ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঋণাত্মক হিসেবে ছয় মাস শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ঋণাত্মক হিসেবে ছয় মাস শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে ঋণাত্মক মূলধনধারী বিনিয়োগ হিসাবে আরও ৬ মাস শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩(৫) ধারা আগামী ৩১ জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য স্থগিত করায় এ সুযোগ পাওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার বিএসইসির কমিশন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পাঠানো প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে বিএসইসি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ডিএসই ব্রোকার্স এ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) অনুরোধে ডিএসই রবিবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে প্রস্তাবটি পাঠিয়েছিল। উল্লেখ্য, মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩(৫) ধারা অনুসারে ঋণাত্মক মূলধনধারী হিসেবে গ্রাহক নিজে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন না। কেবল ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান এ ধরনের হিসাবের শেয়ার বিক্রি করে তার ঋণ সমন্বয় করে নিতে পারে। ২০১০ সালের ধসের পর বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএসইসি আলোচিত আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটির কার্যকারিতা কয়েক দফা স্থগিত করে। সর্বশেষ স্থগিতাদেশের মেয়াদ গত ৩১ জানুয়ারি শেষ হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, মার্জিন ঋণ হচ্ছে বিশেষ ধরনের ঋণ সুবিধা। শেয়ার কেনার জন্য ব্রোকারহাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক গ্রাহককে এ ঋণ দিয়ে থাকে। বিএসইসি প্রণীত মার্জিন রুলস, ১৯৯৯-এর আওতায় এ ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ২০১০ সালের পর থেকে টানা দর পতনে অসংখ্য মার্জিন এ্যাকাউন্টে বিনিয়োগকারীর মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। ওইসব এ্যাকাউন্টে থাকা শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম এমন জায়গায় নেমে এসেছে যে, বিনিয়োগকারীর নিজস্ব মূলধন বলতে কিছু নেই। উল্টো গ্রাহকের কাছে টাকা পাবে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান। আইন অনুসারে এমন এ্যাকাউন্টে লেনদেন নিষিদ্ধ। ১৯৯৯ সালের মার্জিন রুলসের ৩(৫) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোন বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান তার কাছে নতুন করে মার্জিন চাইবে। এই মার্জিনের পরিমাণ এমন হবে যাতে তার ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের ওপরে থাকে। নোটিস দেওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে পর্যাপ্ত মার্জিন জমা দেয়া না হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে নতুন কোন লেনদেনের অনুমতি দিতে পারবে না ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান। বাজারে টানা দর পতনের পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ নিয়ে টাকা খাটিয়ে লোকসানে পড়া বিনিয়োগকারীদের দাবি ও স্টক এক্সচেঞ্জের অনুরোধে ২০১৩ সালের এপ্রিলে মার্জিন রুলসের সংশ্লিষ্ট ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। এরপর দুইবার স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রতিবারই স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি আইন শিথিলের ওই নির্দেশনা জারি করে। কিন্তু গত বছর এ বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জ কোনো অনুরোধ না জানানোয় বিএসইসি এই বিষয়ে নতুন কোন নির্দেশনা জারি করেনি। ফলে স্থগিতাদেশের মেয়াদ গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়ে যায়।
×