ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রপতি গ্রহণযোগ্য ইসি গঠন করবেন এমন আশা বিএনপির ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৮:৩৩, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

রাষ্ট্রপতি গ্রহণযোগ্য ইসি গঠন করবেন এমন আশা বিএনপির ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যই নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করবেন বলে বিএনপি আশা করে। শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঢাকা মহানগর জাগপা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ফখরুল বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ বলছে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে কি হবে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা ঠিক করে রেখেছেন সেটাই হবে। তবে আমরা দেখতে চাই সার্চ কমিটি আসলেই জনগণের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারছেন কিনা। যদি না পারেন ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায়ে তাদের নাম লিপিবদ্ধ হবে এবং তারা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবেন। আর যদি পারেন ইতিহাসের সবচেয়ে স্বর্ণ খচিত জায়গায় তাদের নামগুলো লেখা থাকবে। ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া দেশের প্রয়োজনে, গণতন্ত্রের স্বার্থে, সংঘাত এড়িয়ে চলার জন্য ও দেশে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই ১৩ দফা প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রপতি আমাদের আলোচনায় ডেকে ছিলেন। এজন্য আমরা রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম। তবে নিবন্ধিত সব দলকে না ডেকে রাষ্ট্রপতি গণতন্ত্রকে অবজ্ঞা করেছেন। সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন তো আওয়ামী লীগ সরকার চালাচ্ছে না। সরকার চালাচ্ছে এখন পোশাকধারী লোকেরা, যারা আজকে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। যার ফলে রাজনৈতিক কোন চিন্তাভাবনা আসছে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেভাবে রাজনৈতিক দলের নেতা ও সাংবাদিকদের যেভাবে হয়রানি, অপমান ও নির্যাতন করা হচ্ছে তা আর কোন সরকারে আমলে হয়নি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার মামলার হাজিরা ছিল আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিশেষ আদালতে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখে মনে হয়েছে যেন যুদ্ধ ক্ষেত্র। র‌্যাব, পুলিশ, আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ন, মোটরসাইকেল, বন্দুক, জলকামান, প্রিজন ভ্যান এমনভাবে রাখা হয় যেন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টেররিস্টকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা কোন ধরনের রাজনীতি। খালেদা জিয়া ৩ বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। কোন নির্বাচনে তিনি পরাজিত হননি এবং যিনি ওপর থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে সংগ্রাম করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন সেই নেতাকে আজকে এমনভাবে অপমান করা হয় যা দেখে সাধারণ মানুষ লজ্জা পায়। তাকে সারাদিন আদালতে বসিয়ে রাখা হলো। কারণ যারা ক্ষমতায় আছেন তারা যা খুশি তাই করতে পারেন। দিনকে রাত, রাতকে দিন করতে পারেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে এতটাই দেউলিয়া হয়ে গেছে যে রাজনৈতিকভাবে না পেরে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অন্যায় ও মিথ্যা মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার ও গ্রাম্য মোড়লের মতো আচরণ করছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনে আছে বিচার চলাকালে আমি যদি বলি যে এই বিচার ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই তাই আমার এর ওপর অনাস্থা আছে তাহলে সেখানেই কলম বন্ধ করে ফেলতে হবে। কিন্তু তা তো করা হয়নি জোর করে চালিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যত রকমের অস্ত্রগুলো আছে সব অস্ত্র এখন বিরোধী দলের ওপর ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবেন না। যদি ফাঁসিও দেন তারপরও আমাদের কথা বলা থেকে কিংবা দায়িত্ব থেকে আমরা সরে যাব না। কারণ এটা জনগণের কাছ আমাদের ওয়াদা। ওয়াদা আমাদের নিজেদের যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। গণতন্ত্রের জন্য কথা বলার জন্য যদি আমাকে ফাঁসিতে যেতে হয়, আমাকে যদি রক্ত দিতে হয়, তাতে কোন আপত্তি নেই। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশা করব নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করে রাষ্ট্রপতি জাতিকে সঙ্কট থেকে মুক্ত করতে পারেন। আর নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন হলেই হবে না নির্বাচনকালীন সরকারও সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ হতে হবে। রাষ্ট্রপতির মাথায় থাকতে হবে আমি একটা নিরপেক্ষ ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে জনগণের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে এ ধরনের সরকার গঠনে আমি সাহায্য করব। কারণ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হতে হবে এর বাইরে এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।
×