ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শপথ নিলেন ৮ বিচারপতি

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

শপথ নিলেন  ৮ বিচারপতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী নিয়োগ পাওয়া ৮ জন বিচারপতি শপথ নিয়েছেন। অন্যদিকে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে দুই বছর হাইকোর্টে দায়িত্ব পালনের পর স্থায়ী হিসেবে নিয়োগ না পাওয়া বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীকে আপীল বিভাগে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তার রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছে হাইকোর্ট। রবিবার সকালে হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী নিয়োগ পাওয়া ৮ জন বিচারপতি শপথ নিয়েছেন। সুপ্রীমকোর্টের জাজেস লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পর্যায়ক্রমে ৮ জন বিচারপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করান। রেজিস্ট্রার সৈয়দ আমিনুল ইসলামের পরিচালনায় শপথ অনুষ্ঠানে সুপ্রীমকোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন। নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি এস. এম. মজিবুর রহমান, বিচারপতি আমির হোসেন, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, বিচারপতি রাজিক আল জলিল, বিচারপতি ভীষ্ম দেব চক্রবর্তী, বিচারপতি মোঃ ইকবাল কবির, বিচারপতি মোঃ সেলিম এবং বিচারপতি মোঃ সোহরাওয়ারদী। সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এই ৮ জন অতিরিক্ত বিচারককে স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেন। মঙ্গলবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে তাদের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রবিবার শপথ গ্রহণের দিন থেকে এ নিয়োগ কার্যকর হবে। আপীল বিভাগে যাওয়ার পরামর্শ ॥ অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে দুই বছর হাইকোর্টে দায়িত্ব পালনের পর স্থায়ী হিসেবে নিয়োগ না পাওয়া বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীকে আপীল বিভাগে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তার রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, এর আগে বাদপড়া বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের আবেদন আপীল বিভাগে বিচারাধীন। তাই বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলীর আবেদনে হাইকোর্ট কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চ রবিবার এই আদেশ দেয়। ফরিদ আহমদ শিবলীসহ ১০ জনকে ২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দুই বছরের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়; পরদিন শপথ নেন তারা। ওই দুই বছর মেয়াদ শেষে রাষ্ট্রপতি গত ৭ ফেব্রুয়ারি আটজনকে হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ দেন। দশজনের মধ্যে বিচারপতি জ্যোতির্ময় নারায়ণ দেব চৌধুরী গত ডিসেম্বরে মারা যান। আর মোঃ ফরিদ আহমেদ শিবলী বাদ পড়েন। এরপর হাইকোর্টে এই রিট আবেদন করেন বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলী। নিয়োগ স্থায়ী না করার এই সিদ্ধান্ত ‘সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী’ দাবি করে এই রিট আবেদনে রুল চাওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্ত কেন বাতিল ও বেআইনী ঘোষণা করা হবে না, বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীকে স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না এবং তাকে স্থায়ী করার আগ পর্যন্ত হাইকোর্টে নতুন নিয়োগ বন্ধের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে ওই রুল চাওয়া হয় আদালতের কাছে। রিটে বিবাদী করা হয় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, আইন সচিব ও সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। দুপুরের পর বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়। বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন মনজিল মোরসেদ। আদেশের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। এতে আমি মনে করি আমাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে।’ আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, এর আগে অতিরিক্ত ১০ বিচারকের বিষয়ে আপীল বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়, বিচারক নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির সুপারিশ প্রাধান্য পাবে। আর যদি নিয়োগ পাওয়ার অযোগ্য হন, সেক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত প্রাধান্য পাবে।
×