যাংকের কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক বিলিয়ন ডলার দাবি করেছে। বিশ্বব্যাংককে এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ১৪ দল নেতারা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের অংশীদার দেশ। বিশ্বব্যাংক কেন এটা করল বাংলাদেশ এর জবাব চাইতেই পারে। ১৪ দল বিশ্বব্যাংকের মিথ্যা অভিযোগের জবাব চায়। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এই ষড়যন্ত্রের নাটের গুরু ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নোবেল পুরস্কারের প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন তিনি। ওয়ান ইলেভেনের সময় তাঁর ভূমিকার বিষয়েও সবাই জানে। তার প্রতিটি কাজেই দেশদ্রোহিতা স্পষ্ট। একটা চক্রকে সঙ্গে নিয়ে দেশের উন্নয়নের অন্যতম নজির পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ বাধাগ্রস্ত করেন তিনি। তাই আমরা স্পীকারের কাছে আবেদন করেছি তাকে (ড. ইউনূস) সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ডাকতে হবে জবাবদিহির জন্য। আমরা মনে করি, ইউনূসসহ সব ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে দেশের জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। তাই ইউনূসসহ যারা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের সংসদীয় কমিটিতে ডাকতে হবে। এর আগে বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের আনা দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ কানাডার আদালতের রায়ে নাকচ হওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন ১৪ দল নেতারা। এ সময় এই অভিযোগ মোকাবেলায় ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনা এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়ন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকেও অভিনন্দন জানানো হয়। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নতুন ইসিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই ইসি আগামী দিনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে বলেও আমরা বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি। ১৯৯৬ সালের এদিনে বিএনপি একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল। সেই নির্বাচনের পর খালেদা জিয়ার সরকার বেশি দিন টিকে থাকতে পারেনি। দেড় মাসের মাথায় জনগণের আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। সঠিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের আহ্বান : বৈঠক সূত্র জািনয়েছে, ১৪ দলের শরিক নেতারা দেশজুড়ে চলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করার দাবি জানান। সেই সঙ্গে মায়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যাতে দ্রুত তাদের দেশে প্রত্যাবর্তন করানো যায়Ñ সেই পদক্ষেপ নেয়ার জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা। এ প্রসঙ্গে কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. অসীত বরণ রায় বলেন, মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ঢুকে যাচ্ছে। সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে এদের বাদ দিতে হবে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে সঠিক তালিকা তৈরি করতে হবে। মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেনÑ আওয়ামী লীগের মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, এস এম কামাল হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাত হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের অসীত বরণ রায়, গণআজাদী লীগের এস কে সিকদার, জাতীয় পার্টির (জেপি) শেখ শহীদুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের এম এ আওয়াল, ন্যাপের ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।
×