ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে আলোচনা

জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ রুখতে সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটাতে হবে

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ রুখতে সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটাতে হবে

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা বলেছেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। মাত্র ৮ বছরেই দেশের সার্বিক চিত্র পাল্টে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ষড়যন্ত্র থেমে নেই, জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ বিষাক্ত নিঃশ্বাস ফেলছে। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে এসব জঙ্গীবাদ দমন করা যাবেন না। এজন্য সারাদেশে একযোগে সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটাতে হবে, পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনতে হবে। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, সরকারী দলের নিজাম উদ্দিন হাজারী, এ কে এম ফজলুল হক, সফুরা বেগম, এ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, সৈয়দা সায়রা মহসীন, বেগম সাবিনা আক্তার তুহিন এবং জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও নুরুল ইসলাম তালুকদার। আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন দেশের চিকিৎসক ও রোগীদের সুরক্ষায় নতুন আইন প্রণয়নের করা হচ্ছে জানিয়ে বলেন, এই আইনটি প্রণয়ন হলে রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসকরাও প্রটেকশন পাবে। তিনি বলেন, গোটা দেশের চিত্রই এখন পাল্টে গেছে। এখন গ্রাম আর অন্ধকারাচ্ছন্ন নেই, দেশের মানুষের হাতে হাতে এখন মোবাইল, ইন্টারনেট। গ্রামে আর কুঁড়ে ঘর কিংবা কাঁচা রাস্তা দেখা যায় না। সর্বত্রই উন্নয়নের ছোঁয়া। মাত্র ৮ বছরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের এই চিত্র পাল্টে দিয়েছেন। তাঁর এই উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, কেউই রুখতে পারবে না। জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল বঙ্গবন্ধুকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করেন। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশের সকল মানুষের নেতা, পুরো বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিন মানুষের নেতা। তাই তাঁকে বিশেষ দলের গ-ির মধ্যে রাখা ঠিক নয়। তিনি বলেন, অতীতের বিরোধী দলের মতো জাতীয় পার্টি কথায় কথায় সংসদ বর্জন, অশালীন গালিগালাজ দেয়নি। আন্দোলনের নামে হরতাল-অবরোধ কিংবা অগ্নিসন্ত্রাস চালায়নি। তিন বছর এসব করিনি বলেই কিছু জ্ঞানপাপী আমাদের সমালোচনা করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, জঙ্গী-সন্ত্রাসীরা বিষাক্ত নিঃশ্বাস ফেলছে। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে জঙ্গীবাদ দমন করা যাবে না, সারাদেশে সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটাতে হবে, পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনতে হবে। নিজাম উদ্দিন হাজারী তাঁকে নিয়ে দৈনিক অবজারভার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, পত্রিকাটির সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী নৌকার গণজোয়ারের মধ্যেও নির্বাচনে ফেনী থেকে জিততে পারেননি। গোলাম আযমের নাগরিকত্বের জন্য তিনি স্বাক্ষর করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা হয়ে পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স নিয়ে তিনি উল্টো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেই লিখছেন। শোনা যাচ্ছে আরও একশ’ এমপির চরিত্র নাকি হনন করা হবে। আমি ড্রাগ ডিলার এটা যদি ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রমাণ করতে পারেন, তবে আমি জুতার মালা গলায় দিয়ে সংসদ ছেড়ে চলে যাব। তাঁর প্রতি অনুরোধ- হয় সাংবাদিকতা করুন, নতুবা উপদেষ্টার পদ ছাড়–ন। রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হবে বিপজ্জনক উদারহণ, বাদল সংসদ রিপোর্টার ॥ অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নোয়াখালীর ঠেঙ্গার চরে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হবে বাংলাদেশের ফরেন পলিসির জন্য একটি ‘বিপজ্জনক উদাহরণ’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সংসদ সদস্য মইন উদ্দীন খান বাদল। সোমবার রাতে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের সমালোচনা করে বলেন, পাপুয়া নিউগিনিতে অস্ট্রেলিয়া ১২শ’ থেকে ১৪শ’ লোক রেখেছিল। যাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত বিতর্ক হয়েছে। ট্রাম্প অত্যন্ত আশালীনভাবে টেলিফোন কেটে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের ইস্যুতে অনেক ডিপ্লোম্যাটিক স্টেপ নিচ্ছি। কিন্তু সব ডিপ্লোম্যাটিক স্টেপের পরিশেষে যদি দেখা যায়, রোহিঙ্গারা আমাদের কাঁধের উপরেই সওয়ার হয়ে গেল। তাহলে এই ডিপ্লোম্যাসির কি মানে দাঁড়াল? তিনি বলেন, মিয়ানমারের একটা ইভিল (খারাপ) উদ্দেশ্য আছে। তারা রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে সমূলে উৎখাত করে বাইরে পাঠিয়ে দিতে চায়। এদের তারা স্বীকারও করছে না। শুধু অন্যায়ভাবে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। উদ্ধাস্তু সমস্যা নিরসনে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী আমরা এই বিষয়টিকে পাকাপোক্ত না করে উল্টো তাদের আমরা ঠেঙ্গার চরে আনছি। এখন ঠেঙ্গার চরে ওদের বসতি দিলে, রোহিঙ্গারা একবার ঢুকলে, এই বার্মিজ মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন তুলবে- আপনাদের লোক আপনারা নিয়ে গেছেন। আপনারা বসতি করে দিয়েছেন। আমরা এসবের কিছু জানি না। তিনি বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে না, তাদের মানবিকতার পক্ষে। সঙ্গে সঙ্গে এটাও বলতে চাই, ১২’শ লোক নিতে আমেরিকার মতো দেশ অস্বীকার করেছে। আর আপনারা ৬৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে ঠেঙ্গার চরে নিয়ে আসছেন। তাহলে এতদিন যে বিতর্ক করলেন, সেটি কোথায় গিয়ে দাঁড়াল। আমি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, এটা বাংলাদেশের ফরেন পলিসির জন্য একটি বিপজ্জনক উদাহরণ সৃষ্টি হবে।
×