ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জাদুঘরে পাঁচ দিনব্যাপী ইরানী চলচ্চিত্র উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

জাদুঘরে পাঁচ দিনব্যাপী ইরানী চলচ্চিত্র উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্ব চলচ্চিত্রের ভুবনে স্বতন্ত্র অবস্থান করে নিয়েছে ইরানের ছায়াছবি। বাণিজ্যিক বিবেচনার বাইরে নান্দনিকতার বিচারে মূল্যবোধের গল্পের খোরাক মেলে দেশটির ছবিগুলোয়। তাই ইরানী ছবি আজ সিনেমাপ্রেমীদের কাছে বিশেষভাবে সমাদৃত। আর তেমনই ধ্রুপদী আটটি ছবি নিয়ে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে শুরু হলো ইরানী চলচ্চিত্র উৎসব। পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের সূচনা হয় শনিবার বিকেলে। আজ রবিবার থেকে দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন এসব ছবি। ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলমান উৎসবে প্রতিদিন সকাল ১১টা ও বেলা ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে এ প্রদর্শনী। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের ৩৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে যৌথভাবে এ উৎসবের আয়োজন করেছে ঢাকার ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও জাতীয় জাদুঘর। শনিবার বিকেলে জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে উৎসব উপলক্ষে ‘ইরানে ইসলামী বিপ্লবের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজী দেহনাভী ও খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকবাল হোছাইন। সভাপতিত্ব করেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। ইরানের চলচ্চিত্রে ইসলামী বিপ্লবের প্রবল প্রভাবের কথা উল্লেখ করে মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ইসলামের সঙ্গে অনেকে উগ্রপন্থাকে মিলিয়ে ফেলেন। কিন্তু শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিয়ে ইরানের ইসলামী বিপ্লব ভেঙ্গে দিয়েছে সেই প্রচলিত ধারণাকে। এই বিপ্লবের আগে ইরানের চলচ্চিত্র ছিল মূলত বাণিজ্যনির্ভর। সেই অর্থে ভাল ছবি নির্মিত হতো না। তবে বিপ্লবের পর বদলে ইরানী চলচ্চিত্রের গতিধারা। বর্তমানে ইরানের ছবিগুলো দুনিয়া মাতাচ্ছে। বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনে দারুণ সমাদৃত হচ্ছে সেসব ছবি। মূল্যবোধ ও নৈতিকতাকে ধারণ করে নির্মিত বার্তাবহ ছবিগুলো সহজেই আকৃষ্ট করছে দর্শককে। মূল প্রবন্ধে ড. মোহাম্মদ ইকবাল হোছাইন বলেন, ভায়োলেন্স বা সেক্সের বদলে মূল্যবোধের ভিত্তিতে নির্মিত হচ্ছে ইরানী চলচ্চিত্র। সেসব ছবি ভূমিকা রাখছে বিশ্বের সিনেমাপ্রেমীদের রুচি বিনির্মাণে। আলোচনার ফাঁকে ইরানী স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম, মোরা ঝর্ণার মতো চঞ্চল’ শিরোনামের গান। আলোচনা শেষে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। দেখানো হয় বাংলায় ডাবিংকৃত ইরানী ছবি ‘গোলাহায়ে দাউদী’, যার বাংলা অর্থÑযে ফুল ফোটেনি। বাংলা ও ইংরেজীতে ডাবিংকৃত ইরানী চলচ্চিত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে উৎসব। আজ রবিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে সকাল ১১টায় প্রদর্শিত হবে ‘দারিবিস্তান’ ও বেলা ৩টায় দেখানো হবে ‘দ্য কালার অব প্যারাডাইস’। সোমবার সকাল ১১টায় দেখানো হবে ‘কিংডম অব সোলেমান’ এবং বেলা ৩টায় প্রদর্শিত হবে ‘শেতাবযাদেহ’। মঙ্গলবার সকালে দেখানো হবে ‘বোগদার যেন্দেগি দোনাম’ ও বেলা ৩টায় প্রদর্শিত হবে ‘বাহে-অ-আরবিশাম’ বা ‘দ্য এ্যাকুয়াটিন্ট সিল্ক রোড’। বুধবার সকাল ১১টায় প্রদর্শিত হবে ‘দ্য সংস অব স্প্যারো এবং বেলা ৩টায় দেখানো হবে ‘পারান্দে কুচেকে খোশবাখতি’ বা ‘একটি সুখের ছোট পাখি’। চন্দ্রশেখর সাহা রচিত গ্রন্থের প্রকাশনা ॥ প্রকাশিত হলো চন্দ্রশেখর সাহা রচিত গ্রন্থ ‘সন্দেশ : ট্র্যাডিশানাল মোটিফস, থাউজেন্ড পসিবিলিটিস’। নিমফিয়া পাবলিকেশন থেকে বেরুনো বইটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হলো শনিবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরে। প্রকাশনা উৎসবের পাশাপাশি একই আয়োজনে ছিল গ্রন্থে প্রকাশিত ডিজাইন অবলম্বনে তৈরি পণ্যের প্রদর্শনী। প্রধান অতিথি হিসেবে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খান, জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী এবং লেখক ও সাংবাদিক আবুল হাসনাত। আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ সাবিহ্-উল আলম ও চিত্রসমালোচক মইনুদ্দীন খালেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিমফিয়া পাবলিকেশনের প্রকাশক করুণাংশু বড়ুয়া। বিমানমন্ত্রী তার বক্তব্যে শিল্প ও সংস্কৃতি চর্চার ওপর জোর দেন এবং ঐতিহ্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে এ ধরনের বই প্রকাশের আহ্বান জানান। বইয়ের আলোচনায় হাশেম খান তার ছাত্র চন্দ্রশেখর সাহার অন্তর্দৃষ্টি, অনুসন্ধিৎসু মন আর সৃজন নিপুণতার প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের শেকড় সন্ধানে লোক-ঐতিহ্য সংরক্ষণের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন মইনুদ্দীন খালেদ। এই বইয়ের ডিজাইন অনুসরণে পণ্য তৈরি করে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ হয়েছে দেশী দশ। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত অতিথিরা নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী কক্ষে এই বইয়ের ডিজাইন অনুসরণে তৈরি পোশাক ও হোমটেক্সটাইল সামগ্রীর প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। চন্দ্রশেখর সাহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগৃহীত ১৫টি ছাঁচ বিশ্লেষণ করে এর শূন্য বা ফাঁকা স্থান, রেখা ও বিন্দুসংবলিত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র নক্সা বা উপকরণের জ্যামিতিক পুনর্বিন্যাস ও সংযোজনের মাধ্যমে নতুনতর চারিত্রিক রূপবিশিষ্ট নক্সা বা উপস্থাপনা তৈরি করেছেন। এই প্রদর্শনী চলবে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। স্মরণে গীতিকবি কুটি মনসুর ॥ সঙ্গীতের কাছে সমর্পিত এক মানুষ কুটি মনসুর। একই সঙ্গে গান লিখেছেন, গেয়েছেন ও সুর করেছেন। তার লেখা ‘আমি কি তোর আপন ছিলাম নারে জরিনা‘ কিংবা ‘আইলাম আর গেলাম’ গানের সুরে মুগ্ধ হয়েছে প্রান্তিক থেকে শহুরে শ্রোতারা। শনিবার বিকেলে স্মরণ করা হলো বরেণ্য এই গীতিকবিকে। সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষে এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় গীতিকবি পরিষদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর, ছড়াকার আসলাম সানী, গীতিকার শহিদুল্লাহ ফরায়জী, কবি আয়াত আলী পাটোয়ারী ও কুটি মনসুরের ছেলে সঙ্গীত পরিচালক জাহিদ মনসুর। সভাপতিত্ব করেন গীতিকবি পরিষদের সভাপতি এম আর মনজু। স্মরণানুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, গত শতকের সত্তর ও আশির দশকের আধুনিক গানের পরিচিত নাম কুটি মনসুর? দীর্ঘ ৬০ বছরের সংগীতজীবনে তিনি একাধারে পল্লীগীতি, আধুনিক, জারি-সারি, পালাগান, পুঁথিপাঠ, ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, মারফতি, আধ্যাত্মিক, দেহতত্ত্ব, হামদ-নাত, ইসলামি প্রভৃতি বিষয়ে অসংখ্য গান লিখেছেন। তার কথা ও সুরে গান গেয়েছেন দেশের প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পীরা
×