ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অনন্য রেজা করিম

আসছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন পিরিয়ড ড্রামা রাঙ্গুন

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আসছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন পিরিয়ড ড্রামা রাঙ্গুন

বিশাল ভারদ্বাজ একাধারে চিত্রপরিচালক, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, সঙ্গীত পরিচালক এবং একজন ভাল গায়কও বটে। বর্তমানে বলিউডের একজন নামীদামী গুণী প্রতিষ্ঠিত চিত্রনির্মাতা হিসেবে সবাই তাকে চেনেন। এ পর্যন্ত অনেক ক্যাটাগরিতে ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ফিল্মফেয়ার এ্যাওয়ার্ড জয়ী বিশাল ভারদ্বাজ বলিউডে পা রেখেছিলেন এবং সুরকার-সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে। ১৯৯৫ সালে ছোটদের জন্য নির্মিত সিনেমা ‘অভয়’ এর সুরকার হিসেবে বলিউডে তার অভিষেক, তবে প্রখ্যাত গীতিকার চিত্রনির্মাতা গুলজারের ‘মাচিশ’ ছবির সুরকার হিসেবে বিশালের পরিচিতি ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্য নতুন প্রতিশ্রুতিশীল সঙ্গীত প্রতিভা হিসেবে ফিল্মফেয়ার আর ডি বর্মণ এ্যাওয়ার্ড লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ‘সত্য’, ‘গডমাদার’ এর মতো সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। ২০০২ সালে শিশু চলচ্চিত্র ‘মাকডি’র মাধ্যমে চিত্রপরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল বিশাল ভারদ্বাজের। প্রথম পরিচালিত সিনেমাতেই একজন মেধাবী চিত্রনির্মাতা হিসেবে দর্শক সমালোচকদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হন তিনি। এরপর বিশাল ভারদ্বাজ একে একে নির্মাণ করেছেন মকবুল, ওমাকারা, কামিনে, সাত খুন মাফ, মাতরু কী বিজলি মানডোলা, হায়দার-এর মতো সাড়া জাগানো ছবিগুলো এর বাইরে ইশকিয়া, দেড় ইশকিয়া, তালওয়ার ছবিগুলো প্রযোজনা করেছেন। বিশাল ভারদ্বাজ পরিচালিত প্রযোজিত প্রতিটি সিনেমাতেই মানব চরিত্রের বিচিত্র প্রকাশ তুলে ধরা হয়। প্রচলিত ধারার বাণিজ্যিক হিন্দি ছবির সঙ্গে তার পরিচালিত সিনেমাগুলোর একটা পার্থক্য সহজেই চোখে পড়ে। দর্শক অন্যরকম স্বাদ পেয়েছেন তার প্রতিটি ছবিতেই। তার অধিকাংশ ছবিই বক্স অফিসে সাফল্যের চমক দেখিয়েছে। তার পরিচালিত ছবিতে জটিল চ্যালেঞ্জিং রোলে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেদের মেধা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন কারিনা কাপুর, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, শ্রদ্ধা কাপুর, বিপাশা বসু, শহিদ কাপুর, সাইফ আলি খান প্রমুখ। যে কারণে বিশাল ভারদ্বাজ পরিচালিত প্রযোজিত নতুন কোন সিনেমার প্রতি দর্শকদের আগ্রহ কৌতূহল একটু বেশিই লক্ষ্য করা যায়। চলতি মাসেই মুক্তি পাচ্ছে বলিউডের গুণী এবং আলোচিত চিত্রনির্মাতা বিশাল ভারদ্বাজ পরিচালিত নতুন সিনেমা ‘রাঙ্গুন’। এ ছবিটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কঙ্গনা রানাওত, সাইফ আলি খান, শহিদ কাপুর রিচার্ড ম্যাকবে প্রমুখ। ‘রাঙ্গুন’ ছবিটি প্রযোজনা করেছেন বলিউডের অনেক সফল ছবির প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা এবং ভায়াকম এইটিন মোশন পিকচার্র্স। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের (১৯৩৯-১৯৪৫) পটভূমিকায় এ ছবির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। ওই সময়ে ম্যারি এ্যান ইভানস নামের এক নারী ঝড় তুলেছিলেন, ‘ফিয়ারলেস নাদিয়া’ হিসেবে যার খ্যাতি পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল ভারতীয় সিনেমা অঙ্গনে। হিন্দি চলচ্চিত্রে সর্বপ্রথম স্ট্যান্ট ওম্যান হিসেবে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতেন। সেই সময়ে হান্টারওয়ালি ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বিশেষ খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন ‘রাঙ্গুন’ ছবিতে তার জীবনের নাটকীয় চড়াই-উতরাইয়ের বাস্তব কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। হান্টারওয়ালি নাদিয়াকে ‘রাঙ্গুন’ ছবিতে মিস জুলিয়ারূপে দেখানো হবে। আর এ চরিত্রটি রূপায়ন করেছেন কঙ্গনা রানাওত। ফ্যাশন, ওইলামহে, গ্যাংস্টার কৃশ থ্রি, কুইন, তানু ওয়েডস মানু, রাজ, ওয়ানস আপন এ টাইম ইন মুম্বাই প্রভৃতি ছবির কৃতি অভিনেত্রী কঙ্গনার অভিনয় জীবনে আরেকটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হবে ‘রাঙ্গুন’ ছবিটি- এ কথা নির্দ্বিধায় বলে দেয়া যায়। ‘রাঙ্গুন’ ছবিতে মিস জুলিয়া চরিত্রটি রূপায়নের জন্য কঙ্গনাকে প্রচ- পরিশ্রম করতে হয়েছে। তার বিপরীতে দেখা যাবে বলিউডের দুই জনপ্রিয় তারকা অভিনেতা সাইফ আলি খান এবং শহিদ কাপুরকে। সাইফ অভিনয় করেছেন ব্রিটিশ আর্মি অফিসার রুসি বিলিমোরিয়া চরিত্রে। আর শহিদ কাপুর অভিনয় করেছেন নওয়াব মালিক চরিত্রে। চিত্রনির্মাতা বিশাল ভারদ্বাজ ২০০৬ সালে ‘ওমকারা’ ছবিটি নির্মাণের পরপরই এ ছবিটির শুটিং শুরু করতে চেয়েছিলেন। তবে অজ্ঞাত কারণে ছবিটির নির্মাণকাজ পিছিয়ে যায় তখন। সেই সময়ে ছবিটির নামকরণ করা হয়েছিল ‘জুলিয়া’। এ ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন ম্যাথুরবিনস, যিনি বিশাল ভারদ্বাজের ‘সাত খুন মাফ’ ছবিটির কাহিনী চিত্রনাট্য তৈরির কাজ করেছেন যৌথভাবে। ২০১৫ সালের ১৮ নবেম্বর ভারতের অরুণাচল প্রদেশে ‘রাঙ্গুন’ ছবির শুটিং এ অংশ নিয়েছিলেন। তবে মাঝপথে ছবির কাজ থেমে যায় এ ছবির প্রধান তারকা শহিদ কাপুর এবং একজন জাপানি অভিনেতার শুটিং ইনজুরির কারণে। কঙ্গনা রানাওত ‘রাঙ্গুন’ ছবিতে তার অভিনীত মিস জুলিয়া চরিত্রটি রূপায়নের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং মনোভাব দেখিয়ে পরিচালক বিশাল ভারদ্বাজের আস্থা ও সন্তুষ্টি অর্জন করেছেন। কঙ্গনা অভিনেত্রী হিসেবে কতটা নিষ্ঠাবান তা আরেকবার প্রমাণ করেছেন ‘রাঙ্গুন’ ছবিতে। মিস জুলিয়া চরিত্রটি রূপায়নের আগে কঙ্গনা আমেরিকার নিউইয়র্ক গেছেন। অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে গবেষণা করতে নিউইয়র্ক ছাড়াও মেক্সিকো পর্যন্ত গেছেন।
×