ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইসি নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় গঠিত, রাজনৈতিক বক্তব্য দেবেন না

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ইসি নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় গঠিত, রাজনৈতিক বক্তব্য দেবেন না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্দলীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য না দেয়ার জন্য বিএনপির নেতৃবৃন্দকে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, দেশের নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে স্বচ্ছ নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। কমিশনের কেউ কোন রাজনৈতিক দলের নন। আওয়ামী লীগ সব সময় গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আর কাজ শুরু করার আগেই কমিশনের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে বিএনপি। এটি তাদের রাজনৈতিক কৌশল ও অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। গত ২০০১ সালের নির্বাচনেও তারা শুরুতেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সমালোচনা করতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে ওই সিইসি প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে তাদের (বিএনপি) ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতি আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বিএমএ সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব অধ্যাপক এহতেশামুল হক, অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন, অধ্যাপক ডাঃ আভা হোসেন প্রমুখ। বিএনপিকে সাহস নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ঘরে বসে অপপ্রচার না চালিয়ে সাহস থাকলে মাঠে আসুন। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক রণাঙ্গন থেকে পালিয়ে যাওয়ার দল নয়। নির্বাচন নিয়ে ভয় পায় না, নির্বাচন থেকে কখনও সরে দাঁড়ায় না। নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। জনগণের রায় মেনে নেবে আওয়ামী লীগ। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের আমলের উন্নয়নের চিত্র দেখেন না বলে অভিযোগ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি অন্ধ নেত্রী। দেখেও না দেখার ভান করেন তিনি। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। বিশ্বের অনেক দেশে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নের চিত্র উদাহরণ হিসেবে স্থান পাচ্ছে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটি বিশ্বের ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে বলেও গবেষণা প্রতিবেদনগুলোতে বলা হচ্ছে। দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে বিদেশেও খাদ্যপণ্য রফতানি করা হচ্ছে। দেশের এক প্রান্তের মানুষকে অন্য প্রান্তের মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে সহায়তা করছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। নিজেদের অর্থ দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু। গ্রামে গ্রামে জ্বলছে বিদ্যুতের আলো। শহুরের অনেক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে গেছে গ্রামাঞ্চলে। ঘরের কাছেই প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে গ্রামের মানুষ। উন্নয়নের যোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে একের পর এক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনেও দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকেই বেছে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কথায় কথায় চিকিৎসকদের ওপর আক্রমণ না করার জন্য রোগীর স্বজনদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, একজন প্রকৃত চিকিৎসক কখনও ইচ্ছে করে ভুল চিকিৎসা প্রদান করেন না। রোগীকে সঠিক সেবা ও চিকিৎসা প্রদান করতে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তাই আবেগতাড়িত হয়ে কোন চিকিৎসকের ওপর হাত তোলা ঠিক নয়। কোন চিকিৎসকের চিকিৎসার ওপর সন্দেহ থাকলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) অভিযোগ করতে পারেন। অভিযুক্ত হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিএমডিসিই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। শর্ত পূরণ না হলে মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করা হবে ॥ এদিকে, মেডিক্যাল কলেজগুলোতে বিদেশী কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে সার্ক অঞ্চলের বরাদ্দ আসনের বিপরীতে কোন দেশের কোটা পূরণ না হলে খালি আসনগুলো অন্যান্য দেশের মধ্যে বণ্টন করা হবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মেডিক্যাল কলেজে বিদেশী কোটা নীতিমালা-সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এতে সভাপতিত্ব করেন। বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ নীতিমালার শর্ত পূরণ করে কলেজ পরিচালনার জন্য পুনরায় আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় না কোন কলেজ বন্ধ হোক। কিন্তু চিকিৎসা শিক্ষার মান অক্ষুণœ রাখতে কলেজ পরিচালনায় নীতিমালা মেনে চলতে হবে। নীতিমালার শর্ত পূরণ করতে না পারলে কলেজ বন্ধ করে দেয়ার মতো কঠোর অবস্থানে যেতে সরকার বাধ্য হবে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ স্বাস্থ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অধিদফতর ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×