ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএমএ ও স্বাচিপ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের সংযত আচরণ করতে হবে

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের সংযত আচরণ করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের সংযত আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, চিকিৎসায় অবহেলা বা ভুলের কোন অভিযোগ থাকলে রোগীর আত্মীয় বা স্বজন যেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) দ্বারস্থ হন। তারা যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেন। চিকিৎসকেদের ওপর হামলা বা হাসপাতালে ভাংচুর না চালান। আর রোগীদের জিম্মি করে চিকিৎসকেরাও যেন যেকোন অভিযোগে ধর্মঘটে না যান। বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এতে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশে মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এমএ আজিজ প্রমুখ। চিকিৎসকদের ওপর আক্রমণ না করার জন্য রোগীর স্বজনদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, একজন প্রকৃত চিকিৎসক কখনও ইচ্ছে করে ভুল চিকিৎসা করেন না। রোগীকে সঠিক সেবা ও চিকিৎসা প্রদান করতে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তাই আবেগতাড়িত হয়ে কোন চিকিৎসকের ওপর হাত তোলা ঠিক নয়। কোন চিকিৎসকের চিকিৎসার ওপর সন্দেহ থাকলে তার বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) অভিযোগ করতে পারেন। অভিযুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিএমডিসি ব্যবস্থা নেবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। চিকিৎসা সেবা যাতে ব্যাহত না হয় সে বিষয়ে চিকিৎসক ও রোগী উভয়পক্ষকেই সতর্ক থাকতে হবে। রোগী ও চিকিৎসকদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্য সেবা আইন হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই আইনে রোগী যেমন সুরক্ষা পাবে, তেমনি চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান আইনী সুরক্ষা পাবে। খসড়া আইনটির ওপর মতামত শেষ হয়েছে। খুব দ্রুত আইনটি মন্ত্রিপরিষদে উঠবে। বিএমডিসিতে এ পর্যন্ত জমা পড়া ৩৩৩টি অভিযোগের মধ্যে মাত্র একটির বিচার হয়েছে, বাকিগুলো হয়নি কেন? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম জানান, ২০১০ সালের আগে বিএমডিসি সক্রিয় ছিল না। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর বিএমডিসিকে সক্রিয় করেছি। এটি এখন এ্যাকটিভ হয়েছে। তবে বিএমডিসির সদস্য অধ্যাপক ডাঃ শরফুদ্দীন আহমেদ জানান, এ পর্যন্ত ১৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিএমডিসি। অভিযোগের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়। স্বাস্থ্য খাতে ৪০ হাজার পদে নিয়োগ দেয়া হবে ॥ শীঘ্রই স্বাস্থ্য খাতের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শূন্য ৪০ হাজার পদে লোক নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর এই পদগুলো শূন্য থাকায় স্বাস্থ্য সেবাকে কাক্সিক্ষত মানে উন্নীত করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকার ৬ হাজার চিকিৎসক ও ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসক ও নার্স সঙ্কটের সমাধান করেছে। কর্মচারী পর্যায়ের খালি পদ পূরণের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নবনির্বাচিত কমিটি মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেলে তিনি এই কথা বলেন। বিএমএ সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ ইহ্তেশামুল হক চৌধুরী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। নির্বাচনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত বিএমএ এর নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব চিকিৎসককে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিএমএ নেতৃবৃন্দকে কাজ করতে হবে।
×