ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান

সরকারী-বেসরকারী সব সেক্টরেই কম বেশি দুর্নীতি আছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সরকারী-বেসরকারী সব সেক্টরেই কম বেশি দুর্নীতি আছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুধু সরকারী অফিস নয়, প্রায় সকল বেসরকারী প্রতিষ্ঠানেই দুর্নীতি রয়েছে বলে দাবি করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। একই সঙ্গে সমাজ থেকে দুর্নীতি দমন করতে নাগরিকদের মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর আয়োজনে ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে এনজিওদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সরকারী-বেসরকারী সব সেক্টরেই দুর্নীতির কম-বেশি প্রকোপ রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাদের উচিত আমরা যেটা বিশ্বাস করি সেটা বলা। আমাদের দেশে অনেকে আছেন তিনি যেটা বিশ্বাস করেন সেটা বলেন না বরং যেটা বলেন সেটা বিশ্বাস করেন না। এ জাতীয় মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন করাও কঠিন কাজ। এজন্য কমিশন ক্ষুদ্র সামর্থ্য নিয়ে আগামী প্রজন্মের মধ্যে সততা ও নিষ্ঠাবোধ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন প্রেরণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ইকবাল মাহমুদ বলেন, বিগত বছরে প্রায় ৪ শতাধিক ব্যক্তিকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেকে বলেন, কমিশনের এ দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের প্রেক্ষিতে ঘুষ চাওয়ার প্রবণতা কমলেও ঘুষের পরিমাণ বেড়ে গেছে। সত্যিই দুর্নীতি দমন অসম্ভব নয় কিন্তু কঠিন। এছাড়া ঘুষের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ঘুষ প্রদানের আগেই কমিশনকে জানানো হলে ঘুষ গ্রহণকারীকে ফাঁদ পেতে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সরকারী কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির পরও যারা ঘুষ নেন তাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে কমিশনে অভিযোগ দিতে হবে। ঘুষের অভিযোগ পেলে রুই-কাতলা কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, কমিশনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে আসুন। সে যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে ঘুষের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে কমিশন তাকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না। সে যদি ক্ষমতাশীল ব্যক্তিও হন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হলে চারটি সদিচ্ছা প্রয়োজন। যেমন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করা ও তরুণদের দুর্নীতি প্রতিরোধে সম্পৃক্ত করা। আর এ চারটি কাজ করতে হবে সরকারকে। এছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের একার পক্ষে কাজ করাও সম্ভব নয়। এজন্য সরকারকে তার নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করতে হবে। এছাড়া প্রতিটি এনজিও অফিসে একটি করে দুর্নীতি জমা দেয়ার বাক্স থাকতে হবে। নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশি কবীর বলেন, আমাদের দুর্নীতির চিত্র আগের চেয়ে কমে গেছে। এজন্য আমাদের হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। কারণ প্রকাশ্যে দুর্নীতি না হলেও ভেতরে ঠিকই দুর্নীতি হচ্ছে। তাই দুর্নীতির যে কোন তথ্য থাকলে সেটা অবশ্যই দুদককে দ্রুততার সঙ্গে জানাতে হবে। কেননা দুর্নীতি প্রতিরোধ না করলে কখনও দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মোঃ আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, এনজিও ব্যক্তিত্ব ফারাহ্ কবীর, এ্যারোমা দত্ত, রহিমা সুলতানা কাজল, ফিলিপ বিশ্বাস, সিরাজুল ইসলাম, সজীব বিশ্বাস প্রমুখ।
×