ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন বিচার দফতরের আইনজীবীকে আপীল আদালতের জেরা

মুসলমানরা কি বৈষম্যের শিকার

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মুসলমানরা কি বৈষম্যের শিকার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে স্থগিতকরণ নিয়ে শুনানির সময় এক আপীল কোর্ট উভয়পক্ষের আইনজীবীদের জোরালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ফেডারেল আপীল কোর্টের বিচারকরা ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ বৈষম্যমূলক কিনা বিচার দফতরের এক আইনজীবীকে সেই প্রশ্ন করেন। তারা সন্ত্রাস প্রবণ দেশগুলো থেকে লোকজনের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা কিভাবে অসাংবিধানিক হতে পারে, তা ব্যাখ্যা করতে ওই আদেশের বিরুদ্ধে লড়াইরত দুটি অঙ্গরাজ্যের এ্যাটর্নির ওপর চাপ দেন। আদালতের রুলিং দিন কয়েকের মধ্যেই প্রত্যাশা করা হচ্ছে। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, বিবিসি ও ইয়াহু নিউজের। অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণভাবে স্থগিত রেখে সিয়াটলের এক বিচারকের রুলিং কেন স্পষ্টতই ব্যাপক ছিল না, সিনিয়র সার্কিট জর্জ রিচার্ড ক্লিফটন ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের এ্যাটর্নিকে সেই প্রশ্ন করেন। সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের লোকজন ও সব শরণার্থীর ওপর প্রেসিডেন্টের আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা ওয়াশিংটনে অঙ্গরাজ্যের বিচারকের জন্য ভুল হয়েছে এ মর্মে রুলিং দিতে ট্রাম্প প্রশাসন আপীল আদালতের প্রতি আবেদন জানায়। মার্কিন বিচার দফতরের স্পেশাল কাউন্সিল আসস্ট ফ্লেন্টজে বলেন, কংগ্রেস নির্দিষ্ট শ্রেণীর বিদেশীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ স্থগিত রাখার কর্তৃত্ব স্পষ্টতই প্রেসিডেন্টকে দিয়েছে। তিনি নাইনথ ইউএস সার্কিট কোর্ট অব আপীলের তিনি বিচারক প্যানেলের কাছ থেকে তীব্র জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হন। ট্রাম্প লিবারেল ঘেঁষা সান ফ্রান্সিস্কোর আপীল আদালতে কঠিন লড়াইয়ের সম্মুখীন। তিন বিচারকের মধ্যে দু’জন সাবেক ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ও বারাক ওবামা কর্তৃক এবং একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ কর্র্তৃক নিযুক্ত হন। এ আপীল আদালত যা-ই সিদ্ধান্ত নিক না কেন, মামলাটির সম্ভবত শেষ পর্যন্ত সুপ্রীমকোর্টেই নিষ্পতি হবে। মিনেসোটা ও ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্য দুটি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা আপীল জজদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিচার দফতরই প্রথমে বক্তব্য পেশ করেন। আইনজীবী ফ্লেন্টজে বলেন, প্রেসিডেন্টের ২৭ জানুয়ারির নির্বাহী আদেশ মার্কিন সংবিধানের অধীনে বৈধ। তিনি বলেন, কে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে পারবে তা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কংগ্রেস প্রেসিডেন্টকে প্রদান করেছে। নিষেধাজ্ঞায় প্রভাবিত সাতটি দেশ ইরাক, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ঝুঁকির সৃষ্টি করছে বলে প্রমাণ চাওয়া হলে ফ্লেইজে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কিছু সংখ্যক সোমালি আল শাবান গ্রুপের সঙ্গে জড়িত ছিল। এরপর ওয়াশিংটনের পক্ষে এক আইনজীবী আদালতে বলেন, আদেশটি স্থগিত রাখায় মার্কিন সরকারের কোন ক্ষতি হয়নি। সলিসিটর জেনারেল নেয়া পারসেল বলেন, নিষেধাজ্ঞার ফলে হাজার হাজার অধিবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওয়াশিংটনে আসার চেষ্টা করেছে এমন ছাত্রদের আগমন বিলম্বিত হয়েছে। অন্যরা বিদেশের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে পারেনি। বিচারক ক্লিফটন প্রশ্ন করেন, যদি নিষেধাজ্ঞাটি বিশ্বের মুসলিমদের শতকরা মাত্র ১৫ ভাগকে প্রভাবিত করে থাকে, তবে তা বৈষম্যমূলক হবে কি? সোমবার রাতে বিচার দফতরের জারি করা ১৫ পৃষ্ঠার এক ব্রিফিংয়ে নির্বাহী আদেশটি ধর্মের বিষয়ে নিরপেক্ষ বলে যুক্তি দেখানো হয়। কিন্তু মঙ্গলবার আদালতে পারসেল মুসলিম নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে ট্রাম্পের নির্বাচনী বিবৃতিগুলোর উদ্বৃতি দেন। ক্লিফটন বলেন, মাত্র সাতটি দেশ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে, এবং ওবামা প্রশাসন ও কংগ্রেস সন্ত্রাসী হুমকির কারণে এসব দেশের লোকজনকে ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে বাধা নিষেধ আরোপ করা উচিত বলে বিবেচনা করেছিলেন।
×