ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কাপ্তাইয়ে ভেস্তে গেল বোরো আবাদ

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

কাপ্তাইয়ে ভেস্তে গেল বোরো আবাদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গামাটি, ৮ ফেব্রুয়ারি ॥ সময় মতো কাপ্তাই হ্রদের পানি না কমানোর ফলে হ্রদের বুকে ভেসে ওঠা সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে এবার বোরো আবাদ ভেস্তে গেছে। কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ১০টি উপজেলা ২ লক্ষাধিক কৃষকের বোরো চাষের ওপর নির্ভর করে তাদের জীবিকা চলে। হ্রদের পানি হ্রাস না পাওয়ায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে জলেভাসা জমিতে চাষাবাদ করার জন্য জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে হ্রদের পানি কমানো হয়ে থাকে। এবার জলবিদ্যুত উৎপাদন ব্যাহত না হওয়ার জন্য কাপ্তাই হ্রদের পানি ধীরগতিতে কমানো হয়েছে। ফলে সময় মতো হ্রদের পানি না কমায় অধিকাংশ জলভাসা জমিতে কৃষকরা বোরো ধানের আবাদ করতে পারেনি। দেশের একমাত্র জলবিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে ষাটের দশকে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলে ৫৮ হাজার হেক্টর ফসলী জমি হ্রদর পানিতে তলিয়ে যায়। সেই থেকে শুষ্ক মৌসুমে হ্রদের পানি কমে গেলে সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর ফসলী জমি ভেসে উঠে। সেখানে বোরো আবাদ করে হ্রদবেষ্টিত ১০টি উপজেলার দরিদ্র কৃষক। চলতি মৌসুমে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, জুরাছড়ি, নানিয়াচর, সদর, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি এবং খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা ও মহালছড়ি উপজেলায় ফসলী জমি থেকে কাপ্তাই হ্রদের পানি না কমাতে হ্রদের গর্ভে ভেসে ওঠা ছোট-বড় চর ও বিভিন্ন স্থানে জেগে ওঠা ক্ষেতের কৃষকরা বোরো আবাদ শুরু করতে পারেনি। এবার ১০টি উপজেলার মধ্যে বাঘাইছড়ি, দীঘিনালা ও মহালছড়ি উপজেলায় কিছু জমি বোরো আবাদ হয়েছে। অন্য উপজেলাগুলোতে বোরো জমিতে বেশি পানি থাকায় কৃষক এবার বোরো আবাদ করতে পারেনি। হ্রদে ভাসা এই সব জমির পানি না শুকানোর ফলে সময় মতো বীজতলা তৈরি হয়নি। ফলে বোরো আবাদ ব্যাহত হয়েছে। ।হ্রদে ভাসা ১৩হাজার ৫শত ৫২ হেক্টর জমিতে কৃষকরা শুধু ধানের আবাদ নয় একই সঙ্গে তরমুজ সহ নানা মৌসুমী ফসলের আবাদও করে থাকে এবার পানি না শুকানোর ফলে তাও ব্যাহত হয়েছে। হ্রদ বেষ্ঠিত ১০ উপজেলার বিপুল সংখ্যক কৃষকের একমাত্র সম্বল হলো এই জলে ভাসা জমির ফসল। কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়ার জন্য সম্প্রতি নানিয়াচর উপজেলাবাসী মিছিল ও করেছে। বাঘাইছড়ির কৃষক করিম বলেন আমাদের সমস্ত জমিই সারা বছর এ কাপ্তাই হ্রদের পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এই অবস্থায় আমাদেরকে সল্পসময়ের মধ্যে কৃষি কাজ সম্পন্ন করতে হয় দেরী হলে বর্ষার পানিতে ফসল তলিয়ে যায়। যার কারণে আবাদ করতে কৃষকদের প্রচুর খরচ পড়ে।এবার একদিকে হ্রদের পানি যেমন শুকায়নি, তেমনি আগাম বর্ষা শুরু হলে চাষা বাদের বিশাল কর্মযজ্ঞ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
×