রংপুরে বইমেলা হয়ে আসছে নব্বইয়ের দশক থেকে। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে বইমেলার আয়োজন করা হয়। ছড়া, কবিতা, গল্প-উপন্যাস, লিটল ম্যাগাজিনসহ বিচিত্র রকমের বইয়ে সাজানো থাকে রং-বেরঙে স্টলগুলো। সন্ধ্যা নামার মুহূর্তে গোধূলীর আবছা আলো আর বৈদ্যুতিক বাতির আলোর ঝলকানি এক মোহনীয় দৃশ্যপট সৃষ্টি করে মেলা প্রাঙ্গণে। মেলা চলাকালীন প্রতিদিনই মেলাতে বিভিন্ন আলোচনা সভা, কবিতা পাঠের আসর বসে; প্রতি সন্ধ্যায় থাকে সাংস্কৃতিক অনুুষ্ঠান। এছাড়া মেলাতে লেখককুঞ্জ থাকে, যেখানে লেখকেরা উপস্থিত থাকেন এবং তাঁদের বইয়ের ব্যাপারে পাঠক ও দর্শকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এছাড়া মেলার তথ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিনিয়ত নতুন মোড়ক উন্মোচিত বইগুলোর নাম, লেখক ও প্রকাশকের নাম ঘোষণা করা হয় ও দৈনিক প্রকাশিত বইয়ের সামগ্রিক তালিকা লিপিবদ্ধ করা হয়।
শুরুর দিন থেকে প্রতিদিন বাড়তে থাকে ভিড়। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে বইমেলায় আসে। কেউ কেউ মেলায় আসেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। এ শুধু বই কেনা নয়, মেলার ছলে সুযোগ সৃষ্টি হয় নির্মল বিনোদনের, পারস্পরিক দেখা সাক্ষাতের। তা ছাড়া বইমেলায় এসে কেউই বই না কিনে খালি হাতে ফেরেন না। নতুন বইয়ের মিষ্টি ঘ্রাণ এবং রং বেরঙের প্রচ্ছদ দর্শণার্থীদের বই কিনতে আকৃষ্ট করে। নিঃসন্দেহে বইমেলা নতুন পাঠক সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
এ বছরও রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। ১৪ দিনব্যাপী এ বইমেলা ১৬ মার্চ শুরু হয়ে চলবে ২৯ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলবে। শুক্র ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে একটানা রাত নয়টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ। রংপুরের সম্মিলিত লেখক সমাজ এ মেলার আয়োজক। রংপুর বিভাগীয় লেখক পরিষদ, রংপুর সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদ, ছড়া সংসদ, অভিযাত্রিকসহ স্থানীয় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এই সম্মিলিত লেখক সমাজ এর সদস্য।
-আবদুর রউফ সরকার
রংপুর থেকে