কোনো এক মধুময় মাসে তোমার পত্র এসে পৌঁছে যাবে
সামান্য আলো এসে স্থির হবে পটে
বারবার তাড়া দিবে গোপন ভাষণ
ভুলে যাওয়া তোমার আশ^াসে শুভ
কীসব অঘ্রাণ লাগে, কীসব অর্ঘ-চেতনা
চকিতে হবো না লীনÑ
আর চকিতে হবো না লীন
আঁধারের অধিরথে কুলাবো না ক্ষয় আর
আ¤্রসার বনে বনে পড়ে যাবে সাড়া
কাঁঠালের গন্ধে মাতাল সন্ধ্যায়
পানসির ভিড় জমে ওঠেÑ এক, দুই, তিন
হাটুরের অনেক পদাঘাত
পরেদিন পর্ণমোচী আসে
উপল অস্থিজুড়ে পাতা ঝরে পাংশু হলুদ
অগণ্য অর্বুদ স্বপ্ন হেসে নিশিভর
পরেদিন বিন্দু শিশিরের পথে হেসে রবে
নিবিড় আশ^াসে শুভÑ
অনুকূল সৌরশিষ ছুঁয়ে যাবে তোমার কপাল
পরেদিন আনত পায়ে পায়ে তুমিও রৌদ্রবাসক হবে পার
মুখোমুখি মুঞ্জরিত নদী হাওয়ায় হাওয়ায় দোল খাবে
সুরে সুরে পালের দখিনা জাগে, মধুকর
ভাসানের গান কও মধুকরÑ ওষ্ঠ কোমল করি
‘প্রিয়তম হে জাগো, জাগো, জাগো...’
ঊষা ও গামিনী
কে বালা বস্ত্রভারানত প্রাণের আঁধার ছেড়ে মরুময় রুক্ষ ধাবনে লাগো
আধোলাল ঊষা ছেড়ে লুকতে চাও কোনো অন্ধ-কোটরে
মৃগপায় অধির গমনে রোজ; কে তুমি তিথির ইঙ্গিতে হাঁক ছুট...
এই পৃথুল মধুপথে এমন কৃপা কিছু নেই, পালাবার জলপথে ফুলের ঠিকানা ভুল
দিশাহীন বনান্তব্যাপে হলুদ বৃক্ষেরা নেচে যায়Ñ নেচে যায় নগ্ন বিছানার সাপ
কী এমন বুক চেপেছিল পাখি ?
ডানার উজান ভেসে লঘু-সিঞ্জন, ওষ্ঠ যাতনা সে টের পেলো
টের পেলো ক্ষয়, পুরাতন জ¦রÑ
রাগে-সংরাগে সমাগত অভিসারে
তাহলে কি ভুল ছিলো পারমিতা ?
দেখো, নিথর অবকাশে দেখো ঘুমিয়েছে তোমার নাগর
হিম দংশনে নিহত হতেছিল ওর চোখ
তুমি কেন জেগে আছো তবু, ঘুমঢুলে কীসের চেতনা অধিরোজ
ছেড়ে-ছুঁড়ে কীসের অন্বেষণে চাও ফিরে !
ফের কেন ঈশানে ঈশানে আঁধারের বাজ ফেলে যাও
কুমেরু কিনার হতে এত কেন অশ্রু ফলাও
আলোহীন উর্ধ্ব-অতলব্যাপী অর্গলÑ মেতেছে উজাড়
কে তুমি জুড়ে আছো ঊষা ও নিশির কারাগার ...
ট্রায়াল
একটি মুদ্রা নিক্ষেপ ট্রায়ালে এখনি মীমাংসা হবে দ্বন্দ্বের
ওরা র্যাপারি মার্চ করে চারদিক ভিড়ে অপেক্ষায়
আয়ু স্থির হয়ে গেছে!
তবু কী নিসর্গ এবার বকুল কুঁড়ির আশ^াস পাঠাবে না
দোয়েলেরা কলকণ্ঠ হেসে জানাবে না শুভাশিস;
দীক্ষার পটভূমে নিবদ্ধ রয়েছে দেখো চোখ দুটি
হে কবি, বিজীত হবো না...
এরমধ্যেই দুইচোখ আস্তরে ঢেকে, এক হাত কব্জি-কুনঠাসা করে বেঁধে
অন্য হাত খুলে দিয়ে ওরা বলছে:
যদি মুদ্রাপিঠে শির আসে, তবেÑ তোমাকে হারাবো
আর পতনের সাথে ভূমিতে লেজ দেখা গেলে
আজীবন বন্দিত্ব সয়ে যেতে হবে
এমনই সিদ্ধান্ত করেছে সভার
পরিপাশের্^ এমন কেউ নেই যে সামান্য হর্ষ জোগাবে
যখন মুদ্রার পৃষ্ঠদ্বয় আলাদা কোনো অর্থ করে না
আগাম উল্লাসে কাঁপিয়ে চরাচরÑ
তখন কীভাবে ওরা দ্বৈরথ বলে সাব্যস্ত করেছে এই খেলা!
নিভতে লাগা ফুলকির মতো যদিনা সামান্য ইন্ধন পেয়ে যাই
রুক্ষ মরুপথেÑ মিলে যদি শ্যামল সন্ধান
তাহলে পাল্টে যায় পূর্ব-শরণ
পাল্টে যায় সন্ধির পাঠ
হে ধাতু, দ্রুততর চক্রনিয়মে দৃষ্টির ফাঁক গলে এগুতে পারো দূরতম পথে
আর ভূমি, পতনের আগেভাগে ছড়াও বিস্তারÑ
উভচর সাপিনীর মতো ওকে বয়ে যাও বর্ণাতীত বোধনের পথে
তবু যদি স্বপ্ন কিছু বাঁচে
না প্রেম, না বিচ্ছেদের...
অপঘাত
উত্থানের পর মুহূর্তে এক তীব্র-তীর এসে ভূমিতে লাফিয়ে উঠলো লিঙ্গটি; প্রলয় নাচন কাকে বলে!
ঘিরে-ঘুরে হাত-পা ছোড়ে বিদ্ধ-ঘোটক, ঘোটকীর সেকি চক্রছুট !
এখন মাৎ হবে লীলাÑরংমেখে, অনাবিল অট্টহেসে পশ্চিমের অস্ত্রঘাঁটিতে হবে জোশ
আহা মৈথুন, আহা মৈথুন আহা...
কানে কানে কোষে কোষে বিদ্ধঅমূল বিষাদের রোল শোনা গেলো
প্রাণে প্রাণে বোধে ও মননে তীক্ষ্ম করাল জখমের লাল দেখা দিলো
আহা মৈথুন, আহা মৈথুন আহা...!
শীর্ষ সংবাদ: