ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফ্লিন সহকর্মীদের বিভ্রান্ত করে থাকতে পারেন ॥ হোয়াইট হাউস

রুশ কানেকশন ॥ ট্রাম্পকে রক্ষার চেষ্টা

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

রুশ কানেকশন ॥ ট্রাম্পকে রক্ষার চেষ্টা

হোয়াইট হাউস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাশিয়ার সঙ্গে তার শীর্ষ সহকারীর যোগাযোগকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট কেলেঙ্কারি থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা চালায়। প্রেসিডেন্ট ওই সহকারীকে বাদ দেয়ার কয়েক সপ্তাহ আগেই সমস্যা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন বলে খবর বেরোয়। খবর এএফপি ও বিবিসির। হোয়াইট হাউস স্বীকার করে যে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন তার ক্রেমলিন যোগাযোগ নিয়ে সহকর্মীদের বিভ্রান্ত করে থাকতে পারেন। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জোরালো হতে থাকার মধ্যে একথা স্বীকার করা হলো। তিন তারকা জেনারেল ও মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা বিষয়ক সাবেক প্রধান ফ্লিন দায়িত্ব নেয়ার আগে রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা কৌশল নিয়ে আলোচনা করার কথা প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করেন। এতে বিদেশী শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা সম্পর্কিত মার্কিন আইন লঙ্ঘিত হয়ে থাকতে পারে। এতে অন্তত এক নিয়ম গুরুতরভাবে ভঙ্গ হয়ে থাকতে পারে। এ নিয়মটি হলো যুক্তরাষ্ট্রে যে এক সময়ে এক সরকার ক্ষমতায় থাকে, তা আগামী প্রশাসনগুলো মেনে চলে। ফ্লিনকে সোমবার পদত্যাগ করতে বলা হয়। এর আগে হোয়াইট হাউস জানায় যে, কয়েক সপ্তাহের অভ্যন্তরীণ তদন্তে তার বিরুদ্ধে বিশ্বাসের ঘাটতির প্রমাণ পাওয়া গেলেও অন্যায় আচরণের কোন প্রমাণ মেলেনি। ট্রাম্পের ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে গঠিত প্রচার টিমের সদস্যরা ও অন্যান্য সহকারী ৮ নবেম্বরের নির্বাচনের পূর্ববর্তী বছরকাল রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করেছিলেন, এমনটি দেখাতে আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যেখানে আড়ি পেতেছিল এবং ফোন রেকর্ডও সংগ্রহ করেছিল। নিউইউয়র্ক টাইমস এ কথা জানায়। রাশিয়া নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে প্রমাণ পাওয়ার পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ট্রাম্পের প্রচার টিম হ্যাকিং ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য চেষ্টায় মস্কোর সঙ্গে সহযোগিতা করেছিল কিনা তা উদ্ঘাটনের চেষ্টা করে। তবে পত্রিকাটিতে বলা হয়, এর উল্লিখিত বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা এরূপ যোগসাজশের এখনও কোন প্রমাণ পাননি। ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা পল ম্যানাফোর্ট টাইমস পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে ওই অভিযোগকে ‘উদ্ভট’ বলে অভিহিত করেন। ফ্লিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে বিভ্রান্ত করার কারণেই তাকে অপসারণ করতে ট্রাম্প চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন বলে হোয়াইট হাউস থেকে বুঝানো হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার একথা প্রকাশ পায় যে, ট্রাম্প তার ডেপুটিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে অন্ধকারে রাখেন। পেন্স প্রকাশে ফ্লিনকে সমর্থন করেছিলেন। মুখপাত্র মার্ক লোটার বলেন, পেন্স কেবল বৃহস্পতিবারই মিডিয়ার খবরে এ ইস্যুতে অবহিত হন। তুমুল বিতর্কের মধ্যে হোয়াইট হাউস এ কথা অস্বীকার করে যে, ট্রাম্প ওবামার আমলে রাশিয়ার ওপর আরেপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে ফ্লিনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা মাইকেল ফ্লিনের পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করা হয়। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার বলেন, ‘আস্থা হারানোর পর প্রেসিডেন্ট ফ্লিনকে পদত্যাগ করার জন্য বলেন। পরে সোমবার তিনি পদত্যাগ করেন। বিষয়টি সম্পূর্ণই সততা ও আস্থার, বলে মুখপাত্র উল্লেখ করেন। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইকেল ফ্লিন ভোটের প্রচারের দিনগুলোতে জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে ট্রাম্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন। কখনও কখনও ট্রাম্পের প্রচার সমাবেশে সূচনা বক্তব্য নিয়েও আসতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এই প্রধানকে। যুক্তরাষ্ট্রে সরকারী দায়িত্বের বাইরের কারও কূটনৈতিক যোগাযোগ করার এখতিয়ার নেই। আর গত বছর শেষ দিকে ফ্লিন যখন রুশ দূতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তখনও নতুন প্রশাসনে তার নিয়োগ পাকা হয়নি। গত ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পরপরই বিচার দফতর ফ্লিনের রুশ যোগাযোগ নিয়ে হোয়াইট হাউসকে সতর্ক করে দিয়েছিল। বলা হয়েছিল, ফ্লিন রাশিয়ার ব্লাকমেইলের শিকার হতে পারেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কি কথা হয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের হাতে রয়েছে বলেও এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
×