ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

থানায় থানায় নষ্ট হচ্ছে জব্দ করা যানবাহন

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

থানায় থানায় নষ্ট হচ্ছে জব্দ করা যানবাহন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন থানা এবং ট্রাফিক বিভাগে জব্দ করা বিপুল পরিমাণ যানবাহন দীর্ঘদিন ধরে খোলা জায়গায় পড়ে আছে। রোদ, বৃষ্টিতে মরচে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের এসব যানবাহন। অথচ মামলা নিষ্পত্তির পর এসব যানবাহন নিলামে বিক্রি করলে সরকারী কোষাগারে জমা হতে পারে বিপুল পরিমাণ অর্থ। নিলামের নিয়ম থাকলেও মামলা নিষ্পত্তিতে অনীহা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় থানার আঙিনায় উন্মুক্ত থেকে নষ্ট হচ্ছে এসব যানবাহন। এসব যানবাহনের তালিকায় মোটরসাইকেলের তালিকা অনেক বেশি। জানা গেছে, মহানগরীর ৪টি ও জেলার ৯টি থানাসহ ট্রাফিক বিভাগে মোটরসাইকেলসহ চার শতাধিক যানবাহন খোলা আকাশের নিজে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এসব যানবাহনের মধ্যে ডাকাতি, চুরি, মাদক পাচারসহ সড়ক দুর্ঘটনায় জব্দকৃত মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, মাইক্রো বাস ও ট্রাক রয়েছে। এছাড়া অবৈধ (কাগজপত্রবিহীন) যানবাহনও রয়েছে। এসবের মূল্য কয়েক কোটি টাকা। পুলিশ জানায়, এসব যানবাহন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ থাকে। সে কারণে ওইসব যানবাহনের বিরুদ্ধে পুলিশের কিছুই করার থাকে না। তবে, গাড়িগুলো নিলামে দিতে পারলে সরকার তা থেকে অনেক রাজস্ব পাবে। রাজশাহী ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট রাজিব হোসেন জানান, মহানগরের বিভিন্ন থানার ও মহানগর ট্রাফিক পুলিশ বিভিন্ন সময় আটককৃত গাড়িগুলো রাখার জন্য পর্যাপ্ত জায়গার সমস্যা আছে। সে কারণে মেট্রোপলিটন ট্রাফিক বিভাগ রাজশাহীর মহিষবাথান পুলিশ কোয়ার্টারের সামনে জব্দকৃত মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনগুলো রাখে। এসব যানবাহন মামলার ড্রাম্পিং হয়ে আছে। এসব গাড়ি মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেশি। বিভিন্ন সময় কাগজপত্র ছাড়া ভারত থেকে চোরাইভাবে আনা মাদকসহ আটককৃত মামলায় জব্দ করা গাড়ি সেগুলো। মামলা থাকার কারণে আইনগত জটিলতার জন্য এসব গাড়ির কোন কুল-কিনারা হচ্ছে না। অপর দিকে জেলার বিভিন্ন থানার অবস্থাও এমন। বিভিন্ন থানায় বিভিন্ন মামলায় জব্দকৃত যানবাহনগুলো সুরক্ষিত রাখার কোন নির্দিষ্ট গ্যারাজ না থাকায় কোটি টাকা দামের যানবাহনগুলো পড়ে থেকে বিকল হয়ে যাচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। চারঘাট মডেল থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন জানান, প্রত্যেক দফতরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পুলিশের দায়িত্ব দোষিদের আটক করে আদালতে সোপর্দ করা। বিজ্ঞ আদালতের রায়ে সংশ্লিষ্টদের বিচার করা হয়। একই সঙ্গে জব্দকৃত যানবাহনগুলোর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ থাকে। বিধায় যানবাহনগুলোর বিষয়ে পুলিশের কিছু করার থাকে না। তিনি জানান, শুধু চারঘাট মডেল থানায় জব্দকৃত যানবাহনগুলোর মধ্যে ৩৮টি মোটরসাইকেল, ৩টি প্রাইভেট কার, একটি মাইক্রোবাস ও দুইটি ট্রাক রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য কোটি টাকার উপরে। এসব বিষয়ে রাজশাহী ট্রাফিক বিভাগের (টিআই) ইনচার্জ মোসাকখারুল ইসলাম জানান, জব্দকৃত যানবাহনগুলো মামলায় জড়িত যা আদালত কর্তৃক নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের করার কিছুই থাকে না। শুধু যে সব জব্দকৃত যানবাহনগুলো যত্রতত্র পড়ে আছে এমনটি নয়। কিন্তু মামলা দীর্ঘ সময় চলার কারণে লাখ লাখ টাকা মূল্যের যানবাহনগুলো মরিচা পড়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাচ্ছে। তবে সরকারীভাবে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে সরকারী কোষাগারে লাখ লাখ টাকা জমা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
×