ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারতের আধার এবং আমাদের আধার!

প্রকাশিত: ০৩:২২, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ভারতের আধার এবং আমাদের আধার!

ভারতের বিশাল জনসংখ্যাকে একটি ইউনিক পরিচয়পত্রের মাধ্যমে আনার জন্য সেই দেশের সরকার চালু করেছিল ‘আধার’ নামের একটি তথ্যব্যবস্থা, যা আমাদের ‘জাতীয় পরিচয়পত্র’ কিংবা ভোটার আইডি কার্ডের সমার্থক। ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথোরিটি অফ ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই) নামের সরকারী প্রতিষ্ঠানটি এটা পরিচালনা করে; যা বাংলাদেশে করে থাকে ‘বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন’। ভারতের অসংখ্য ইলেক্ট্রনিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এই আধারের সহায়তা নিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে আপনি ইলেক্ট্রনিক উপায়ে জেনে যাবেন, কার তথ্য সঠিক, কার পরিচয় কী। সম্প্রতি আধার গণমাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছে। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান আধারের সেবা দেয়ার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি-এর বেশি পরিমাণ অর্থ নিচ্ছিল। এই অভিযোগে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বেশকিছু সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান (ওয়েবসাইট, মোবাইল এ্যাপ ইত্যাদি) বন্ধ করে দেয়। ভারতের ইকোনমিক টাইমসের এক সংবাদে দেখা যায়, ১২টি ওয়েবসাইট, এবং ১২টি মোবাইল এ্যাপকে বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভারতের কিছু কিছু ওয়েবসাইট ‘আধার’-এর বিশেষ কিছু সেবাদানের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে মিথ্যা কিংবা বেশি টাকা নিয়ে যাচ্ছিল। এমন আরও ২৬টি ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে তারা। তবে কর্তৃপক্ষের সঠিক অনুমতি ছাড়াও অসংখ্য ওয়েবসাইট এবং মোবাইল এ্যাপ বিভিন্নভাবে আধার সেবা দিয়ে যাচ্ছে; এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণাও করছে। ওই ১২টি মোবাইল এ্যাপ ইতোমধ্যেই গুগল পে-স্টোর থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের প্রধান জনগণকে আধার কর্তৃক নির্ধারিত ওয়েবসাইট/মোবাইল এ্যাপের সঙ্গে কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। ॥ দুই ॥ বর্তমানে ভারতের ১১১ কোটি মানুষ আধারে নিবন্ধন করেছেন। তারা সরকারের বিভিন্ন রকমের সেবার সঙ্গে যুক্ত। মাত্র ৬ বছরের মাথায় ভারত সরকার এই বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠীকে একই ইউনিক আইডির আওতায় নিয়ে এসেছে; এবং মানুষকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিতে পারছে। ভারতের তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবি সংকর প্রসাদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আধার ব্যবহারের ফলে গত দুই বছরে ৩৬ হাজার কোটি রুপি বেঁচে গেছে। এর বড় একটি এসেছে সরকারের ‘পাহাল’ নামের প্রকল্প থেকে, যার মাধ্যমে সরকার ঘরে ঘরে রান্না করার গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করে থাকে। গ্রাহকের এ্যাকাউন্ট আধার এ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করা। গ্রাহককে আগে টাকা জমা দিয়ে তারপর গ্যাস নিতে হয়। এর ফলে দেশ সরকারের সুশাসনের দিকে অনেকটাই এগিয়ে গেছে বলে মনে করছেন তারা। মি. প্রসাদ আরও বলেন, তার সরকার আধারের নিরাপত্তা বিধানে সচেষ্ট। আধারে রাখা তথ্যের গোপনীয়তাও রক্ষা করতে বধ্যপরিকর। এর জন্য সরকার ‘আধার ২০১৬’ একটি আইন পাস করিয়ে নিয়েছে, যার মাধ্যমে তথ্যের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়ে থাকে। বর্তমানে এর সঙ্গে ৪৭ কোটি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট যুক্ত করা হয়েছে, যার ভেতর প্রায় ৩৬ কোটি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট হলো ইউনিক। বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ব্যাংক এ্যাকাউন্ট আধারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। গত নবেম্বর ২০১৬ থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ সময়ের ভেতর মাঠ পর্যায়ে ৯ কোটির মতো পেমেন্ট ট্রানজেকশন হয়েছে, যার ভেতর ২ কোটির ওপর ট্রানজেকশন হয়েছে জানুয়ারি মাসের অর্ধের ভেতর। কিন্তু গত বছরের অক্টোবর এবং নবেম্বরে প্রতি মাসে ট্রানজেকশন হতো ২ কোটির মতো। অর্থাৎ এই জানুয়ারিতেই ট্রানজেকশনের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ॥ তিন ॥ আধার হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বায়োমেট্রিক তথ্য ভা-ার। ভারত যেহেতু বিশাল জনসংখ্যার দেশ, তাই তারা খুব সহজেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিস্টেমে পরিণত হয়েছে। এখানে ওই ১১১ কোটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপ রয়েছে, যা আর কোথাও এত বিশাল আকারে নেই। তবে আধার অন্যান্য দেশের থেকে একটু এগিয়ে গেছে। তারা কোন রকম চিপনির্ভর কিংবা চিপ ছাড়া কোন কার্ডে যায়নি। বাংলাদেশে আমরা কিছুদিন হলো স্মার্টকার্ড পেতে শুরু করেছি। কিন্তু আধার আরেকধাপ এগিয়ে গিয়ে মানুষের বায়োমেট্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করছে। আপনি যেখানেই যাবেন, আধার আপনাকে চিনতে পারবে। আধার যেহেতু একটি বিশাল প্ল্যাটফর্ম, তাই এটাকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের সেবা রয়েছে। এর সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী হলো সরকার নিজেই। সরকার তার নাগরিকদের বিভিন্ন সময়ে যত রকমের টাকা-পয়সা দিয়ে থাকে, তা আধারের মাধ্যমে চিহ্নিত হয়ে সরাসরি গ্রাহকের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে। এটা পুরো ভারতেই ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আধার আরও একটি ভাল কাজ করেছে। তা হলো ই-কেওয়াইসি (ঊ-কণঈ)। এর মাধ্যমে একজন মানুষকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায়। আমরা জানি যে, ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খুলতে আমাদের কেওয়াইসি ফর্ম পূরণ করতে হয়। এটা মূলত গ্রাহকটি কে, সেটা নিশ্চিত করা। আধারের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক উপায়ে সেটা করা যায়। ফলে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলা, কিংবা যেখানেই পরিচয়ের বিষয়টি থাকে, সেটা ইলেক্ট্রনিক উপায়ে মুহূর্তেই করা যাচ্ছে। বর্তমানে ভারতে মোবাইল ফোনের সিমকার্ড কিনতে গেলে তা আধারের ডাটাবেস থেকে ভেরিফাই করা হয়ে থাকে। টেলিকম অপারেটরদের আধারের সংযোগ দেয়া হয়েছে। কেউ যদি নতুন সিমকার্ড কিনতে যায়, তা হলে তার আধার নম্বরটিই যথেষ্ট। এর ফলে কেউ আর ভুয়া ডকুমেন্ট দিয়ে সিমকার্ড কিনতে পারবে না। ভারতে ২০১৬ সালের প্রথম থেকে এই সেবা চালু হয়। বর্তমানে এটা বেশ স্বচ্ছভাবেই পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের মতো ভারতেও অনেক ভুয়া সিমকার্ড রয়েছে, যেগুলো জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থবিরোধী। এগুলো দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের পাশাপাশি নানা ধরনের অপকর্ম করা হয়ে থাকে। ভারত সরকারও এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পায়নি। তারাও ধীরে ধীরে সমস্ত সিমকার্ডগুলোকে আধারের আওতায় নিয়ে আসছে। বাংলাদেশে যেমন বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুনরায় সিম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে, একইভাবে ভারতের টেলিকমগুলো তাদের বিশালসংখ্যক পুরনো গ্রাহককে আধারের অধীনে নিয়ে আসতে শুরু করেছে। পাশাপাশি সম্প্রতি রিলায়েন্স তাদের যে নতুন মোবাইল ফোন সেবা ‘জিও’ নিয়ে এসেছে, সেখানে আধার থেকে সরাসরি গ্রাহকের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছে। এর ফলে বিশাল ফর্ম পূরণ থেকে বেঁচে গেছে সবাই। কিছুদিন আগে ভারতে চালু হয়েছে ‘আধার-পে’, যার সঙ্গে আধার এ্যাকাউন্ট সরাসরি যুক্ত। আশা করা হচ্ছে, এটা ভারতে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমে বিপ্লব এনে দেবে। কারও যদি আধার নম্বর থাকে, তাহলে সেই ১২ ডিজিটের নম্বর এবং তার আঙ্গুলের ছাপ হলেই ট্রানজেকশন করা যাচ্ছে মুহূর্তেই। সবাই আশা করছে, আগামী ৫ বছরের মধ্যেই ভারত অনেক বেশি ডিজিটাল ভারতে পরিণত হবে। ভারত অনেক বেশি ক্যাশলেস সমাজে প্রবেশ করবে। এর ফলে বিভিন্ন রকমের কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, দামী পয়েন্ট অফ সেল (পিওএস) মেশিন, এটিএম মেশিনের প্রয়োজন হবে না। প্রযুক্তির গভীরে গিয়ে যদি বলি তাহলে আধার খুব সুন্দর কিছু সেবা বানিয়েছে, যেগুলো অন্য সেবাগুলোকে সহজ করে দিয়েছে। কম্পিউটারের ভাষায় আমরা এগুলোকে বলি এ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই)। এখানে চার ধরনের ইন্টারফেস দেয়া হচ্ছে- প্রেজেন্স-লেস, পেপারলেস, ক্যাশলেস এবং কনসেন্ট। এটাকে বলা হচ্ছে ‘ইন্ডিয়া স্টেক’। অর্থাৎ একটি মানুষকে যদি চিনতে হয়, তার শারীরিক উপস্থিতি ছাড়াই আপনি আধারের মাধ্যমে চিনতে পারবেন। আপনার কোন কাগজপত্র লাগবে না। আবার আপনাকে নগদ টাকা নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে হবে না। পাশাপাশি আপনি ইলেক্ট্রনিক উপায়ে কোন কিছু করার অনুমতিও দিতে পারেন। যেমন, আপনার ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে হবে। আপনি তার জন্য কনসেন্ট দিতে পারেন। আধার কর্তৃপক্ষ এই ‘ইন্ডিয়া স্টেক’ সবার জন্য উন্মুক্ত করে রেখেছে। সরকার নিজে, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠানগুলো এই সেবা নিতে পারে। আজকে ভারত যে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্ন দেখে, তার বাস্তবায়নে এই আধার অনেক বড় একটি ভূমিকা রাখবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সেই লক্ষ্যেই আধারের টিম কাজ করে যাচ্ছে, যার সুবিধা প্রতিটি ভারতীয় নাগরিক পেতে শুরু করেছে; এবং ভবিষ্যতে আরও করবে। ॥ চার ॥ ২০০৯ সাল থেকে আধারের উপর কাজ শুরু“করলেও এখন পর্যন্ত বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ করেছে ভারতের সরকার। বিনিয়োগের সংখ্যাগুলো হলোÑ ২০০৯ অর্থবছরে ৪ মি. ডলার, ২০১০ অর্থবছরে ৪০ মি. ডলার, ২০১১ অর্থবছরে ১৮০ মি. ডলার, ২০১২ অর্থবছরে ২০০ মি. ডলার, ২০১৩ অর্থবছরে ২৩০ মি. ডলার, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২৪০ মি. ডলার। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৮৯০ মি. ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। গত দুই বছরে একইভাবে হয়ত বিনিয়োগ করা হয়েছে। পুরো সংখ্যাটি এখনও হাতের কাছে পাওয়া যায়নি। আধারও বাংলাদেশের মতো প্রথম ‘আইডি’ কার্ড প্রদানের জন্য তৈরি হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ২৮ জানুয়ারি ইউআইডিএআই (টওউঅও) তৈরি করা হয়। তৎকালীন সরকার ভারতের ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নন্দন নিলেকানীকে এই প্রজেক্ট পরিচালনা করার দায়িত্ব দেয়। তাকে কেবিনেট মন্ত্রীর সমমর্যাদা দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান করে দেয়া হয়। মূলত তার স্বপ্নের প্রতিফলনেই এগিয়ে যাচ্ছে আধার। ২০১২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আধারের মাধ্যমে সরাসরি কারও ব্যাংকে টাকা পাঠানোর পদ্ধতিটি উন্মুক্ত করেন। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে নন্দন নিলেকানী আধার প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়িয়ে রাজনীতির মাঠে নামেন। তিনি দক্ষিণ ব্যাঙ্গালুরু থেকে সাধারণ নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করেছিলেন। ॥ পাঁচ ॥ আধারের মতো আমাদেরও একটি প্রকল্প আছে, যার নাম ‘জাতীয় পরিচয়পত্র’ বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড। এর মাধ্যমে বর্তমানে সারাদেশে স্মার্টকার্ড প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশের যে প্রকল্পটি করা হচ্ছে তার মূল খরচ আসছে বিশ্বব্যাংক থেকে। প্রথমে এখানেও ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য এটাকে তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেটাকে জাতীয় পরিচয়পত্রে পরিবর্তন করা হয়। আমি মনে করি, এটা ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় একটি কাজ। ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রথম ধাপটাই হলো ডিজিটাল পরিচয়। ২০০৮ সালের ২২ জুলাই প্রথম এই কাজ শুরু“করা হয়। ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর থেকে স্মার্টকার্ড চালু করা হয়, যার বাজেট হলো ১২০ মি. ডলার (৯০০ কোটি টাকা)। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ২২ ধরনের সেবা দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে। সবগুলো না লিখে কয়েকটি সেবার কথা এখানে উল্লেখ করছি- জাতীয় পরিচয়, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, জমি কেনা-বেচা, ব্যাংক এ্যাকাউন্ট, শেয়ার বিও এ্যাকাউন্ট, ট্রেড লাইসেন্স, গাড়ি রেজিস্ট্রেশন, বিয়ে, গ্যাস-বিদ্যুতসংযোগ, মোবাইল কানেক্ট, ই-ক্যাশ, ব্যাংক ট্রানজেকশন ইত্যাদি। প্রতিবার এই ডাটাবেজে এক্সেস করলে ২ টাকা করে দিতে হবে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এবং বিশ্বব্যাংক যে কাজটি করে দিচ্ছে, তা ডিজিটাল বাংলাদেশের মূলভিত্তি। এটা ঠিক না হলে, কোন রকম ডিজিটাল সেবাই দেয়া যাবে না। কিন্তু দুটি বিষয়ে এই প্রকল্পটি আধার থেকে পিছিয়ে আছে। ক). তারা কোন এপিআই স্টেক তৈরি করেনি, যা খুব সহজেই তৃতীয়পক্ষ ব্যবহার করতে পারে। এখন পর্যন্ত যেটুকু দেখা যায়, তা খুবই সীমাবদ্ধ। তারা যদি আধারের মতো চারটি এপিআই সেবা দিতো, তাহলে ইলেক্ট্রনিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো (ওয়েবসাইট/মোবাইল এ্যাপ) কারও পরিচয় নিশ্চিত হতে, কারও কনসেন্ট নিতে খুব সহজেই কাজটি করতে পারত। খ). এই শক্তিশালী ডাটাবেজটি সহজলভ্য নয়। তাত্ত্বিকভাবে এটা ব্যবহারে যেভাবে মানুষকে বলা হয়েছে, তার সঙ্গে বাস্তবের অনেক ফারাক। কোন একটি প্রতিষ্ঠান যদি এই ডাটাবেজের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, তাহলে তার জুতারতলি শেষ হয়ে যাবে বলেই আমার মনে হচ্ছে। কয়েকটি ব্যাংককে এই সুবিধা দেয়া হয়েছে। যদিও ২২ ধরনের সেবার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সরকার ছাড়া প্রাইভেট সেক্টরে আর কাউকে সেটা দেয়া হচ্ছে না। তাহলে এটা করে লাভ কী? প্রতিবার ব্যবহারের জন্য ২ টাকা, এটাও অনেক বেশি ফি। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, এটা তো ওয়েবসাইট এবং মোবাইল এ্যাপ তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া হচ্ছে না। আমরা যদি এটা সবার জন্য উন্মুক্ত করতে না পারি, তাহলে এই প্রকল্পটি আমাদের আধার না হয়ে, আঁধার হয়ে ধরা দেবে। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ুং@ঢ়ৎরুড়.পড়স
×