ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতু প্রকল্প

আরও একবার প্রমাণ হলো দুদকের তদন্তই সঠিক ছিল ॥ সচিব

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আরও একবার প্রমাণ হলো দুদকের তদন্তই সঠিক ছিল ॥ সচিব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পদ্মা সেতু প্রকল্পে ‘দুর্নীতি ষড়যন্ত্র’ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা তদন্তই সঠিক ছিল বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির সচিব আবু মোঃ মোস্তফা কামাল। একই সঙ্গে পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোন দুর্নীতি ছিল না বলেও মতামত দেন তিনি। গত শুক্রবার পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ কানাডার অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্ট খারিজ করে দিয়ে রায় প্রকাশ করায় তিনি সাংবাদিকদের কাছে সোমবার এ মন্তব্য করেন। দুদক সচিব বলেন, আদালতের এ রায়ের ফলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হলো। এর ফলে আরও একবার প্রমাণ হলো, পদ্মা সেতুতে ‘দুর্নীতি ষড়যন্ত্র’ দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তই নিয়ে সঠিক ছিল। দুদক সচিব বলেন, ওই সময় মামলাটি করা হয়। তখন তদন্ত শেষে দুদক সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না পাওয়ায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের অব্যাহতি দেয়ার অনুরোধ করে। এছাড়া তখন অনেকেই আমাদের কার্যক্রমকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, আমরা বরাবরই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম কমিশন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে কোন ভুল করেনি। সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, সমালোচনাকারীদের প্রতি কমিশনের অনুরোধ শুধু জনশ্রুতির বশবর্তী হয়ে সমালোচনা করবেন না। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ও সাক্ষ্য প্রমাণাদির ভিত্তিতে সমালোচনা করবেন। এছাড়া সমালোচনাকারীদের দুদকের প্রতি আস্থা রাখতে হবে এবং কমিশন তাদের প্রত্যাশা অবশ্যই পূরণ করবে। উল্লেখ্য, তৎকালীন দুদক চেয়ারম্যান মোঃ বদিউজ্জামান ২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পদ্মা সেতু দুর্নীতি ষড়যন্ত্রের মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ পায়নি দুদক। এ কারণেসব আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বিশ্বব্যাংকের অভিযোগে নয়, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি ষড়যন্ত্রের অভিযোগের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের চাপে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররাফ হোসেন ভূঁইঞাকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। মামলায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে সন্দেহভাজন হিসেবে রাখা হয়। দীর্ঘ ২২ মাস তদন্ত শেষে দুদকের তদন্তকারীরা তদন্তে অভিযোগের প্রমাণাদি না পাওয়ায় মামলার ৭ আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। এছাড়া ২০১১ সালের এপ্রিলে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের একটি ঋণচুক্তি হয়। সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দরপত্রে অংশ নেয়া এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক ২০১২ সালের ২৯ জুন পদ্মা সেতুতে ঋণচুক্তি বাতিল করে। সরকারের অনুরোধে একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর এ প্রকল্পে পুনরায় সম্পৃক্ত হতে রাজি হলেও তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থায়ন করতে অসম্মতি জানায় সংস্থাটি। ফলে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শুরু করে বর্তমান সরকার।
×