ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলা প্রথম পত্র

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

আজমাল হোসেন মামুন সহকারী শিক্ষক, হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চাপাইনবাবগঞ্জ। মোবাইল : ০১৭০৪-২৪৪০৮৯ আজ ‘মানবধর্ম’ কবিতা থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরসহ ছাপা হলো। ২। চার দশক ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার বরেন্দ্রা গ্রামের হিন্দু-মুসলমান ও আদিবাসী জনগোষ্ঠিকে একসূত্রে বেঁধে রেখেছে ‘শুতিহার’ দিঘি। দিঘির আয় থেকে নির্মাণ হয়েছে বিদ্যালয়, মন্দির,মসজিদ, ঈদগাহ, শ্মশান, কবরস্থান এবং রাস্তাঘাট। তারা সবাই মিলে মিশে বসবাস করে। ক. লালন শাহ্-এর গুরুর নাম কী? খ. ‘জাতের কী রূপ’ বলতে লালন শাহ্ কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকে ‘মানবধর্ম’ কবিতার কোন আদর্শবোধের পরিচয় মিলে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. ‘উদ্দীপকের মূলভাব ও ‘মানবধর্ম’ কবিতার মূলভাব যেন একই ধারায় প্রবাহিত।’ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। উত্তর: ক. লালন শাহ্-এর গুরুর নাম সিরাজ সাঁই। খ. জ্তের কী রূপ বলতে লালন শাহ্ মানুষে মানুষে আমাদের সমাজে যে পার্থক্য রয়েছে, মূলত তাকেই বুঝিয়েছেন। লালন শাহ্ জাত-পাতে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে মানবতায়। মানুষের মাঝে কোন পার্থক্য নেই। তাঁর কাছে সবাই সমান। সবার রক্ত লাল। সবাই একইভাবে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে। মৃত্যুর স্বাদ সবাই গ্রহণ করে। তাই তিনি জাতের মধ্যে কোন পার্থক্য দেখেন নি। তিনি বড় করে দেখেছেন মানবধর্মকে। গ. ধর্ম বা সম্প্রদায়গত পরিচিতির চেয়ে মানুষ হিসাবে পরিচয়টিই বড় যা উদ্দীপকে ‘মানবধর্ম’ কবিতার এ আদর্শবোধের পরিচয় মেলে। পৃথিবীতে প্রত্যেক মানুষই একে অপরের কল্যাণের জন্য জন্মগ্রহণ করেছে। তাই মনুষ্যধর্মই বড় ধর্ম মানুষের কাছে। ‘মানবধর্ম’ কবিতায় লালন শাহ্ মানুষকে স্থান দিয়েছেন সবকিছুর ওপরে। মানুষের মূল ধর্মই হচ্ছে মানবধর্ম। তিনি ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় বা জাতের ভেদে বিচার করেননি। জাত ধর্মের বিভেদ নিজেদের সৃষ্টি। জন্ম ও মৃত্যুর সময় কারো জাতের কোন চিহ্ন থাকে না। এখানে তিনি প্রকাশ করেছেন, মানুষ জাত ও ধর্মভেদের ঊর্ধ্বে। উদ্দীপকের বরেন্দ্রা গ্রামের হিন্দু-মুসলমান ও আদিবাসী মানুষ ‘শুতিহার’ দিঘির আয় থেকে নির্মাণ করেছেন বিদ্যালয়, মন্দির, মসজিদ, ঈদগাহ, শ্মশান, কবরস্থান এবং রাস্তাঘাট। যার ফলে উন্নয়ন হয়েছে এলাকাবাসীর। সবাই মিলে সুফল ভোগ করছে। তাদের মধ্যে কোন প্রকার ভিন্নতা দেখা যায় না। সকলের জন্য সকল মানুষ এ কথাটি উদ্দীপকে ফুটে ওঠেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও উন্নয়নের সেতু বন্ধনই প্রমাণ করে মানবধর্ম শ্রেষ্ঠ ধর্ম। ‘মানবধর্ম’ কবিতায় লালন শাহ্ মানুষকে শুধু মানুষ পরিচয়ে দেখেছেন। তাঁর কাছে ধর্ম-বর্ণ ও জাত সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানুষ। তিনি ধর্মভেদে বিশ্বাসী নন। তাঁর কাছে মানুষ একমাত্র মানুষ হিসেবেই গণ্য হয়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে আমরা ‘মানবধর্ম’ কবিতার এ আদর্শবোধেরই পরিচয় পাই। ঘ. উদ্দীপকের ‘মূলভাব ও ‘মানবধর্ম’ কবিতার মূলভাব যেন একই ধারায় প্রবাহিত মন্তব্যটি যথার্থ। উদ্দীপকে দেখা যায়, বরেন্দ্রা গ্রামের হিন্দু-মুসলমান ও আদিবাসী জনগোষ্ঠি মিলেমিশে বসবাস করে । তাদের কাছে ধর্ম-বর্ণ ও জাতের পার্থক্য নেই। তারা গ্রামের ‘শুতিহার’ দিঘির আয় থেকে নির্মাণ করেছে মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহ, শ্মশান, কবরস্থান ও রাস্তাঘাট। এসব সকল মানুষের কল্যাণের জন্যই নির্মাণ করেছে। ফলে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠেছে সম্প্রীতির বন্ধন। তারা সবাই অসম্পাদিয়কতায় বিশ্বাসী। তাদের কাছে মানুষ পরিচয়ই আসল। জাত-, ধর্ম, বর্ণ সম্প্রদায় এসবের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই গ্রামটিতে। এখানে প্রধান হয়ে ওঠেছে মানবধর্ম। ঠিক একইভাবে ‘মানবধর্ম’ কবিতায় আমরা দেখতে পাই, ধর্ম বা সম্প্রদায়গত পরিচয়ের চেয়ে মানুষ হিসেবে পরিচয়টা হচ্ছে বড়। লালন শাহ্ জাত-পাত বা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন নি। তাঁর কাছে জাতের কোন গুরুত্ব নেই। জন্ম ও মৃত্যুর সময় মানুষের গলায় তসবি বা জপমালা থাকে না। মানুষ জাত ও ধর্মভেদের যে পার্থক্যের কথা বলে লালন শাহ্ তা বিশ্বাস করেন নি। তাঁর কাছে মানবধর্মই আসল ধর্ম বলে বিবেচিত। পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপক ও ‘মানবধর্ম’ কবিতায় মানুষকে মানুষ পরিচয়ে দেখানো হয়েছে। মানুষের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সবার এক ধর্ম যা মানবধর্ম হিসেবে পরিচিত। তাই উদ্দীপক ও ‘মানবধর্ম’ কবিতার মূলভাব যেন একই ধারায় প্রবাহিত’ মন্তব্যটি যর্থার্থ । বহুনির্বাচনি প্রশ্ন: ১১। লালন শাহ্ কত সালে মৃত্যুবরণ করেন? ক. ১৭৭২ সালে খ. ১৭৯০ সালে গ. ১৮৯০ সালে ঘ. ১৮৯২ সালে ১২। গলায় মালা পরে কারা? ক. হিন্দুরা খ. মুসলমানরা গ. খ্রিশ্চানরা ঘ. বৌদ্ধরা ১৩। মানুষ সবাই সমান- এটি বোঝা যায় কখন? ক. জন্মের কালে খ. মৃত্যুর পরে গ. জন্ম-মৃত্যু কালে ঘ. জন্মের আগে ১৪।‘মানবধর্ম’ কবিতার চরণ সংখ্যা কত? ক. দশ খ. বারো গ. চৌদ্দ ঘ. ষোল ১৫। লালনের জাত নিয়ে সবার জিজ্ঞাসার কারণ- র, লালন দর্শনের গভীরতা দেখে রর. লালনের আধ্যাত্মভাব ও মরমি রসব্যঞ্জনার জন্য ররর. লালনের গানে অসাম্প্রদায়িকতা প্রকাশের জন্য নিচের কোনটি সঠিক? ক. র খ. রর গ. র ও ররর ঘ. র,রর ও ররর ১৬। ‘মূলে এক জল’ কথাটির মর্মার্থ কোনটি? ক. সবাই ঈশ্বরের সৃষ্টি খ. সকল জীব সমান গ. মানুষে মানুষে ভিন্নতা নেই ঘ. মানুষ জাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৭ ও ১৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও: ‘শুন হে মানুষ ভাই সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।’ ১৭। উদ্দীপকে ‘মানবধর্ম’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে ওঠেছে- ক. জাতি ভেদের কথা খ. মানুষের প্রতি ভালোবাসা গ. জলের পার্থক্য ঘ. ধর্মের পার্থক্য ১৮। উদ্দীপকের কবি ও ‘মানবধর্ম’ কবিতার লালন শাহ্ এর চেতনাগত অভিন্নতা বিদ্যমান- র, মানবধর্মে বিশ্বাসী হওয়ায় রর. মানবতাবোধ ধারণ করায় ররর. গভীর দর্শনতত্ত্বে নিচের কোনটি সঠিক? ক. র খ. রর গ. র ও রর ঘ. র,রর ও ররর ১৯। ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’- এখানে ‘লালন’ বলতে কোন বিষয়টি নির্দেশ করছে? ক. বাউল লালনকে খ. মানুষ লালনকে গ. মরমি কবি লালনকে ঘ. গায়ক লালনকে ২০। ‘মানবধর্ম’ কবিতায় ‘জেতের’ শব্দটি কতবার ব্যবহৃত হয়েছে? ক. ২ খ. ৩ গ. ৪ ঘ. ৬ উত্তর: ১১. গ ১২.ক ১৩.গ ১৪. গ ১৫. ঘ ১৬. ক ১৭. খ ১৮. গ ১৯.খ ২০.গ
×