ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ

ইতিহাস বদলাতে চান স্টিভেন স্মিথ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ইতিহাস বদলাতে চান স্টিভেন স্মিথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘরের মাটিতে টানা ১৯ টেস্টে অপরাজিত ভারত, টানা ছয় সিরিজ জিতে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে বিরাট কোহলির দল। অন্যদিকে ২০০৪ সালের পর ভারতের মাটিতে কখনও সিরিজ, এমনকি টেস্ট ম্যাচ জেতেনি অস্ট্রেলিয়া। এবার ইতিহাস বদলাতে চান স্টিভেন স্মিথ। তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে কাজটা যে মোটেই সহজ হবে না, অসি-অধিনায়ক সেটিও স্বীকার করেছেন। তবে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো ভারত সফরে রোমাঞ্চিত দলটির সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। সর্বস্ব নিংড়ে দিয়ে চ্যালেঞ্জটাকে স্বপ্নময় করে তুলতে চান তিনি। ভারতে পা রেখে সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন স্মিথ, ‘অবশ্যই এটা অত্যন্ত কঠিন এক সফর। মাঠের চ্যালেঞ্জ নিতে আমি অধীর হয়ে আছি। আমাদের দলটা তারুণ্যনির্ভর। ইতিহাস বদলে ১২ বছর আগের সেই সেরা সময়টা ফিরিয়ে আনতে চাই। সবাই অধীর হয়ে আছে। আশা করছি আগামী ছয় সপ্তাহ বেশ রোমাঞ্চকর হবে।’ ২৩ ফেব্রুয়ারি শুরু চার টেস্টের সিরিজ। ভারত টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল, দ্বিতীয় স্থানে অস্ট্রেলিয়া। সেই অর্থে লড়াইটা সেয়ানে-সেয়ানে হওয়ার কথা। কিন্তু ভারতের মাটিতে কুলিন অসিদের অবস্থা অনেকটা ‘বাঘের মাসি বিড়ালের’ মতো। সেই ১৯৪৭ থেকে যেখানে ২৪ সিরিজের মাত্র ৪টিতে জয়, যার তিনটিই আবার ১৯৭০ সালের পূর্বে। পরবর্তী সময়ে মাত্র একটি সিরিজই জিততে পেরেছে তারা, সেটি ২০০৪ সালে। রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বে এক যুগেওর বেশি সময় আগে ৪ টেস্টের সিরিজ ২-১এ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর হার টানা তিন সিরিজে। সর্বশেষ ২০১২ সালে ৪-০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’। কেবল প্রতিকূল কন্ডিশনই নয়, পুনর্গঠিত নিজ দল নিয়েও ভারতে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে স্মিথকে। শ্রীলঙ্কা সফরে ভরাডুরিব পর গত নভেম্বরে নিজ মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজ হারের অসিরা। দলে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এরপর ঘরের মাটিতে স্মিথের নেতৃত্বেই নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। তরুণ ব্যাটসম্যান ম্যাথু রেনশ এবং পিটার হ্যান্ডসকম্বকে দলভুক্ত করার পর দল এখন অনেকটাই ভিন্ন রূপ পেয়েছে। ডেভিড ওয়ার্নার ও স্মিথ দুর্দান্ত ফর্মে। কিন্তু ভারত সফরটাই তাদের আসল পরীক্ষা। স্মিথের মতে অতীতের চেয়ে এবারের ভারত সফর হবে কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে। কেননা, নতুন খেলোয়াড় থাকায় দল এবার মানসিকভাবে ভিত থাকবে না। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক বলেন, ‘নতুন খেলোয়াড় থাকা একদিকে সহায়ক হবে। ওরা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলবে। তবে ছেলেদের অভিজ্ঞতা নেই, একদিক থেকে সেটাও কঠিন হবে। খেলার জন্য ভারত সম্পূর্ণ আলাদা স্থান। সেখানকার মতো উইকেটে অস্ট্রেলিয়ায় আমরা কখনই খেলি না। দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে এবং এখানকার কন্ডিশনে সাফল্য পেতে দ্রুতই একটা পন্থা বের করে নিতে হবে।’ ২০১৩ সালের শেষ সফরে ৪-০তে ‘হোয়াইটয়াশ’ প্রসঙ্গ টেস্টে তিনি আরও যোগ করেন, ‘ভারতের মাটিতে সিরিজটা খুবই কঠিন হতে যাচ্ছে। আমরা সেটা বুঝতে পারছি। প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে হলে আমাদের সত্যিকার অর্থেই ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। এটা হবে একটা গ্রেট চ্যালেঞ্জ এবং শিক্ষণীয়।’ অনভিজ্ঞতার বিষয়টি উল্লেখ করে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক বলেন, ‘আমাদের দলের স্বল্পসংখ্যক সদস্য আগে ভারত সফর করেছে এবং আমরা জানি তাদের মাঠে খেলাটা কঠিন। তারা (ভারত) খুবই ভাল একটি দল। অবশ্যই দলে কিছু নতুন মুখ যুক্ত হবে। সেখানে আমাদের খুব ভালমানের ক্রিকেট খেলতে হবে।’ আর প্রতিপক্ষ অধিনায়ক কোহলি জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য তারা পুরোপুরি তৈরি, ‘আমরা ভেবেছিলাম ইংল্যান্ডই এ মৌসুমে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। কিন্তু সেটি ৪-০তে জিতলাম। এবার ফোকাস অস্ট্রেলিয়ার ওপর। আমরা প্রত্যেকে মানসিকভাবে তৈরি।’ হায়দারবাদ টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় জয় পেলেও উন্নতির জায়গা দেখছেন কোহলি, ‘পঞ্চমদিনে এসেও দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিপক্ষ যেভাবে ব্যাটিং করেছে, এটা নিয়ে ভাবতে হবে। হয়ত আমাদের মধ্যে একটু গাছাড়া ভাব এসেছিল। ম্যাচটা অন্তত ৪৫ মিনিট আগে জেতা উচিত ছিল। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে এই জায়গাটায় উন্নতি করতে হবে।’
×