ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এসএসসি প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত ৬ জন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

এসএসসি প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত ৬ জন গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার নানা সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। তদন্তে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি প্রমাণিত হলে গণিত পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেয়া হতে পারে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। রবিবার অনুষ্ঠিত হয় এসএসসির গণিত পরীক্ষা। পরীক্ষার আগেই হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। সেই প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পরীক্ষার হলে সরবরাহ করা প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়া যায়। স্বাভাবিকভাবেই গণিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এরসঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গণিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছয় জনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে রাজু আহমেদ, ফয়সালুর রহমান আকাশ, মোহাম্মদ জোহায়ের আয়াজ, মহিউদ্দিন ইমন, স্বাধীন আল মাহমুদ ও কাজী রাশেদুল ইসলাম রনি। তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, সিপিইউ ও মোবাইল ফোনের সিমকার্ড জব্দ করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল বাতেন জানান, গ্রেফতারকৃতরা প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের সদস্য। তারা ফেসবুক পেজ খুলে একটা ক্লায়েন্ট গ্রুপ তৈরি করে। আর এর মাধ্যমেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ছড়াতো। বিভিন্ন পরীক্ষার আগের দিন তারা বিভিন্ন অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ইন্টারনেটে নির্দিষ্ট গ্রাহকদের কাছে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে দিত। আটটি ধাপে বিষয়টির তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যেই ছয়টি ধাপের তদন্ত শেষ হয়েছে। বাকি দুটি ধাপের তদন্ত শেষ হলেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্তরালের ব্যক্তিদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে। গ্রেফতারকৃতরা আগে কখনও এসব কাজে জড়িত ছিল না। তারা নতুন করে এ কাজে জড়িত হয়েছে। সূত্র বলছে, পরীক্ষার্থী সেজে যোগাযোগ করে মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে গণিত পরীক্ষার আগের রাতেই প্রশ্নপত্র পাওয়া গিয়েছিল। শনিবার রাতে পাওয়া সৃজনশীল প্রশ্নপত্র এবং সকালে পাওয়া এমসিকিউ প্রশ্ন মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার জানান, গণিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ট্রেজারি থেকে ফাঁস হয়ে থাকতে পারে বলে তিনি সন্দেহ পোষণ করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, যতদূর জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে বোর্ডের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এ বছরের গণিত পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে অনেক লেখালেখি ও আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্তে এর জন্য কারা দায়ী তা বেরিয়ে আসবে। তবে যে বোর্ডের যে পদ্ধতি রয়েছে তাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সুযোগ নেই। গণিত পরীক্ষা প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবরের পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, যদি পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে থাকে এবং এজন্য কেউ লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে এবং বিষয়টি প্রমাণিত হলে গণিত পরীক্ষা বাতিলের বিষয়টি ভেবে দেখা হবে। পরীক্ষার আগের রাতে ফাঁস হওয়া গণিতের প্রশ্নের সঙ্গে মূল প্রশ্ন মেলেনি। তবে পরীক্ষা শুরুর ৪০ মিনিট আগে প্রশ্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে চলে যায়। এজন্য শিক্ষকরা দায়ী।
×