ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় বন্দুকযুদ্ধে নব্য জেএমবির ৪ জেলার প্রধান সমন্বয়ক নিহত

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বগুড়ায় বন্দুকযুদ্ধে  নব্য জেএমবির  ৪ জেলার প্রধান  সমন্বয়ক নিহত

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ কাহালু উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সোমবার রাতে মোঃ আবু মুসা ওরফে আবুজার ওরফে আবু তালহা ওরফে রবিন (৩২) নামে এক জঙ্গী নিহত হয়েছে। সে নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষ নেতা এবং নব্য জেএমবির পাবনা, কুষ্টিয়া, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলার প্রধান সমন্বয়ক। নাটোর ও কুষ্টিয়ার দুটি হত্যাকা-সহ বড় ধরনের নানা জঙ্গী তৎপরতার সঙ্গে সে সরাসরি জড়িত ছিল। হলি আর্টিজান হামলার ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া রাজিব গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা দায়িত্ব পালন করছিল বলে পুলিশ জানায়। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি পিস্তল ৩ রাউন্ড গুলি ও চাপাতি উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়,রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার পাতঞ্জা এলাকায় পুলিশের একটি টিম টহল দেয়ার সময় হঠাৎ কিছু দুর্বৃত্ত গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে কয়েক দুর্বৃত্ত পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। প্রথমে তার পরিচয় পাওয়া না গেলেও পরে খোঁজ নিয়ে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে জানায়, নিহত ব্যক্তি নব্য জেএমবির অন্যতম নেতা আবু মুসা। তার বাড়ি পাবনা সদর উপজেলায়। ২০১৬ সালের ২০ মে কুষ্টিয়ার মজুমপুর এলাকার হোমিও চিকিৎসক সানাউল্লাহ ও একই বছরের ৫ জুন নাটোরের বনগ্রাম বাজারে মুদি দোকানি সুনীল গোমেজকে কিলিং মিশনে সে অংশ নেয়। দুটি ঘটনাতেই চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়। পুলিশ জানায়, সিরাজগঞ্জ জেলায় জঙ্গী সংগ্রহ, আত্মাঘাতী হামলার প্রশিক্ষণ, জেহাদি বই বিতরণ, চাঁদা সংগ্রহসহ অন্যান্য জঙ্গী তৎপরতায় সে সরাসরি জড়িত ছিল। এছাড়া চারটি জেলায় এসব কাজে মূল সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করত। ইতোপূর্বে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গীদের জবানবন্দীতে এই তথ্য পাওয়া যায় বলে বগুড়ার পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান। দীর্ঘদিন ধরে এই নব্য জেএমবির শীর্ষ ক্যাডার পলাতক থাকায় পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট তাকে খুঁজছিল। মহেশখালীতে সন্ত্রাসী নিহত ॥ স্টাফ রিপোর্টার কক্সবাজার থেকে জানান, মহেশখালীতে পুলিশের সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় আবদুস সাত্তার নামে এক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন পুলিশের ১১ সদস্য। ১৪টি অস্ত্র ও ৫৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধারসহ তিন সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে মহেশখালীর হোয়ানক কেরুনতলী সংলগ্ন পাহাড়ে এক বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় বাহিনী প্রধান আব্দুস সাত্তার (৩৫)। তিনি মহেশখালী পূর্ব মাঝেরপাড়ার মোঃ নুরুচ্ছফার পুত্র। মহেশখালী থানা ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জনকণ্ঠকে জানান, মঙ্গলবার সকালে পুলিশের একটি দল টহল দিতে ঘটনাস্থলে গেলে একদল সন্ত্রাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা আশাপাশের পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আব্দুস সাত্তারকে আটক করে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগে মহেশখালী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি দেশীয় বন্দুক ও ১৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। অপরদিকে, মহেশখালী মাতারবাড়ি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ৩ সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ৮টি অস্ত্র ও ৪০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, মাতারবাড়ি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত প্রকল্প এলাকার পাশে একটি লবণ প্রজেক্ট দখলের জন্য সন্ত্রাসীরা অস্ত্র মজুদ করছে বলে খবর পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালায়। ওসময় সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। ২ ঘণ্টা ব্যাপী পুলিশ-সন্ত্রাসী বন্দুকযুদ্ধ চলার পর পিছু হঁটে সন্ত্রাসীরা। এসময় নাজেম উদ্দিন, মোঃ নাছির ও ওয়ায়েজ উদ্দিন নামে ৩ সন্ত্রাসীকে আটক করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ৮টি বন্দুক, ৪০ রাউন্ড গুলি, বন্দুক মেরামতের একটি বিশেষ যন্ত্র ও ২টি কিরিচ উদ্ধার করেছে অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ সদস্যরা।
×