ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভাষাসৈনিক গাজীউল হক ॥ জন্মদিন

প্রকাশিত: ০৪:১১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ভাষাসৈনিক গাজীউল হক ॥ জন্মদিন

আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি ভাষাসৈনিক আ. ন. ম গাজীউল হকের ৮৮তম জন্মদিন। গাজীউল হক ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক আমতলার জনসভায় সভাপতিত্বের দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গের নির্দেশ দেন। শুধু তাই নয়, ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত গণআদালতে প্রধান বিচারকের আসনে ’৭১-এর ঘাতক-দালালের ফাঁসির রায় ঘোষণা দেন তিনি। আ. ন. ম গাজীউল হকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলা ১৩৩৫ সালের ১ ফাগুন ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানার নিচিন্তা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। বাড়ির পাশের মক্তব থেকে তার শিক্ষাজীবন শুরু। ১৯৩৫ সালে হাজী মোহাম্মদ মুহসীন বৃত্তি নিয়ে নিম্ন প্রাইমারি পাস করে কাশীপুর উচ্চ প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হয়ে ১৯৩৭ সালে পুনরায় চার টাকার বৃত্তি নিয়ে উচ্চ প্রাইমারি পাস করে ছাগলনাইয়া হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন। ছাত্রজীবনেই প্রতিবাদী কিশোর হিসেবে রাজনীতির প্রতি ঝুঁকে পড়েছিলেন। দেশবরেণ্য ধর্মীয় গুরু সুপ-িত পিতা মাওলানা সিরাজুল হক এবং তার পরিবার কিশোরের কর্মকা- দেখে দিশাহারা হয়ে যান। কি করবেন ভেবে না পেয়ে স্কুল শিক্ষকের পরামর্শে নিরাপত্তার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বগুড়ায়। ভর্তি করা হয় বগুড়া জিলা স্কুলে। ১৯৪৬ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রথম বিভাগে আইএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ছাত্র রাজনীতিতে ভীষণভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫৬ সালে অন্ধকার কারাগারের লৌহ কপাটের ভেতরে বন্দী থেকে জানতে পারেন পিতার মৃত্যুর খবর এবং সে কারণেই তাকে জেল থেকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়। অনেক দুঃখ, অনেক কষ্টের মধ্যেও তিনি দমে থাকেননি। আইন পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলেন। পঞ্চাশের দশকে শুরু করলেন আইন ব্যবসা। ১৯৭২ সাল থেকে হাইকোর্টে এবং পরে সুপ্রীমকোর্টে সাফল্যের সঙ্গে আইন ব্যবসা করেন। ১৯৭১ সালে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। সময়ের তাগিদে, জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে তিনি কখনও হয়েছিলেন সাংবাদিক, পত্রিকার হকার, প্রাবন্ধিক, কথাশিল্পী, কবি ও গীতিকার। বেশ ক’টি গ্রন্থের রচয়িতা হলেও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের ওপর প্রথম লেখা গ্রন্থ ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ব্যাপক সাড়া জাগায়। বাংলা একাডেমি ও দেশের বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা ছাড়াও ইংরেজী ভাষায় বিদেশেও তার একাধিক গ্রন্থ এবং নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা প্রচলনের জন্য তিনি যে আপোসহীন সংগ্রাম করে আসছিলেন তারই প্রমাণ রয়েছে তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘উচ্চতর আদালতে বাংলা প্রচলন’। আ. ন. ম গাজীউল হক ১৯৫৭ সালের ২৮ মার্চ বগুড়ার খ্যাতনামা আইনবিদ জালাল উদ্দিন আহম্মদের তৃতীয় কন্যা জাহানারা বেগম এলিনাকে বিয়ে করেন। Ñসুজাতা হক
×