ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খেলাধুলা যাক গ্রামে-গঞ্জে

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

খেলাধুলা যাক গ্রামে-গঞ্জে

জনকণ্ঠের ৮ ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় ‘খেলার খবর’ পাতায় ছোট একটি সচিত্র সংবাদ ছাপা হয়েছে ‘গ্রামে-মফস্বলেই খেলাধুলার জনপ্রিয়তা বেশি’ শিরোনামে। ছবিতে দেখা যায়, মাঠভর্তি উপচেপড়া দর্শক প্রবল উৎসাহ জোগাচ্ছে দু’দলের খেলোয়াড়দের। আপাতদৃষ্টিতে খেলাটি তেমন জনপ্রিয়ও নয় বর্তমানে, অন্তত আমাদের দেশে। ভলিবল খেলা। দক্ষিণগাঁওয়ের অবস্থান রাজধানী থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা থেকেও ১৫ কিলোমিটার প্রত্যন্তে। ভলিবল ম্যাচটিতে মুখোমুখি হয়েছিল নরসিংদীর মনোহরদী ও শিবপুর উপজেলার দুটি দল। তবে দুটো দলেই জাতীয় ভলিবল দলের কয়েক খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছিল। তবে শুধু এটুকুই যে হাজার হাজার দর্শককে ভলিবলের মতো তুলনামূলক কম জনপ্রিয় একটি খেলায় টেনে এনেছিল, তা নয়। জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ভাষ্য, গ্রামে-গ্রামে, উপজেলা-উপজেলায় অলিখিত নিয়মে বিরাজমান তুমুল প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাই মূলত খেলাটিকে উত্তেজনাপূর্ণ ও প্রাণবন্ত করে তুলেছিল। তারা এও অকপটে স্বীকার করেছেন, এমন বিপুল দর্শক তারা ঢাকা এমনকি বিদেশের মাটিতেও পান না। এক সময় বাংলাদেশের গ্রামগুলো ছিল ছায়া সুনিবিড়, শান্তির নীড়। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ম-িত। প্রায় গ্রামেই ছিল ছোট বড় খেলার মাঠ ও গোচারণ ভূমি। প্রবল জনসংখ্যার চাপে খাদ্য সমস্যা মোকাবেলায় ধানচাষে মাত্রাতিরিক্ত মনোযোগী হওয়ায় এর অনিবার্য প্রভাব পড়েছে উদ্ধৃত্ত জমি ও বাথানে। এর পাশাপাশি বিদ্যুতসহ প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে গ্রামগুলোতেও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। বড় বড় দালান-কোঠা এবং ছোট বড় শিল্প কারখানা প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে সেখানে। ফলে গোচারণ ভূমি এবং খেলার মাঠ বর্তমানে দুষ্প্রাপ্য, এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও। তাই বলে এখনও যে কিছু অবশিষ্ট নেই, তা নয়। উপজেলা সদর এবং বড়সড় গ্রামগুলোতে তো আছেই। আছে সরকারী খাস জমিও, সেসব সংরক্ষণ করে নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করা গেলে গ্রামের মানুষের একটি বিশুদ্ধ বিনোদনের ব্যবস্থা হতে পারে। ফুটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, হকি এমনকি হ্যান্ডবল খেলার জন্য তেমন ব্যয়বহুল উপকরণের প্রয়োজন পড়ে না। তদুপরি গোল্লাছুট, হা-ডু-ডু, ডাঙ্গুলি কানামাছি ইত্যাদি চিরায়ত লোকায়ত খেলাধুলা তো আছেই। উদ্যোক্তার অভাবও হবে না। কেননা অনেক গ্রামেই ছোটবড় শিল্পপতি এবং প্রবাসী আয় আছে। গণমানুষকে নিয়মিত বিভিন্ন খেলাধুলায় সম্পৃক্ত করা গেলে নির্মল আনন্দ-বিনোদনের পাশাপাশি সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-মাদক ইত্যাদির ছোবল থেকে সুরক্ষা সম্ভব হয় তরুণদের। এতে নতুন নতুন প্রতিভাও উঠে আসবে সুনিশ্চিত।
×