ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Taslima Afroz

নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান

Blessed with SHAH MD.IDRIS ALI & HAMIDA ALI C/O Md. Sofiul Haq Khandakar (Shohag) M.Sc. (First Class 1st), B.Sc. (First Class 9th) Achieved: Best Teacher Award, Lecturer in Zoology, Arambagh High School & College, Arambagh, Motijheel, Dhaka -1000. Mob: 01717-293619 e-mail: [email protected] দ্বিতীয় অধ্যায়: জীবকোষ ও টিস্যু আজকের আলোচনা: উদ্ভিদ ও প্রাণিকোষের প্রধান অঙ্গাণুসমূহের বর্ণনা ও কাজ উদ্ভিদ ও প্রাণিকোষের প্রধান অঙ্গাণুসমূহের বর্ণনা ও কাজ: ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যায় এমন কিছু কোষ অঙ্গাণুর সাথে এবার আমরা পরিচিত হব। ক) কোষপ্রাচীর (ঈবষষ ধিষষ): অবস্থান: উদ্ভিদকোষে কোষপ্রাচীর থাকে কিন্তু প্রাণিকোষে কোষপ্রাচীর থাকে না। গঠন: র্ কোষ প্রাচীর উদ্ভিদ কোষের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। র্ এটি মৃত বা জড়বস্তু দ্বারা গঠিত।র্ এর রাসায়নিক গঠন বেশ জটিল। এতে সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ, লিগনিন, পেকটিন, সুবেরিন নামক রাসায়নিক পদার্থ থাকে।র্ তবে ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর প্রোটিন, লিপিড ও পলিস্যাকারাইড দ্বারা গঠিত এবং ছত্রাকের কোষ প্রাচীর কাইটিন নির্মিত।র্ প্রাথমিক কোষপ্রাচীরটি একস্তরবিশিষ্ট। মধ্য পর্দার উপর প্রোটোপ্লাজম থেকে নিঃসৃত কয়েক প্রকারের রাসায়নিক দ্রব্য জমা হয়ে ক্রমশ গৌণপ্রাচীর সৃষ্টি হয়।র্ এ প্রাচীরে মাঝে মাঝে ছিদ্র থাকে যাকে কূপ বলে। কাজ: র্ কোষপ্রাচীর কোষকে দৃঢ়তা প্রদান করে। র্ কোষের আকার ও আকৃতি বজায় রাখে। র্ পার্শ্ববর্তী কোষের সাথে প্লাজমোডেজমাটা (আণুবীক্ষনিজ নালী) সৃষ্টির মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে। র্ পানি ও খনিজ লবণ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। খ) কোষঝিল্লি (চষধংসধ ষবসসধ): গঠন: প্রোটোপ্লাজমের বাইরে যে দ্বিস্তরবিশিষ্ট স্থিতিস্থাপক পর্দা থাকে তাকে কোষঝিল্লি বা প্লাজমালেমা বলে। কোষঝিল্লির ভাঁজকে মাইক্রোভিলাই বলে। এটি প্রধানত লিপিড ও প্রোটিন দ্বারা গঠিত। কাজ: কোষঝিল্লি একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা হওয়ায় অভিস্রবণের মাধ্যমে পানি ও খনিজ লবণ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে ও পার্শ্ববর্তী কোষগুলোকে পরস্পর থেকে আলাদা করে রাখে। গ) সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু (ঈুঃড়ঢ়ষধংসরপ ড়ৎমধহবষষবং): কোষের ভিতরে যে অর্ধস্বচ্ছ, থকথকে জেলির মতো বস্তু থাকে তাকে প্রোটোপ্লজম বলে। কোষঝিল্লি দ্বারা ঘেরা সমুদয় বস্তুই প্রোটোপ্লাজম। এ প্রোটোপ্লাজম থেকে নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রিকাটিকে সরিয়ে দিলে যে জেলিসদৃশ বস্তুটি থেকে যায় সেটিই সাইটোপ্লাজম। এই সাইটোপ্লাজমের মধ্যে অনেক ধরনের অঙ্গাণু থাকে। এদেরক প্রত্যেকের কাজ আলাদা। এবার এসব অঙ্গাণুর গঠন ও কাজ সম্পর্কে জানা যাক: ১. মাইটোকন্ড্রিয়া (গরঃড়পযড়হফৎরধ): শ্বসনে অংশগ্রহণকারী এ অঙ্গাণুটি বেনডা ১৮৯৮ সালে আবিষ্কার করেন। অবস্থান: কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া সকল উদ্ভিদকোষ ও প্রাণিকোষে এদের পাওয়া যায়। গঠন: এটি দ্বিস্তরবিশিষ্ট আবরণী বা ঝিল্লি দিয়ে ঘেরা। ব ভিতরের স্তরটি ভিতরের দিকে ভাঁজ হয়ে থাকে। এদের ক্রিস্টি বলে। ব ক্রিস্টির গায়ে বৃন্তযুক্ত গোলাকার বস্তু থাকে, একে অক্সিসোম বলে। ব অক্সিসোমে উৎসেচকগুলো সাজানো থাকে। ব মাইটোকন্ড্রিয়নের ভিতর থাকে ম্যাট্রিক্স। কাজ: মাইটোকন্ড্রিয়ার প্রধান কাজ জীবের শ্বসনকার্যে সাহায্য করা। শ্বসন ক্রিয়ার ধাপ ৪টি: গ্লাইকোলাইসিস, অ্যাসিটাইল কো-এ সৃষ্টি, ক্রেবস চক্র, ইলেকট্রন প্রবাহ তন্ত্র। দ্বিতীয় ধাপ অর্থাৎ অ্যাসিটাইল কো-সৃষ্টির গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়াগুলো এ অঙ্গাণুর মধ্যেই সম্পন্ন হয়। ক্রেবস চক্রে অংশগ্রহণকারী সব উৎসেচক এতে উপস্থিত থাকায় এ বিক্রিয়াগুলি মাইটোকন্ড্রিয়াতেই সম্পন্ন হয়। ক্রেবস চক্রে সর্বাধিক শক্তি উৎপাদিত হয়। এ জন্য মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র বা পাওয়ার হাউস বলা হয়। এ শক্তি জীব তার বিভিন্ন কাজে খরচ করে। ২. প্লাস্টিড (চষধংঃরফ) : অবস্থান: প্লাস্টিড উদ্ভিদ কোষের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গাণু। গঠন: প্লাস্টিডের গ্রানা অংশ সূর্যালোককে আবদ্ধ করে রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে। এই আবদ্ধ সৌরশক্তি স্ট্রোমা তে অবস্থিত উৎসেচক সমষ্টি, বায়ু থেকে গৃহীত কার্বন ডাই অক্সাইড ও কোষস্থ পানি থেকে সরল শর্করা উৎপন্ন করে। কাজ: প্লাস্টিডের প্রধান কাজ খাদ্য প্রস্থত করা, খাদ্য সঞ্চয় করা এবং উদ্ভিদদেহকে বর্ণময় ও আকর্ষণীয় করে পরাগায়নে সাহায্য করা। প্লাস্টিড তিন ধরণের যথা- ক) কোরোপ্লাস্ট (ঈযষড়ৎড়ঢ়ষধংঃ) খ) ক্রোমোপ্লাস্ট (ঈযৎড়সড়ঢ়ষধংঃ) গ) লিউকোপ্লাস্ট (খবঁপড়ঢ়ষধংঃ) ক) কোরোপ্লাস্ট (ঈযষড়ৎড়ঢ়ষধংঃ): সবুজ রঙের প্লাস্টিডকে কোরোপ্লাস্ট বলে। এই প্লাস্টিডে কোরোফিল থাকে তাই এদের সবুজ দেখায়। এছাড়া এতে ক্যারোটিনয়েড নামক রঞ্জকও থাকে। অবস্থান: পাতা, কচি কান্ড ও অন্যান্য সবুজ অংশে এদের পাওয়া যায়। খ) ক্রোমোপ্লাস্ট (ঈযৎড়সড়ঢ়ষধংঃ): অবস্থান: রঙিন ফুল, পাতা ও গাজরের মূলে এদের পাওয়া যায়। ক্রোমোপ্লাস্টগুলো রঙ্গিন প্লাস্টিড তবে সবুজ নয়। এসব প্লাস্টিড জ্যান্থফিল, ক্যারোটিন, ফাইকোএরিথ্রিন, ফাইকোসায়ানিন ইত্যাদি বর্ণের কণিকা ধারণ করেক তাই কোনোটিকে হলুদ, কোনোটিকে নীল আবার কোনোটিকে লাল দেখায়। এদের মিশ্রণজনিত কারণে ফুল, পাতা ও উদ্ভিদের অন্যান্য অংশ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। কাজ: ফুলকে আকর্ষণীয় করে পরাগায়নে সাহায্য করা এদের প্রধান কাজ। এরা বিভিন্ন প্রকার রঞ্জক পদার্থ সংশ্লেষণ ও জমা করে। গ) লিউকোপ্লাস্ট (খবঁপড়ঢ়ষধংঃ): যেসব প্লাস্টিড কোনো রঞ্জক পদার্থ ধারণ করে না তাদের লিউকোপ্লাস্ট বলে। আলোর সংস্পর্শে এলে লিউকোপ্লাস্ট, ক্রোমোপ্লাস্ট বা কোরোপ্লাস্টে রূপান্তরিত হতে পারে। অবস্থান: যেসব কোষে সূর্যের আলো পৌঁছায় না সেখানে এদের পাওয়া যায়, যেমন- মূল, ভ্রƒণ, জননকোষ ইত্যাদি। কাজ: এদের প্রধান কাজ খাদ্য সঞ্চয় করা ৩. সেন্ট্রোসোম (ঈবহঃৎড়ংড়সব): অবস্থান: এটি প্রাণিকোষের বৈশিষ্ট্য। নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদ কোষে কদাচিৎ এদের দেখা যায়। গঠন: প্রাণিকোষের নিউক্লিয়াসের কাছে দুটি ফাঁপা নলাকার বা দন্ডাকার অঙ্গাণু দেখা যায়, তাদের সেন্ট্রিওল বলে। সেন্ট্রিওলের চারপাশে অবস্থিত গাঢ় তরলকে সেন্ট্রোস্ফিয়ার এবং সেন্ট্রোস্ফিয়ারসহ সেন্ট্রিওলকে সেন্ট্রোসোম বলে। কাজ: * সেন্ট্রোসোমে বিদ্যমান সেন্ট্রিওল কোষ বিভাজনের সময় অ্যাস্টার উৎপাদন করে। * এছাড়া স্পিন্ডল যন্ত্র সৃষ্টিতেও অবদান রয়েছে। * বিভিন্ন ধরনের ফাজেলা সৃষ্টিতে এরা অংশগ্রহণ করে।
×