ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

কবিতা আর স্মৃতিকথায় রফিক আজাদের জন্মদিন পালন

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

কবিতা আর স্মৃতিকথায় রফিক আজাদের জন্মদিন পালন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবি রফিক আজাদ লিখেছেন, ‘আমাকে খুঁজো না বৃথা’। মানুষের কবি, যুগের কবি, দ্রোহ ও প্রেমের কবি চিরকালের জন্য চলে গিয়েও মিশে আছেন এ দেশের মানুষের মাঝে, তাঁর কবিতার ধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে। তাই ভালবাসার নৈবেদ্য নিয়ে, কবিতা আর স্মৃতিকথায় মরণোত্তর প্রথমবারের মতো কবি রফিক আজাদের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন হয় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে সোমবার বিকেলে। কবির ৭৫তম এ জন্মবার্ষিকীর আয়োজন করে রফিক আজাদ স্মৃতি পর্ষদ। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, কবি আবু হাসান সাহারিয়ার, কবিপত্মী দিলারা হাফিজ, কবিপুত্র অভিন্ন আজাদ, কবি আনোয়ারা সৈয়দ হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পর্ষদের সভাপতি কবি রবিউল হুসাইন। শুরুতে কবি রফিক আজাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে ‘কি গাব আমি কি শোনাবো আজি আনন্দ ধামে’ রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী মহিউজ্জামান ময়না। এরপর শিল্পী সুতপা চৌধুরীর কণ্ঠে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো’। জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি ড. মোহাম্মদ সামাদের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আলোচনা পর্ব। তিনি বলেন, আজ কবি রফিক আজাদের মরণোত্তর প্রথম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন। এ জন্মদিন যেমন একদিকে আনন্দ অন্যদিকে বেদনার। তার কবিতায় উদ্ভাসিত প্রকৃতি ও দেশপ্রেমের কথা। কবি আবু হাসান শাহরিয়ার বলেন, আজ সমস্ত শহর বাসন্তী রঙে সেজেছে। এ দিনে আমরা উদ্যাপন করছি মরণোত্তর রফিক আজাদের জন্মদিন। খুবই আনন্দ লাগছে যেমনটা লাগত রফিক আজাদের। তিনি নেই আছে তার সৃষ্টি। শিল্পের জন্য তিনি অত্যন্ত নিবেদিত ছিলেন। সাধারণ মানুষরে সঙ্গে অতি সহজেই তিনি মিশে যেতে পারতেন। আমি মনে করি, তাকে নিয়ে বৃত্তি ও গবেষণার কাজ হওয়া উচিত। কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে কবি রফিক আজাদের সঙ্গে আমার পরিচয়। বাংলা কবিতায় তিনি বেদনা ও আনন্দের রসাচ্ছাদন মিশিয়েছেন। অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, কবি হিসেবে রফিক আজাদ অতুলনীয়। বাংলা কবিতায় নতুন ও স্বকীয় ধারার প্রবর্তন করেছেন তিনি। তিনি বলেন, পারিবারিকভাবে যদি অনুমতি দেয়া হয় তাহলে রফিক আজাদের রচনাসমগ্র বাংলা একাডেমি থেকে আমরা প্রকাশ করতে পারব। তিনি আরও বলেন, অতি সম্প্রতি নতুন তরুণ কবিদের যে কবিতা তৈরি হচ্ছে তার সবগুলো আমাদের সে ধরনের সাড়া দিতে পারছে না। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার শিক্ষকতা জীবনে দেশের প্রতিথযশা অনেক গুণী কবিই আমার ছাত্র। তার মধ্যে রফিক আজাদ একজন। আমি এ জন্য নিজেকে গর্বিত মনে করি। রফিকের উপস্থিতি না থাকলেও যেন মনে হয় সে আমাদের সঙ্গে রয়েছে। শুধু কলম দিয়ে নয়, অস্ত্র হাতেও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে সে। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার কোন দাবি ছিল না। তার ভেতরের সহজ-সরলতার প্রকাশ পেয়েছি সব সময়। শুধু একজন মহৎ কবিই ছিল না, একজন সৎ মানুষও ছিলেন। দেশকে ভালবাসত, দেশের মানুষকে ভালবাসত, সবচেয়ে বেশি ভালবাসত কবিতাকে। বাংলা সাহিত্যে রফিক আজাদের নাম চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আলোচনার পর দেশের প্রতিথযশা আবৃত্তি শিল্পীদের পরিবেশনায় ছিল কবিতা আবৃত্তি। ‘আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ’ শীর্ষক কর্মশালা শুরু ॥ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে সোমবার থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী ‘আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ’ শীর্ষখ প্রশিক্ষণ কর্মশালার সূচনা হয়। এদিন বিকেলে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত অ্যান সিয়ং-ডো এবং কোরিয়ার উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা কোবাইকা বাংলাদেশ অফিসের কান্ট্রি ডিরেক্টর জো হিউন-গুয়ে। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় জাদুঘরের সচিব মোঃ শওকত নবী। সভাপতিত্ব করেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ব বেতার দিবস পলিত ॥ বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব বেতার দিবস পালিত হয় সোমবার। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘তুমিই বেতার’। দিবসটি উপলক্ষে আগারগাঁও থেকে এক র‌্যালির আয়োজন করা হয়। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু র‌্যালির নেতৃত্ব দেন। দুপুরে একই স্থানে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসানুল হক ইনু জঙ্গিবাদ দমনে বেতারে কার্যকর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে ঘটে যাওয়া জঙ্গীবাদ একটি সাময়িক উৎপাত ছাড়া আর কিছুই নয়। ‘অস্তরবির ছবির সাথে’ এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন ॥ অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘অস্তরবির ছবির সাথে’ শিরোনামের রবীন্দ্রসঙ্গীতের অডিও এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন হয় সোমবার সন্ধ্যায়। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে প্রত্যয়, প্রতিপালক, মহীরুহ ও ইউনিভার্সেল মিউজিক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের অর্থ মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যান এ এফ এম ইয়াহিয়া চৌধুরী ও সঙ্গীতশিল্পী তপন মাহমুদ। এ্যালবামে কণ্ঠ দিয়েছেন শিল্পী দীপা চৌধুরী, তারিক মাহমুদ ও ড, শ্যামল চৌধুরী। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে পরিবেশিত হয় আবৃত্তি ও গান।
×