ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কানাডার আদালত পদ্মা সেতুর কথিত দুর্নীতি মামলাকে গালগল্প হিসেবে অভিহিত করেছে ;###;বাংলাদেশের সুশীল সমাজের যে অংশ সরকারের বদনাম করেছিল তাদেরকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন জয় হিলারির হুমকিসহ বার্তা বাংলাদেশ সরকারকে পৌঁছে দিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা বহু

ক্ষমা চাওয়া উচিত

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ক্ষমা চাওয়া উচিত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব্যাংক অভিযোগ তোলার পর বাংলাদেশে যারা দুর্নীতির কথা বলে গলা চড়িয়েছিল, তাদের এখন সরকারের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বলেছেন, এটা লজ্জাজনক যে, আমাদের সুশীল সমাজের একটা অংশ দ্রুত আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে ও বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে অবস্থান নেন। তারা বেশ কয়েকজন পরিশ্রমী, সম্মানিত যোগ্য মানুষের গায়ে কালিমা লেপন করেছে। যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তারা দেশপ্রেমিক নয়। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছেন, আমি যে ষড়যন্ত্রের শিকার তা আবার প্রমাণ হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বার্থান্বেষী একটি মহল ষড়যন্ত্র করেছিল। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রমাণের আগেই বিশ্বব্যাংক কেন পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করল তার জবাব সরকারকে চাইতে হবে। বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংক ঋণ বাতিল করেছিল তার প্রমাণ পায়নি কানাডার আদালত। শুক্রবার কানাডিয়ান পত্রিকা দ্য গ্লোব এ্যান্ড মেল জানায়, ফোনে আড়ি পেতে সংগ্রহ করা যে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রসিকিউশন মামলা সাজিয়েছিল তাকে গাল-গল্প ও গুজব বলে ছুড়ে ফেলেছেন বিচারক। আদালত পদ্মায় দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কোন প্রমাণ পায়নি। এরপরই সজীব ওয়াজেদ জয় সোস্যাল মিডিয়ায় নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এদিকে, দুর্নীতির এই মামলাকে অনুমানভিত্তিক বলে উল্লেখ করে দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। কানাডার মন্ট্রিলভিত্তিক প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়েছে। কানাডার টরন্টো স্টার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে আরও বলা হয়েছে-এই রায়ের ফলে এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী ভূঁইয়া মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন। কেভিন এসএনসি-লাভালিনের জ্বালানি ও অবকাঠামো বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। গত ২০১৩ সালে তিনি বাংলাদেশ প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী ছিলেন। তাঁরা তিনজনই বাংলাদেশে কাজ পেতে এদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রসঙ্গত, দুর্নীতির এই অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল হয়ে যায়। দুর্নীতির ওই ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন সেই সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। অভিযোগ ছিল সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির কোন তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দুদকের পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়। পরে নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ সরকার। বর্তমান দেশের বৃহত্তম এ সেতুর প্রায় ৩৯ শতাংশ কাজ শেষ করে আনা হয়েছে। মূল সেতুর উপর দিয়ে যাতে রেল চলাচল করতে পারে সেজন্য চীনের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি করা হয়েছে। চীনের পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারও রেলপথ নির্মাণে অর্থায়ন করবে। আগামী বছরের শেষ নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফেসবুকে জয়ের প্রতিক্রিয়া ॥ প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় লিখেছেন, এই মিথ্যা তৈরি করেছে বিশ্ব ব্যাংক। পুরো উপাখ্যান চলাকালে আমি তাদের এই সব প্রমাণ দেখেছি। এতে সুনির্দিষ্ট-বিস্তারিত কিছু নেই, যা সুস্পষ্টভাবেই বানানো। রয়েছে কেবল একটি বেনামী সূত্র, যা এমনকি কানাডার আদালতের কাছেও প্রকাশ করা হয়নি। সুতরাং তারা অভিযোগ দায়ের করেছে, কিন্তু দাবির পক্ষে প্রমাণ দিতে অস্বীকার করেছে। তিনি আরও লিখেছেন, আমার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সুনামহানি করতে বিশ্ব ব্যাংক এই ষড়যন্ত্র করেছে। এদিকে, শেখ হাসিনা বরাবরই বলে আসছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ তোলা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এতে বাংলাদেশীরাও জড়িত ছিলেন। তিনি সম্প্রতি সংসদে বলেন, হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন আটকেছিলেন নোবেলজয়ী বাংলাদেশী মুহাম্মদ ইউনূস এবং এতে বাংলাদেশের এক সম্পাদকেরও ভূমিকা ছিল। বিশ্ব ব্যাংক বলার পর পদ্মা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে শোরগোল ওঠে বাংলাদেশেও, তখন সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন অনেকে। তাদের উদ্দেশে জয় লিখেছেন, এটা লজ্জাজনক যে, আমাদের সুশীল সমাজের একটা অংশ দ্রুত আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে ও বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে অবস্থান নেন। তারা বেশ কয়েকজন পরিশ্রমী, সম্মানিত যোগ্য মানুষের গায়ে কালিমা লেপন করেছে। যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তারা দেশপ্রেমিক নয়। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সরকার এবং সম্মান ক্ষুণœœ হওয়া ব্যক্তিদের কাছে ওই সমালোচকদের ক্ষমা প্রার্থনা এখন পাওনা বলে মন্তব্য করেছেন জয়। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের কাছেও তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। এদিকে, পদ্মা নদীর ওপর ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংক প্রথমে অর্থায়ন স্থগিত করে। এরপর ফিরে এলেও দুর্নীতির তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা। এ নিয়ে মনকষাকষির এক পর্যায়ে তাদের বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। মায়ের মতো জয়ও বলেন, ইউনূসের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সরকারকে শায়েস্তা করতে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করতে বিশ্ব ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জয় জানান, বাংলাদেশ সরকারকে হিলারির হুমকি সংবলিত বার্তা পৌঁছে দিতে তাঁর সঙ্গেও তখন কয়েকবার যোগাযোগ করেছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা। ইউনূস বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যেরে পরও ইউনূস সেন্টার থেকে তার প্রতিবাদ জানানো হয়। ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও কর ফাঁকির অভিযোগও আনেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র জয়। তিনি বলেন, আপনারা কি জানেন, ইউনূস, তার পরিবার, বন্ধুরা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে লাভজনক টেলিযোগাযোগ কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক। একটি বেসরকারী ট্রাস্টের মাধ্যমে তারা এটার মালিক হয়েছে, কেবল তারাই এর সুবিধাভোগী। গ্রামীণ ব্যাংকের একটি মাল্টি মিলিয়ন ডলারের লোন থেকে এই শেয়ারের টাকা দেয়া হয়েছে, যা অবৈধ। দাতাদের অর্থে দরিদ্রদের ক্ষুদ্র ঋণ দিতে খরচ করে গ্রামীণ ব্যাংক। এখান থেকে ব্যক্তিগত ব্যবসার জন্য ঋণ করা যায় না। গ্রামীণ ব্যাংকে করা একটি স্বাধীন কমিশনের অডিটে দেখা গেছে, এই ট্রাস্ট থেকে লাভের এক পাইও গ্রামীণ ব্যাংক কিংবা তার অন্য কোন প্রকল্প পায়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি। সূত্রমতে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১০ সালে নিজেরা তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ সম্পর্কে নিজেদের তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশকে (আরসিএমপি) অনুরোধ জানায়। ওই অনুরোধে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডায় এসএনসি লাভালিনের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রমেশ শাহ ও সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ২০১২ সালে টরোন্টোর আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে এসএনসি-লাভালিনে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়্যালেস ও ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূইয়াকেও এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। সে সময় রমেশ শাহের কাছ থেকে কানাডীয় পুলিশের জব্দ করা একটি ডায়েরি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়, যাতে বাংলাদেশের কাকে কত শতাংশ ঘুষ দেয়া হবে তার সাংকেতিক বিবরণ ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়। এদিকে বিশ্বব্যাংকের চাপে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দুদক ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় একটি মামলা করলেও ২২ মাস পর তদন্তকারীরা বলেন, অভিযোগের কোন প্রমাণ তারা তদন্তে পাননি। দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ায় ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে পদ্মা দুর্নীতি মামলার অবসান ঘটে, তখনকার সেতু সচিব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ সাত আসামির সবাইকে অব্যাহতি দেয় আদালত। বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ ॥ পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি কানাডার আদালত। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকায় নিযুক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর জিমিয়াও ফানের পক্ষে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের মিডিয়া বিভাগের কর্মকর্তা মেহরিন এ মাহবুব ই-মেইলে জানান, বিশ্বব্যাংক তার অর্থায়িত প্রকল্পে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে থাকে। যখন বিশ্বব্যাংকের একটি তদন্ত শেষ হয়, তখন সেই তদন্তের অনুসন্ধান পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট দেশকে। যেন তারা বিবেচনায় নিতে পারে যে, এর মধ্য দিয়ে তাদের জাতীয় আইন ক্ষুণœ হয়েছে কিনা। পরবর্তীতে সেই সংশ্লিষ্ট দেশের পর্যবেক্ষণ বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত পর্যবেক্ষণ সেই দেশকেই দেয়া হয়ে থাকে। বিশ্বব্যাংকের কাছে জবাব চাইতে হবে- টিআইবি ॥ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রমাণের আগেই বিশ্বব্যাংক কেন পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করল তার জবাব সরকারকে চাইতে হবে। তিনি বলেন, সংক্ষুব্ধ পার্টি হিসেবে সরকারের এই জবাব চাওয়া উচিত। টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছে, সেখানে কয়েকটা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। জল্পনা, গুজব, রটনার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল। যুক্তিগুলো আদালতের কাছে আমলযোগ্য হয়নি। সে কারণে মামলা খারিজ করা হয়েছে। এতে প্রমাণিত হলো বিশ্বব্যাংক যে অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছিল সেগুলো যুক্তিহীন ছিল। এই অভিযোগের মাধ্যমে সরকার ও দেশের জনগণের ওপর একটা কলঙ্কের কালিমা লেপন হয়েছিল। এই রায়ের মাধ্যমে আমরা স্বস্তি পেয়েছি। দুর্নীতির অভিযোগে তারা কেবল পদ্মা সেতুতে অর্থায়নই বন্ধ করেনি, তারা দেশ ও জনগণের ওপর কালিমাও লেপন করেছে। আমি মনে করি, এর জন্য সরকার সংক্ষুব্ধ পার্টি হিসেবে বিশ্বব্যাংকের কাছে জবাব চাইতে পারে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার- সৈয়দ আবুল হোসেন ॥ পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলার পর গত কয়েক বছর ধরে হেনস্থার স্বীকার হতে হয়েছে জানিয়ে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন বলেছেন, তিনি যে নির্দোষ তা কানাডার আদালতে প্রমাণ হয়েছে। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বার্থান্বেষী একটি মহল ষড়যন্ত্র করেছিল। এদিকে, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ আনার সময় বাংলাদেশের যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন আবুল হোসেন। কিন্তু নানা ঘটনাপ্রবাহের পর তিনি তখন পদত্যাগ করেছিলেন। কানাডার আদালতের রায় প্রকাশের পর কানাডার আদালতে পদ্মা সেতুর অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার প্রেক্ষিতে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন-এর বক্তব্য শিরোনামে একটি বক্তব্য পাঠানো হয় গণমাধ্যমে। ওই বক্তব্যে আবুল হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ কানাডার আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এর ফলে এসএনসি-লাভালিনের অভিযুক্ত তিন কর্মকর্তা মামলা থেকে রেহাই পেলেন। কানাডার আদালতের এই রায় প্রমাণ করে, পদ্মা সেতু নিয়ে আমাকে জড়িয়ে বিশ্বব্যাংক যে অভিযোগ করা হয়েছে- তা সর্বৈব মিথ্যা। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশস্থ তৎকালীন বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি গোল্ড স্টেইন অসত্য রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাংক যে কাল্পনিক অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে দাঁড় করেছিল- তা ছিল শুধু মিথ্যা নয়, ষড়যন্ত্রমূলক। আমি বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশী কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। এ ষড়যন্ত্র আমার দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম, মর্যাদা, সততা, নিষ্ঠার ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পথকে বাধাগ্রস্ত করেছে। আমাকে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সাকোকে মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে জড়ানো হয়েছে, পরামর্শক নিয়োগে ৩৭ মিলিয়ন ডলার দর প্রস্তাবের ৩৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ করা হয়েছে- তা ছিল মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক।
×