ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘যৌক্তিক বোধসম্পন্ন হয়ে তরুণদের আগামীর হাল ধরার আহ্বান’

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

‘যৌক্তিক বোধসম্পন্ন হয়ে তরুণদের আগামীর হাল ধরার আহ্বান’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিতর্কের মাধ্যমে যৌক্তিক বোধ সম্পন্ন হয়ে আগামীর বাংলাদেশের হাল ধরতে তরুণ সমাজ ও বিতার্কিতদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। একই সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ তেমন অগ্রসর হতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকল যুবদের উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান জানান। শুক্রবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশন (এনডিএফ) আয়োজিত দুই দিনের বিতর্ক উৎসবে আজীবন সম্মাননা গ্রহণকালে সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) চেয়ারপার্সনসহ বিভিন্ন দায়িত্বে থেকে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করার ‘স্বীকৃতি’ হিসেবে তাকে এ সম্মাননা দেয়া হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যারা বিতর্ক করে তারা নিজের মতামতটাকে যুক্তি দিয়ে উপস্থাপনের সাধনার মধ্যে থাকে। অন্যের মতামত মনোযোগ দিয়ে শুনে সেই মতামতের সঙ্গে নিজের মতামত মিলিয়ে কিংবা তার বিরুদ্ধে গিয়ে যুক্তিতর্ক দিয়ে উপসংহারে পৌঁছায়। আমরা গণতন্ত্রের যে সবচেয়ে বড় শর্তারোপ করি, সবার অংশগ্রহণে সবার মতামতের ভিত্তিতে একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছানো, একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো, আজ জাতীয় জীবনে সেটারই অভাব প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। আর বিতর্কের সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে আমরা নিশ্চয়ই এমন একটি আবহ তৈরি করতে পারব, যেখানে হানাহানি ও অন্যের ওপরে অত্যাচার করে অন্যায়ভাবে মতামত চাপিয়ে দেয়ার যে প্রবণতা, যেটা আমাদের রাজনীতিতে, সমাজ ব্যবস্থায়, অর্থনীতিতে ও সংস্কৃতিকে দেখছিÑসেটার পরিবর্তন আসবে। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশে নিজেকে ‘সবচেয়ে ভাল ও অগ্রসর’ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারলেও গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় একইভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে না পারায় ‘মনের মাঝে কষ্ট’ রয়ে গেছে। এদিকে সরকারের মনোযোগ দেয়া উচিত। তরুণ তার্কিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিতর্কের মধ্য দিয়ে যে সাধনাটা তোমরা করে যাচ্ছ, তাতে তোমরা পরিবর্তনটা আনতে পারবে। সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, তোমরা মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকারী। এই মুক্তি কূপম-ূকতা থেকে মুক্তি, অন্ধ বিশ্বাস থেকে মুক্তি, মানুষের ওপরে নির্যাতন করার প্রবণতা থেকে মুক্তি, বঞ্চনা থেকে মুক্তি, অবহেলা থেকে মুক্তি, অপমান থেকে মুক্তি, অপমান করার যে প্রবণতা সেটা থেকে মুক্তি। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী তার্কিকদের বলেন, তোমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষ হতে হবে। যারা বিতর্ক করে তারা আলোকিত মানুষ। তারা যুক্তি দিয়ে সকল কূপম-ূকতা কাটিয়ে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। এনডিএফ চেয়ারম্যান এ কে এম শোয়েবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, শিশু একাডেমির পরিচালক আনজির লিটন, লোটেল বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক লোকমান হোসেন আকাশ, এনডিএফ মহাসচিব মাহবুবুর রহমান শাকিল বক্তব্য দেন। নিচ্ছে বলে আয়োজকরা জানান, দুই দিনের এ বিতর্ক উৎসবে সারা দেশ থেকে প্রায় দুই হাজার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন।
×