ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বেয়ার্নের হয়ে ৫০০তম ম্যাচ

নতুন মাইলফলকের সামনে লাম

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নতুন মাইলফলকের সামনে লাম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জার্মান জায়ান্ট বেয়ার্ন মিউনিখে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আছেন। সিনিয়র ক্যারিয়ারের ১৬ বছর এবং আরও ৬ বছর পার করেছেন জুনিয়র দলে। সবমিলিয়ে ২২ বছর- বাল্যকাল থেকে শুরু করে এখন ক্যারিয়ারের শেষ মুহূর্তে চলে এসেছেন সাবেক জার্মানি জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক ফিলিপ লাম। অথচ বয়স মাত্র ৩৩। এবার একটি দারুণ মাইলফলক ছুঁতে চলেছেন তিনি বেয়ার্নের হয়ে। বাভারিয়ানদের হয়ে আর একটি ম্যাচ খেললেই ৫০০তম ম্যাচ খেলা হবে লামের। জার্মান এ বিশ্বকাপ জয়ী রাইটব্যাক অষ্টম ফুটবলার হিসেবে বেয়ার্নের হয়ে এ মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছেন। শ্যালকে জিরো ফোরের বিরুদ্ধে ঘরের মাটিতে এ কীর্তি গড়তে চলেছেন তিনি। কোচ কার্লো আনচেলত্তি দারুণ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এটি নিয়ে। আগামী কয়েক সপ্তাহে বেশ চাপের মুখে থাকতে হবে জার্মান চ্যাম্পিয়ন বেয়ার্নকে। সপ্তাহে তিন/চারদিনই ম্যাচ আছে। এ কারণে শ্যালকের বিরুদ্ধে শনিবার অধিনায়ক লামকে খেলাবে কিনা বেয়ার্ন সেটা নিয়ে আছে সংশয়। কারণ কোচ আনচেলত্তি নিজেই ফুটবলারদের খেলানোর ব্যাপারে রোটেশনের কথা জানিয়েছেন। লীগে শ্যালকের পর ইঙ্গলস্ট্যাট ও হার্থা বার্লিনের সঙ্গে এবং জার্মান কাপে উলফসবার্গ ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগে আর্সেনালের বিরুদ্ধে ম্যাচ আছে বেয়ার্নের। এ কারণে বিগ ম্যাচে অধিনায়ক লামকে পেতে তাকে শ্যালকের বিরুদ্ধে বিশ্রাম দিতে পারেন কোচ আনচেলত্তি। এ বিষয়ে কোচ বলেন, ‘সে অনেক বড় এক দৃষ্টান্ত এবং দলের দারুণ অধিনায়ক। আমি তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে খুশি।’ টানা খেলার চাপ থাকলেও সেটা নিয়ে চিন্তিত নয় লাম নিজে। মাঠে কঠোর অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন দলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সবকিছুই সঠিক বেগে চলছে। আমরা অবশ্যই খুশি যে আগামী সপ্তাহে শেষ পর্যন্ত অনেকগুলো ম্যাচ সমাপ্ত হতে চলেছে।’ দলের মধ্যে বরবারই দারুণ সম্মানিত ব্যক্তিত্ব লাম। মৃদু ও স্বল্পভাষী হওয়ার পরও কঠোর পরিশ্রম করার কারণে তা অর্জন করেছেন তিনি। এছাড়া জেতার জন্য সবসময় উদ্বেগ, প্রতিপক্ষকে পরিষ্কার ট্যাকলিং এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সদ্ভাব রক্ষা করে তিনি সবার কাছেই বেশ ভদ্রলোক হিসেবেই বিবেচিত। আনচেলত্তির পূর্বসূরি হিসেবে বেয়ার্নের কোচ পেপ গার্ডিওলা ভালভাবেই দেখেছেন লামকে। এ কারণে তিনি প্রবলভাবে লামের প্রশংসায় হয়েছেন পঞ্চমুখ। তিনি তাকে আগেই অভিহিত করে বলেছিলেন, ‘লাম হচ্ছে সত্যিকারের এক পরিপূর্ণ কিংবদন্তি। আমি যত জায়গায় কোচ হিসেবে যত খেলোয়াড়কে নিয়ে কাজ করেছি তারমধ্যে তাকেই আমার সবচেয়ে মেধাবী খেলোয়াড় মনে হয়েছে।’ ক্যারিয়ারে দীর্ঘদিন লেফট ব্যাকে খেলেছেন লাম। কিন্তু গার্ডিওলা তাকে কার্যকর করে তোলেন রাইটব্যাকে। অনেকেই সে সময় বিস্মিত হয়েছিলেন এবং সমালোচনাও করেছিলেন। কিন্তু লাম দ্রুতই নিজেকে গুছিয়ে নেন এবং বেয়ার্ন আগের চেয়ে অনেক বেশি লাভবান হয় লামের পজিশন পরিবর্তনে। ২০১৪ বিশ্বকাপ জয় করে জার্মানি লামের অধীনে। এরপরই অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। কিন্তু ভক্তরা এতে মর্মাহত হয়ে সেটাকে খুবই অপরিণত এক সিদ্ধান্ত হিসেবে মনে করেন। অনেকে সে সময় কানাঘুষা করছিলেন বেয়ার্নের প্রশাসনিক দায়িত্ব নেয়ার জন্যই মূলত আগেভাগে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি। অবশ্য বর্তমানে সেই বিতর্ক ঢাকা পড়ে গেছে। এখন বেয়ার্নের হয়ে নতুন এক অর্জনের মুখে তিনি। আরেকটি ম্যাচ খেললেই সাবেক সতীর্থ বাস্তিয়ান শোয়েনস্টেইগারের সমান ৫০০ ম্যাচ খেলা হবে তার বেয়ার্নের হয়ে। ৬৩২ ম্যাচ খেলে বেয়ার্নের পক্ষে সবার ওপর সাবেক গোলরক্ষক অলিভার কান। এছাড়া গার্ড মুলার (৫৬৮), জর্জ ক্যাশে শোয়ার্জেনবেক (৫৪৯), ক্লস আউজেনথ্যালার (৫৪৫), ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার (৫৩৪) ও বার্নড ডুয়ের্নবার্গারের (৫০১) আগে বেয়ার্নের হয়ে ৫০০ ম্যাচ খেলার গৌরব দেখিয়েছেন। লাম বুন্দেসলিগায় ৩১৯, জার্মান কাপে ৫২, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লীগ এবং ক্লাব বিশ্বকাপসহ মহাদেশীয় ক্লাব টুর্নামেন্টে আরও ১১৪ ম্যাচ এবং অন্য আরও ১৪টি ম্যাচে তিনি প্রতিনিধিত্ব করেছেন বেয়ার্নের হয়ে।
×