ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেবর আটক

রূপগঞ্জে চুল কেটে, জুতার মালা পরিয়ে গৃহবধূ নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

রূপগঞ্জে চুল কেটে, জুতার মালা পরিয়ে  গৃহবধূ নির্যাতন

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ৫ ফেব্রুয়ারি ॥ রূপগঞ্জে লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে সালমা আক্তার সুমী নামে এক গৃহবধূকে এক মাস ঘরে আটক রেখে পাশবিক নির্যাতন চালায় স্বামী-সতীন, দেবরসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে গৃহবধূর চুল কেটে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে ও বেঁধে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। রবিবার দুপুরে উপজেলার তারাব এলাকা থেকে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত দেবরকে আটক করে পুলিশ। নির্যাতিত গৃহবধূ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় ১৫ বছর আগে তারাব এলাকার আরব আলীর ছেলে কোরবান আলীর সঙ্গে তারাব বাজার এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের মেয়ে মায়ার বিয়ে হয়। প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ছয় মাস আগে কোরবান আলী তারাব দক্ষিণপাড়া এলাকার জলহত মিয়ার মেয়ে সালমা আক্তার সুমীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই সতীন মায়া, স্বামী কোরবান আলী, দেবর শিপু, ফুফুশাশুড়ি সেলিসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন সালমা আক্তার সুমীর ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার এলাকায় বিচার-সালিশ হওয়ার পর কিছুদিন নির্যাতন বন্ধ ছিল। গত এক মাস ধরে ঘরে আটকে রেখে ফের নির্যাতন চালায়। রবিবার সকালে গৃহবধূ সালমা আক্তার সুমীর হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে প্রকাশ্যে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। একপর্যায়ে কাঁচি দিয়ে গৃহবধূর চুল কেটে ফেলা হয়। এছাড়া লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেয়া হয়। খবর পেয়ে গৃহবধূ সালমা আক্তার সুমীর মা তাসলিমা বেগম থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ নির্যাতিত গৃহবধূ সালমা আক্তার সুমীকে উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্ত দেবর শিপুকে আটক করা হয়। স্বামী-সতীনসহ অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। নির্যাতিত গৃহবধূ সালমা আক্তার সুমীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতিত সালমা আক্তার সুমীসহ পরিবারের লোকজন নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। যৌতুক না দেয়ায় বাড়ি থেকে বিতাড়িত ॥ রূপগঞ্জে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পাখি বেগম (২৮) নামে অপর এক গৃহবধূর ওপর নির্যাতন চালিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার সকালে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ইছাখালী মাঝিনা নদীর পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পাখি বেগম মাদারীপুর জেলার ভোলানাথপুর এলাকার রাহাতুল্লাহ কাজীর মেয়ে। পাখি বেগম জানান, ১৩ বছর আগে উপজেলার ইছাখালী এলাকার বাছেদ মিয়ার ছেলে রমজানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার বাবা নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার রমজানকে প্রদান করেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে ইমন ও লামিয়া নামে দুটি সন্তানের জন্ম হয়। স্বামী রমজানসহ শ্বশুর বাছেদ ও সৎ শাশুড়ি ডলি আক্তার পাখি বেগমেকে তার বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। পাখি বেগম তার বাবার বাড়ি থেকে কোন প্রকার যৌতুকের টাকা এনে দিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী রমজানসহ শ্বশুর বাছেদ, শাশুড়ি ডলি আক্তার, দেবর হাসান, জসিম, আহম্মদ আলী, টিটু, ননদ সুমা মিলে পাখি আক্তারের ওপর নির্যাতন চালিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
×