ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ দশ ম্যাচে জয় একটিতে, মানতে পারছেন না কোচ জার্গেন ক্লপ, সতর্ক কন্তে, কিংবদন্তি হতে চান মরিনহো

ইপিএলে লিভারপুলের হয়েছেটা কী?

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ইপিএলে লিভারপুলের হয়েছেটা কী?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোচ হিসেবে যোগ দেয়ার পরই লিভারপুলের চেহারা বদলে ফেলেন জার্গেন ক্লপ। চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগেও উড়ছিল অলরেডরা। লিভারপুলের অনেক সমর্থক আবার শিরোপা জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই খেই হারিয়ে ফেলে জার্গেন ক্লপের শিষ্যরা। বিশেষ করে নতুন বছরের শুরু থেকেই দেখা মেলে অচেনা এক লিভারপুলের। লীগ কাপের সেমিফাইনাল এবং ইংলিশ ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয় তারা। শনিবার প্রিমিয়ার লীগে হাল সিটির কাছেও ২-০ গোলে লজ্জাজনকভাবে হেরে যায় লিভারপুল। ২০১৭ সালে খেলা দশ ম্যাচ থেকে জয় মাত্র একটিতে। লীগ কাপ এবং এফএ কাপ থেকে বিদায়ের পর প্রিমিয়ার লীগেও সময়টা ভাল কাটছে না লিভারপুলের। টানা পাঁচ ম্যাচ ধরে জয়শূন্য ইংল্যান্ডের অন্যতম সফল দলটি। আগের চার ম্যাচে তিনটিতে ড্র করার সঙ্গে পয়েন্ট তালিকায় নিচের দিকে থাকা সোয়ানসি সিটির কাছে হার মানে তারা। শনিবার হাল সিটির মাঠে প্রথমার্ধে পুরোপুরি নিষ্প্রভ ছিল লিভারপুল। তেমন কোন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি অতিথিরা। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের ভুল আর গোলরক্ষক সিমোন মিগনোলেতের ব্যর্থতায় ৪৪ মিনিটে এগিয়ে যায় হাল সিটি। ভিয়ারিয়াল থেকে ধারে খেলতে আসা সেনেগালের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার আলফ্রেদ দিয়ায়ে অভিষেক ম্যাচেই গোল করে নায়ক বনে যান। দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিকদের চেপে ধরে লিভারপুল। প্রায় ৮০ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখা দলটি একের পর এক সুযোগ তৈরি করলেও হাল সিটির জমাট রক্ষণ ভাঙ্গতে পারেনি। বরং ম্যাচের ৮৪ মিনিটে গোল করে হাল সিটির জয় নিশ্চিত করেন উমার নিয়াসি। এভারটন থেকে ধারে খেলতে আসা সেনেগালের এই স্ট্রাইকারেরও অলরেডদের জার্সিতে করলেন প্রথম গোল। দলের এই অবস্থা মেনে নিতে পারছেন না লিভারপুলের অভিজ্ঞ কোচ জার্গেন ক্লপ। তার মতে, ‘সার্বিক পারফর্মেন্স যেমনটা হওয়া উচিত ছিল তার কোন কিছুই হয়নি। এমনটা খেলার কোন অর্থই বুঝতে পারছি না।’ এরআগে দিনের প্রথম ম্যাচে আর্সেনালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করেছে চেলসি। তবে শিরোপা জয়ের পথে একধাপ এগিয়ে যাবার পরও চেলসির কোচ এ্যান্টনিও কন্তে তার খেলোয়াড়দের ওপর তীক্ষè নজর রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মূলত নিজের খেলোয়াড়ী জীবনের অভিজ্ঞতার কারণে শিরোপা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এতটুকু নির্ভার হতে চান না তিনি। জুভেন্টাসের খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে তিনি এমন অবস্থা থেকেও সরাসরি ছিটকে পড়তে দেখেছেন তার ক্লাবটিকে। তাই সাংবাদিকদের কন্তে বলেন, ‘আমি নিজে যেমন নির্ভার থাকতে চাই না, তেমনি খেলোয়াড়দের নির্ভার রাখতে চাই না। আমার স্কোয়াডে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অনেক খেলোয়াড় রয়েছে। নিজ নিজ ক্যারিয়ারে অনেক ম্যাচে জয়ের অভিজ্ঞতা তাদের আছে। তারা এটি ভাল করে জানে যে এখন পর্যন্ত শিরোপা তাদের হাতে ওঠেনি। এটি মনের মধ্যে থাকাটা সত্যি খুব জরুরী। যা তাদের সর্বোচ্চ সতর্কতার মধ্যে রাখবে। আমার খেলোয়াড়ী এবং কোচিং ক্যারিয়ারেও এমন অনেক শিরোপা জয় করেছি। হাতছাড়াও করেছি প্রচুর।’ লিভারপুলের ক্লপ, চেলসির কন্তে আর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মরিনহোÑ তিনজনই ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে সফল। তবে পোর্তো, চেলসি, ইন্টার মিলান ও রিয়াল মাদ্রিদে নিজেকে আইকন হিসেবে দেখা স্পেশাল ওয়ান ওল্ডট্র্যাফোর্ডেও একই মর্যাদা পেতে উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি হতে দৃঢ়প্রত্যয়ী তিনি। তাই শিরোপা জয়ের বিকল্প দেখছেন না সাবেক রিয়াল মাদ্রিদের এই কোচ। পর্তুগীজ মরিনহো তার কোচিং ক্যারিয়ারটা উপভোগ করছেন। ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোর হয়ে ঈর্ষণীয় সাফল্য উপহার দিয়ে ক্লাব ফুটবলে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। গত বছর দায়িত্ব নেন রেড ডেভিলদের। ম্যানইউ’র কোচ হিসেবে সাফল্যের চূড়ায় বসতে চান মরিনহো। তার অধীনে ইতোমধ্যেই এফএ কমিউনিটি শীল্ডের শিরোপা জিতেছে ক্লাবটি। অপেক্ষা এখন লীগ কাপের ফাইনালের। এ প্রসঙ্গে মরিনহো বলেন, ‘আমি আমার ক্লাবের কিংবদন্তি। পোর্তো, ইন্টার, চেলসির কিংবদন্তি। সত্যিই তাদের ইতিহাসের অংশ। রিয়াল মাদ্রিদেও ইতিহাসের অংশীদার ছিলাম। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসের অংশ, কারণ একটি রুমে আমার ছবি আছে যেখানে সকল কোচ রয়েছেন। কিন্তু একটি কমিউনিটি শীল্ড জিতেছি আর কিছুই না। তাই আগের চেয়ে কঠোর পরিশ্রম করছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ইতিহাস সংখ্যায় কথা বলে। এটা ট্রফির সংখ্যা দিয়ে তৈরি। আমার কোচিং ক্যারিয়ারের ইতিহাসে রয়েছে ২৩টি শিরোপা। এটা দ্বিতীয়, পঞ্চম হওয়া, কাপ হারানো, ফাইনালে হেরে যাওয়া দিয়ে তৈরি নয়। ইতিহাস তৈরি হয় বিজয় দিয়ে। আমাদের লীগ কাপ জেতার সুযোগ আছে। এফএ কাপের শেষ ষোলো এবং ইউরোপা লীগের শেষ ৩২-এ রয়েছি।’
×