ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিলেন মা ও ছেলে

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নাটোরে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিলেন মা ও ছেলে

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ৬ ফেব্রুয়ারি ॥ লেখাপড়ার কোন বয়স নেই। ইচ্ছা থাকলে সব বয়সেই লেখাপড়া করে ডিগ্রী নেয়া যায়। আবারও তেমনটি প্রমাণ করলেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার মলি রানী। শুধু তাই নয়, মা-ছেলে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জন্ম দিলেন আরেকটি রেকর্ডের। শিক্ষানুরাগী মা-ছেলের এমন কীর্তিতে এলাকায় রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে। কঠিন সংসার ধর্ম পালনের পাশাপাশি ৩৫ বছর বয়সে মলি রানীর এ প্রচেষ্টাকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। চলতি বছর কারিগরি শাখা থেকে রবিবার যথাসময়ে বাগাতিপাড়া ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে মা মলি ও তার বড় ছেলে মৃন্ময় কুমার কু-ু ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেন। মলি রানী বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের দেবব্রত কুমার মিন্টুর সহধর্মিণী। জানা গেছে, নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুরের অসিত কু-ুর মেয়ে মলি রানী নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় মিন্টুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। অল্প বয়সে বিয়ে আর সংসারের চাপে পরে আর স্কুলের আঙ্গিনায় পা রাখা হয়নি তার। সে সময় মনে প্রচ- কষ্ট পেলেও লেখাপড়ার আগ্রহকে সযতেœ মনের গভীরে লালন-পালন করতেন। সংসার জীবনের একপর্যায়ে তাদের কোলজুড়ে আসে দুটি পুত্রসন্তান। ছোট ছেলে পাপন কু-ু তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। দুই ছেলেকে মানুষ করতে গিয়ে তিনি নিজেকে নতুন রূপে আবিষ্কার করেন। তিনি বুঝতে পারলেন নিজে লেখাপড়া না করলে সন্তানদের মানুষ করা সম্ভব নয়। স্বামী দেবব্রত কুমার মিন্টু লেখাপড়ার প্রতি স্ত্রীর প্রবল আগ্রহ ও মনোভাব গভীরভাবে লক্ষ্য করেন। নিজে সামান্য মিষ্টির দোকানদার হয়েও পিছিয়ে যাননি। মলি রানীকে যতটা সম্ভব সাহায্য করেন। স্বামীর সহায়তায় তিনি বাগাতিপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কারিগরি শাখায় ড্রেস মেকিং এ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডে ভর্তি হন। চলতি বছর তিনি ও বড় ছেলে মৃন্ময় কুমার কু-ু বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কারিগরি শাখায় বিল্ডিং মেনটেনেন্স ট্রেডে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এছাড়া তারা একই বই পড়ে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। সারাদিন সংসারের কাজ সেরে রাতজেগে পড়ালেখা করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েও ভাল পরীক্ষা দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন মলি রানী।
×