ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনায় অধিকাংশ খেয়াঘাট বেহাল ॥ যাত্রীদের দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

খুলনায় অধিকাংশ খেয়াঘাট বেহাল ॥ যাত্রীদের দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনার অধিকাংশ খেয়াঘাটের বেহাল অবস্থা। পলি জমে বিভিন্ন নদী ভরাট হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে ঘাটগুলোর দুরাবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে নদ-নদীতে যখন ভাটা থাকে তখন হাঁটু কাদা ভেঙ্গে কিংবা বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে কিনারে উঠতে হয়। এসব খেয়াঘাট থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হলেও ঘাট সংস্কারের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কারও কোন মাথা ব্যথা নেই। তাছাড়া ঘাটের ইজারাদারদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে খুলনার অনেকগুলো খেয়াঘাট ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে। বর্তমানে মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক খেয়াঘাট রয়েছে। স্থানভেদে এ ঘাটগুলো সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ইজারা প্রদানকৃত। শহরসংলগ্ন ঘাটগুলোর অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো হলেও গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ খেয়াঘাটের অবস্থা নাজুক। ঘাট ভাল না থাকায় পানি কাদা ঠেলে নৌকা বা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উঠে যাত্রীদের নদী পারাপার হতে হয়। নামেমাত্র এই খেয়াঘাটগুলোতে কোন ফ্রি খেয়া নেই। আবার টোল আদায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘাটে ইজাদারের লোকজন বেপরোয়া আচরণ করে থাকে। নানা অজুহাতে তারা অতিরিক্ত টোল আদায় করে। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সঙ্গে বচসা ও দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলায় অনেক ঘাট বিলুপ্ত হওয়ার পরেও সেখানকার বিভিন্ন নদ-নদীতে ২০টির অধিক খেয়াঘাট চালু রয়েছে। পাইকগাছা পৌর বাজারসংলগ্ন খেয়াঘাটের অবস্থা খুবই করুন। ভাটার সময় এখানে নদীতে পানি থাকে না বললেই চলে। এই উপজেলার বেতবুনিয়া-গড়ইখালী, বোয়ালিয়া-রাড়ুলী, লতা-জিরবুনিয়া-মুনকিয়া, সোনাখালী-খড়িয়া, লতা-দেলুটী, সোলাদানা, আমুরকাটা, খড়িয়া, চৌমুহনী-খড়িয়া-পাতড়াবুনিয়া, আগড়ঘাটা-শাহাজাতপুর, সাহাপাড়া-বড়দল, চাঁদখালী-বড়দল, বাইনতলা-খড়িয়া, আলমতলা-লস্কর, বাতিখালী-কড়ুলিয়া, ওয়াপদা ঘাট-কড়ুলিয়াসহ অন্যান্য খেয়াঘাটের অবস্থাও খুব নাজুক। এসব খেয়াঘাট দিয়ে ভারী কোন মালামাল তো দূরের কথা একা নদী পারাপারের নৌকায় ওঠা বা নৌকা থেকে কূলে ওঠা দায় হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ভাটার সময় ২০-২৫ হাত, কোন কোন ঘাটে ১০০ থেকে ১৫০ হাত পর্যন্ত কাদা মাড়িয়ে কিনারে উঠতে হয়। প্রায় সকল ঘাটেই পারাপারকারী মানুষের নিকট থেকে ইচ্ছেমতো টোল নেয়া হয়। হাটবার ছাড়াও এ সকল খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ পারাপার হয়ে থাকে। খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর বাজার খেয়াঘাটে ভাটার সময় কাদা পেরিয়ে নৌকা বা ট্রলারে উঠে নদী পার হতে হয়। এর অপর পাড়ে দিঘলিয়ার অংশের ঘাট অনেকটা খাড়াভাবে তৈরি করায় জোয়ারের সময়ও ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ এই ঘাট থেকে দিঘলিয়া উপজেলার অধিকাংশ মানুষ পারপার হয়ে থাকে। এ ছাড়া দিঘলিয়া উপজেলার দেয়ারা, বেলেঘাটা, মোকামপুর, বটিয়াঘাটা উপজেলার বটিয়াঘাটা বাজার ঘাট, ফুলতলা মঠ ঘাট, হালিয়া-গোপালখালী খেয়াঘাটসহ দাকোপ, কয়রা, রূপসাসহ অন্যান্য উপজেলার বেশির ভাগ খেয়াঘাট দিয়ে নদী পারাপারের সময় জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
×