ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সানজামুলের ৯ উইকেট

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সানজামুলের ৯ উইকেট

স্পোর্টস রিপোর্টার॥ ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট আসর বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) দ্বিতীয় রাউন্ডের দুটি ম্যাচই শেষ হয়েছে তিন দিনে। সোমবার ম্যাচের তৃতীয় দিনেই জয় তুলে নিয়েছে প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল ও বিসিবি উত্তরাঞ্চল। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে উত্তরাঞ্চল ইনিংস ও ৫০ রানে হারিয়েছে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলকে। বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলামের বিস্ময়কর নৈপুণ্যে এ অভাবিত জয় তৃতীয় দিনেই তুলে নেয় উত্তরাঞ্চল। সানজামুল দ্বিতীয় ইনিংসে একাই তুলে নেন ৯ উইকেট। আর সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকের ঘূর্ণিতে দক্ষিণাঞ্চল ইনিংস ও ৪৪ রানে হারায় ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলকে। ম্যাচের দু’দিনেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল পূর্বাঞ্চল। প্রথম রাউন্ডে দারুণ জয় তুলে নিয়ে এবার বিসিএল শুরু করেছিল তারা। কিন্তু প্রথম ইনিংসে ১৪৪ রানে ধসে পড়ে ফলোঅনে পড়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে তারা তুলেছিল ৫ উইকেটে ৭৪ রান। তখনই বোঝা যাচ্ছিল নিশ্চিত পরাজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। পূর্বাঞ্চলের প্রথম ইনিংসে ধস নামিয়েছিলেন দক্ষিণাঞ্চল পেসার রুবেল হোসেন। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের ওপর ঘূর্ণি ছোবল হানেন রাজ্জাক ও সোহাগ গাজী। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে পূর্বাঞ্চল। অধিনায়ক অলক কাপালি ও আবুল হাসান রাজু কিছুটা লড়াই করেছেন। আবুল ৮৯ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন। আর অলকের ব্যাট থেকে আসে ৭ চারে ৪৮ রান। মাত্র ২১৫ রানেই গুটিয়ে যায় পূর্বাঞ্চলের দ্বিতীয় ইনিংস। ৪৪ রান দিয়ে রাজ্জাক ৬টি ও সোহাগ ২টি উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণাঞ্চল ৪০৩ রান করেছিল। চট্টগ্রামে মধ্যাঞ্চলের যুদ্ধটা ছিল সানজামুলের বিরুদ্ধে। এ বাঁহাতি স্পিনার একাই কোণঠাসা করেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। দ্বিতীয় দিনশেষে অবশ্য এতটা বাজে পরিস্থিতি হবে টের পাওয়া যায়নি। কারণ, উত্তরাঞ্চলের করা ৫০২ রানের বিশাল সংগ্রহের জবাবে দিনশেষে ৩ উইকেটে ১২০ রান তুলে ফেলেছিল তারা। কিন্তু তৃতীয় দিন তাদের অন্যতম শত্রুতে পরিণত হলেন সানজামুল। আর ১১৩ রান করতেই বাকি ৭ উইকেট হারাল তারা। পেসার ফরহাদ রেজা ৪টি ও সানজামুল ৩টি উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দেন তাদের প্রথম ইনিংস ২৩৩ রানে। সাইফ হাসান সর্বোচ্চ ৯৩ রান করেন ১৬৪ বলে ১১ চার ও ২ ছয়ে। ২৬৯ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে মধ্যাঞ্চল। ফলোঅনে পড়ার চাপে মাত্র ২৯ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে তারা। শুরু থেকেই সানজামুল হামলে পড়েন। নুরুল হাসান সোহান বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছেন এই বিপর্যয়েও সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে। তিনি ১১১ বলে ১৩ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৩ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলেন। কিন্তু বাকিদের ব্যর্থতা আর সানজামুলের ভয়ানক বোলিংয়ে ২১৯ রানেই থমকে যায় মধ্যাঞ্চলের দ্বিতীয় ইনিংস। ২৯.৪ ওভারে ৮৫ রান দিয়ে ৯ উইকেট নেন সানজামুল। ম্যাচে ১২ উইকেট। স্কোর ॥ দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস-৪০৩/১০; ৯৬.৫ ওভার (বিজয় ৮৯, জিয়া ৭২, তুষার ৬২; এবাদত ৩/৮৫, আবুল ২/৮৪, খালেদ ২/৮৬)। পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংস-১৪৪/১০; ৪৩ ওভার (আবুল ৪৮, ইয়াসির ৪২, রুবেল ৫/২২, মুস্তাফিজ ২/৩২, সোহাগ ২/৩৯) ও দ্বিতীয় ইনিংস দ্বিতীয় দিনশেষে- ৭৪/৫; ৩৭ ওভার (ইরফান ২৭, অলক ১০*) এবং তৃতীয় দিনশেষে-২১৫/১০; ৭৭.৩ ওভার (আবুল ৬৪, অলক ৪৮, সাকলাইন ২৬; রাজ্জাক ৬/৪৪, সোহাগ ২/৬৬)। ফল ॥ দক্ষিণাঞ্চল ইনিংস ও ৪৪ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ আব্দুর রাজ্জাক (দক্ষিণাঞ্চল)। উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস-৫০২/১০; ১৪১.১ ওভার (জুনায়েদ ১৮১, ধীমান ৬১, নাসির ৫৫, আরিফুল ৫০; তাইবুর ৩/৩৩, শহীদুল ৩/১১৪)। মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস-দ্বিতীয় দিনশেষে ১২০/৩; ৩৫ ওভার (সাইফ ৫২*, মার্শাল ২৭) ও তৃতীয় দিন-২৩৩/১০; ৬১.১ ওভার (সাইফ ৯৩, নুরুল ৩৭, শাহাদাত ২৬; ফরহাদ ৪/৩৮, সানজামুল ৩/৬৪) এবং দ্বিতীয় ইনিংস-২১৯/১০; (নুরুল ১১৩, মার্শাল ৩২; সানজামুল ৯/৮৫)। ফল ॥ উত্তরাঞ্চল ইনিংস ও ৫০ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ সানজামুল ইসলাম (উত্তরাঞ্চল)।
×