সফটওয়্যার মেলায় বাংলাদেশ এক অন্য উচ্চতায়

রেজা নওফল হায়দার ॥ গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় দেশের বেসরকারী খাতের সবচেয়ে বড় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রদর্শনী বেসিস সফটএক্সপো। ‘ফিউচার ইন মোশন’ স্লোগান নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এগারোতম এ মেলার আয়োজন করেছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্যিক সংগঠন বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, বেসিসের পরিচালক ও বেসিস সফটএক্সপো ২০১৭ এর আহ্বায়ক সৈয়দ আলমাস কবীর, বেসিসের পরিচালক ও প্লাটিনাম স্পন্সর মাইক্রোসফট বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির, গোল্ড স্পন্সর সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল আর কে হুসেইন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বেসিসের সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান, বেসিসের পরিচালক উত্তম কুমার পাল, রিয়াদ এস এ হোসেনসহ বেসিস সফটএক্সপো ২০১৭ এর আয়োজক কমিটির সদস্যরা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন, উদ্ভাবন, গবেষণা, সফল প্রয়োগ, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা তুলে ধরার প্রয়াসে ২০০২ সাল থেকে বেসিস নিয়মিতভাবে দেশের বেসরকারী খাতের সবচেয়ে বড় মেলা ‘বেসিস সফটএক্সপো’ আয়োজন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বেসিস সফটএক্সপো ২০১৭ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই আয়োজনের মাধ্যমে দেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা, সাফল্য দেখানোর পাশাপাশি আইসিটি খাতের উন্নয়নে করণীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেমিনার, কর্মশালাসহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। বিগত যে কোন সফটএক্সপোর তুলনায় বর্ধিত পরিসরে ও নানা আয়োজনে বেসিস সফটএক্সপো ২০১৭ অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রদর্শনীতে দেশ বিদেশের সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক আইটি সংগঠন, স্থানীয় সফটওয়্যার কোম্পানিসহ শতাধিক প্রতিষ্ঠান তাদের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবার প্রদর্শন করে। এ বছর প্রদর্শনী এলাকাকে বিজনেস সফটওয়্যার জোন, আইটিইএস এবং বিপিও জোন, মোবাইল ইনোভেশন জোন ও ই-কমার্স জোন এই ৪টি ভাগে ভাগ করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায় প্রসারে থাকছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিজনেস ম্যাচমেকিং সেশন। বাড়তি সুবিধা হিসেবে ছিল বিজনেস লাউঞ্জ। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য ইভেন্টের মধ্যে ছিল লিডারস মিট, ডেভেলপার কনফারেন্স, টেক উইমেন কনফারেন্সসহ নানা আয়োজন। শিশুদের জন্য ছিল কোডিং প্রোগ্রাম। সফটএক্সপোতে তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে অন্তত ২০টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানস্থলের মিডিয়া বাজার ও উইন্ডি টাউন হলে এসব সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এসব সেমিনারের মধ্যে ছিল - স্থানীয় কোম্পানির জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, ডিজিটাল এডুকেশন ও ই-লার্নিং, মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ইন্টারনেট অব থিংকস, এ্যাক্সেস টু ফিন্যান্স, ক্লাউড কম্পিউটিং, ডেটা নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি, রফতানি বাজার উন্নয়ন, ডেভেলপিং ইনোভেশন ইকোসিস্টেম, ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি, আইটি মার্কেট রিসার্চ, কোয়ালিটি সার্টিফিকেশনসহ নানা বিষয়। তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে ১০টির অধিক টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানস্থলের গ্রিন ভিউ হলে এসব সেশন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজিত টেকনিক্যাল সেশনের মধ্যে ছিল- এপিআই এক্সচেঞ্জ, ক্রস প্লাটফর্ম গেম ডেভেলপমেন্ট, এনক্রিপশন অন ক্লাউড ডেটা, মোবাইল ও গেমিং এ্যাপ্লিকেশনে ইউআই/ইউএক্সের গুরুত্ব, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সাইবার নিরাপত্তা, ক্লাউড সার্ভার ব্যবস্থাপনার সহজ কৌশল, অনলাইন পেমেন্ট সহজীকরণের মাধ্যমে ব্যবসায় উন্নয়ন ও গ্রাহকসেবা বাড়ানো, ব্যবসায় উন্নয়নে ডিজিটাল মার্কেটিং ও এ্যাকাউন্টিং বিপিও : সুপ্ত সম্ভাবনা শীর্ষক বিষয়গুলো। আরও ছিল আন্তর্জাতিক বিটুবি। সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবার রফতানি বাড়াতে এবারের বেসিস সফটএক্সপোতে আন্তর্জাতিক বিজনেস টু বিজনেস ম্যাচমেকিংয়ের আয়োজন ছিল। সেখানে নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশের অন্তত ১০টি কোম্পানি বাংলাদেশের অর্ধশতাধিক সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানির সঙ্গে আলাদা বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। দর্শনার্থীদের জন্য ফ্রি ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হয়।