ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘জনগণ ভোট দেবে না বুঝতে পেরে বিএনপি উন্মাদের প্রলাপ বকছে’

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

‘জনগণ ভোট দেবে না বুঝতে পেরে বিএনপি উন্মাদের প্রলাপ বকছে’

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী-এমপিরা বলেছেন, বিএনপি এখন দেউলিয়া ও জন্ডিসে আক্রান্ত। বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে পূর্ণ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই বিএনপি-জামায়াত নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আগামী নির্বাচনে গণহত্যাকারী ও রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়া বিএনপিকে জনগণ ভোট দেবে না, এটা বুঝতে পেরে এখন তারা উন্মাদের প্রলাপ বকছে। আন্দোলনের নামে ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যার দায়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিচার করতে হবে। আর পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী সুদখোরদের বিচার না করা হলে এদের ষড়যন্ত্র থামবে না। এদের অবশ্যই বিচারের আওতায় এনে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে হবে। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সরকারী দলের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, আবদুল মতিন খান, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, শফিকুল ইসলাম শিমুল, নুরুল ইসলাম সুজন, আবুল কালাম মোঃ আহসানুল হক চৌধুরী, কাজী নাবিল আহমেদ, রেজাউল হক চৌধুরী, বেগম নাসিমা ফেরদৌসী, গোলাম মোস্তফা, জাতীয় পার্টির বেগম রওশন আরা মান্নান প্রমুখ। সরকারী দলের এমপি আবুল কালাম মোঃ আহসানুল হক চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে কিছু অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করলে স্পীকার তাঁকে সতর্ক করে দেন। সোমবারের সংসদ অধিবেশনেও লেগেছিল ঋতুরাজ বসন্তের ছোঁয়া। অধিবেশনের সভাপতিত্বকারী স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বাসন্তি শাড়ি পরে অধিবেশন পরিচালনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জামদানি শাড়ির পাড়ও ছিল বাসন্তী। নারী সংসদ সদস্যদের মধ্যে বাসন্তী বসনের আধিক্য থাকলেও পুরুষদের মধ্যে তার প্রভাব কম দেখা গেছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানসহ দুই-একজন বাদে উপস্থিত প্রায় সব নারী এমপির পরনে দেখা গেছে বাসন্তী শাড়ি। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীও হালকা বাসন্তী শাড়ি পরে অধিবেশনে যোগ দেন। অধিবেশন কক্ষে হলুদ পাঞ্জাবিতে দেখা গেছে সাবেক বিমানমন্ত্রী ফারুক খান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, হুইপ ইকবালুর রহীম, এমপি পংকজ দেবনাথ, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, জাহিদ আহসান রাসেল, ফাহমী গোলন্দাজসহ বেশ কয়েকজন এমপিকে। সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বাদ পড়েননি বাসন্তী রঙে সাজতে। আলোচনাকালেও মন্ত্রী-এমপিরা একে অপরকে বসন্তের শুভেচ্ছা জানাতেও ভোলেননি। আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে পূর্ণ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন বিএনপি-জামায়াত নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এরা গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে চায়। ধর্মের কথা বলে মানুষকে নির্বিচারে পুড়িয়ে হত্যা করাই তাদের কাজ। আগামী নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে না বুঝতে পেরে উন্মাদের মতো পাগলের প্রলাপ বকছে। মানুষের জন্ডিস হলে চোখে হলুদ দেখে। তেমনি বিএনপি এখন জন্ডিসে আক্রান্ত। দেশের কোন উন্নয়ন তাদের চোখে পড়ে না। খালেদা জিয়ার হাতে যখন রাষ্ট্র ছিল তখন দুর্নীতিতে বাংলাদেশ এক নম্বর ছিল। তাদের নির্বিচারে মানুষ হত্যার বিভীষিকা জনগণ কখনও ভুলবে না। খালেদা জিয়া যেভাবে গণহত্যা চালিয়েছে, সেজন্য তাঁর বিচার অবশ্যই হতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপির নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা জনগণ ভুলে যায়নি। তাই দেশের জনগণ শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। বিএনপির গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে জনগণ প্রতিটি স্থানে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণরায় দিচ্ছে। বিশ্বের রাজনৈতিক অঙ্গনে শেখ হাসিনা নিজস্ব অবস্থান গড়ে নিয়েছেন। সারাবিশ্ব বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। যারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে না, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেয়- তারা কখনোই নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা দাবি করতে পারে না। জিয়াউর রহমান জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার দুই গুণ মিথ্যাচার ও মানুষ খুন। আর পদ্মা সেতু নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসে শেষ হয়ে গেছে শত শত নিরীহ মানুষ, শিশু, নারী, এমনকি অবলা গরুও। ড. ইউনূস দুইশ’ টাকার ফতুয়া পড়ে ষড়যন্ত্র করেন। কোরান পুড়িয়ে যারা ইসলাম রক্ষা করতে চায়, তারা ইসলামবিরোধী অপশক্তি। এদের জনগণ আর কোনদিন মেনে নেবে না। জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বলেন, একটি জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের মধ্যেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়। এতে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকে এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়। আজ মাদক যুব সমাজকে গ্রাস করছে। গ্রামে-গঞ্জসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে মারণনেশা ইয়াবা ছড়িয়ে পড়েছে। সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে সরকারকে এ ব্যাপারে আরও কঠোর হতে হবে। তিনি কোটা ব্যবস্থা বাতিল করার দাবি জানিয়ে বলেন, মেধাবীদের চাকরিতে নিশ্চিত করতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছাড়া বাকি সব কোটা বাতিল করা উচিত। সরকারী দলের আবুল কালাম মোঃ আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী সুদখোরদের চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে। আর দীর্ঘদিন যারা নৃশংসভাবে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, দেশের সম্পদ ধ্বংস করেছে তাদেরও বিচার করতে হবে। রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া খালেদা জিয়া এখন উন্মাদের প্রলাপ বকছেন। আবদুল মতিন খান বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগটি ছিল মিথ্যা ও বানোয়াট তা প্রমাণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা, সততা ও প্রজ্ঞার কাছে ষড়যন্ত্রকারীরা হার মানতে বাধ্য হয়েছে। পদ্মা সেতুতেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নেই নির্মাণ করছেন তিনি। মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বিএনপি-জামায়াত জোটের সমালোচনা করে বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস করে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। বিএনপি যদি সত্যিই রাজনীতি করতে চায়, তবে তাদের বলব ষড়যন্ত্র বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনীতির মাঠে নামুন। রাজনৈতিকভাবেই আমরা তাদের মোকাবেলা করব। শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, জঙ্গীনেত্রী খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে জঙ্গীবাদী তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করতে ষড়যন্ত্র করছে। তারেক রহমান আর তার হাওয়া ভবন আজ কোথায়? দুর্নীতিবাজদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে সারাবিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের যারা বিরোধিতা করছেন, তারা রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বপনা করছে।
×