ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভৈরব নদের জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ এগিয়ে চলেছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ভৈরব নদের জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ এগিয়ে চলেছে

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ‘ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প’ এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভৈরব নদ খনন করে জাহাজ চলাচল পরিবেশ তৈরি করতে শুরু হয়েছে কর্মযজ্ঞ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে যশোর থেকে নওয়াপাড়া অভিমুখে দশ কিলোমিটার নদের অবৈধ পাটা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় ৫ কিলোমিটার পাটা উচ্ছেদ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থে মহল বিশেষ যশোরাঞ্চলের নদী ও খালে পাটা দিয়ে মাছ চাষ করে আসছে। অল্প দূরত্বের ব্যবধানে নদী ও খালগুলোতে তিন স্তরে পাটা দেয়ার কারণে স্রোতধারা চরমভাবে বিঘিœত হয়ে আসছে। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় প্রতি বর্ষা মৌসুমে। এর মধ্যে যশোর সদর উপজেলার ভৈরব নদের বিভিন্ন স্থানে শক্তিশালী চক্রের ৪০টি পাটা ছিল। অনেকগুলো ছিল তিন স্তরের। এ ঘটনায় ওই জনতা যশোরের জেলা প্রশাসক, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের কয়েকটি দায়িত্বশীল দফতরে পাঁচ শতাধিক লোকের গণস্বাক্ষর স্মারকলিপিও দেয়। তবে ওই সময় প্রশাসন কাজ করতে পারেনি। সম্প্রতি ভৈরব নদের যশোর শহর অঞ্চলের টানা দশ কিলোমিটার খননের জন্য কার্যাদেশ এসেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে দরপত্রও আহ্বান করা হচ্ছে। সে কারণে ভৈরব নদ থেকে অবৈধ পাটা উচ্ছেদ করতে ১ ফেব্রুয়ারি অভিযান শুরু করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছয় বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া প্রতিশ্রুত যশোরের ভৈরব নদের ৯৬ কিলোমিটার খননের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে ‘ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প’ নামের একটি প্রকল্পে ২৭২ কোটি ৮২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চৌগাছার তাহেরপুর থেকে যশোর হয়ে নওয়াপাড়া আফরা ঘাট পর্যন্ত ভৈরব নদের সংস্কার করা হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে ভৈরবের ৯৬ কিলোমিটার খনন কাজ শেষ হলে দর্শনার মাথাভাঙা নদীর সঙ্গে সংযোগ হবে। ফলে নাব্যতা ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি ভৈরব পাড়ের এলাকার জলাবদ্ধতা দূর হবে। নদটি নৌযান চলাচলের উপযোগী হবে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, ভৈরব নদের যশোর শহর অঞ্চলে টানা দশ কিলোমিটার খননের জন্য দ্রুত দরপত্র আহ্বান করা হবে। শহরের বাবলাতলা ব্রিজ এলাকা থেকে শুরু করে খয়েরতলা ব্রিজ পর্যন্ত কোন অবৈধ পাটা থাকবে না। বুধবার দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালায় প্রশাসন। এদিন ৫ কিলোমিটার শহরতলী পালবাড়ি ঘোষপাড়া এলাকা থেকে সদর উপজেলাধীন শানতলা পর্যন্ত প্রবাহিত ভৈরব নদের অবৈধ পাটাবেড়া উচ্ছেদ করা হয়। এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান জানান, ভৈরব নদ দীর্ঘদিন অবৈধ দখলদারদের দখলে। তারা অবৈধভাবে বেড়া পাটা দিয়ে মাছ চাষ করছে। আর এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি প্রকল্প। ভৈরব নদ খনন করে জাহাজ চলাচল করা যায় তার জন্য বাঁধ পাটা উচ্ছেদ করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আন্তরিক রয়েছেন। এ ব্যাপারে যশোর জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, চিহ্নিত মহল এই পাটার সাথে জড়িত। এর আগেও অনেককে সতর্ক করা হলেও ফল হয়নি। আর নদী খালের অবৈধ এইসব পাটা উচ্ছেদে চূড়ান্ত নোটিস করা হয়েছে। দু’একের মধ্যে জেলার সব নদীতে অভিযান চলবে এবং একে একে ওইসব পাটা উচ্ছেদ করে দেয়া হবে।
×